খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছে -মির্জা ফখরুল
স্টাফ রিপোর্টার : দেশে একদলীয় দুঃশাসনের কালো ছায়া বিরাজমান মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনীতি ও গণতন্ত্রের পথকে সংকুচিত করে দেয়া হয়েছে। নাগরিক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও মানবিক সাম্য হরণ করা হয়েছে। নানা কালাকানুনের মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে হরণ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কন্ঠরোধ করা হয়েছে। ভিন্নমতের কারণে অনেকেই গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের গণতন্ত্রমনা মানুষকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। জাতিসংঘ কর্তৃক ২০০৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে গণতন্ত্রের সারবত্তা ও অনুশীলণে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা, আহতদের জানাচ্ছি সমবেদনা।
তিনি বলেন, প্রকৃত গণতান্ত্রিক সমাজে ব্যক্তি মানুষের মর্যাদা সমুন্নত থাকে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় মানুষকে দাসে পরিণত করা যায় না। একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র সমাজেই কেবলমাত্র মানুষের অধিকার নিশ্চিত হয়। সারাবিশ্বে বহু মত, পথের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রতি মানুষের আগ্রহকে ভূলুন্ঠিত করে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে এখনও একদলীয় দুঃশাসনের কালো ছায়া বিরাজমান। বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনীতি ও গণতন্ত্রের পথকে সংকুচিত করে দেয়া হয়েছে। নাগরিক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও মানবিক সাম্য হরণ করা হয়েছে। নানা কালাকানুনের মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে হরণ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতার কন্ঠরোধ করা হয়েছে। ভিন্নমতের কারণে অনেকেই গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের গণমানুষের অবিসংবাদিত নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় গৃহবন্দী রাখা হয়েছে, এখনও তিনি পুরোপুরি মুক্ত নন। আমরা বর্তমানে এক ভয়াবহ দুর্দিন অতিক্রম করছি। এক কথায় রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা কেড়ে নেয়া হয়েছে। অবাধ, নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের পথ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। নির্বাচনী বিধি-ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। এ কথা প্রমাণিত সত্য যে, বর্তমান সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন আজ গণদাবীতে পরিণত হয়েছে। অনৈতিক শাসন ফ্যাসিবাদী কায়দায় দীর্ঘায়িত করতে যেয়ে সরকার দেশ, রাজনীতি ও গণতন্ত্রকে সংকটে ফেলে দিয়েছে। গণতন্ত্র এমন একটি শাসনব্যবস্থা যেখানে জনগণ সরাসরি শাসনব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পারে। জনগণের মতামতই হয় সরকার পরিচালনার ভিত্তি। কেবলমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। আসুন, আমরা বর্তমান দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফ্যাসিবাদের কবল থেকে গণতন্ত্রের মুক্তির মাধ্যমে একটি কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তুলি।