বুধবার ২৯ মার্চ ২০২৩
Online Edition

কেডিএ’র তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মাণে দৃশ্যমান গতি নেই

খুলনা অফিস : বিদেশ সফর শেষ, কেনা হয়েছে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের ইউটিএম মেশিন ও কাজ দেখাশোনা জন্য ৫০ লাখ টাকা মূল্যের পিকআপ গাড়ি। কিন্তু প্রকল্পের মূল কাজে দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়নি। শুধু অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে সড়কের এ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তনে তৎপরতা বেড়েছে। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)-এর তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প একনেক বৈঠকে অনুমোদনের প্রায় দুই বছর পর বাস্তব অবস্থা এমন। ফলে প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বৃদ্ধির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, তিনটি সড়কের মধ্যে একটির ভূমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনের নিকট চিঠি দেয়া হয়েছে।
কেডিএ’র তথ্য অনুযায়ী, খুলনা নিরালা থেকে সিটি বাইপাস, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায়েরমহল এবং দৌলতপুর কৃষি কলেজ (পুরাতন সাতক্ষীরা রোড) থেকে বাস্তুহারা পর্যন্ত তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মাণে পরিকল্পনা গ্রহণ করে সংস্থাটি। এর মধ্যে প্রথম সড়কটি নিরালা ১নং সড়ক হয়ে দীঘির পাশ দিয়ে সোজা বাইপাসে গিয়ে মিশবে। এ সড়কটি হবে আড়াই কিলোমিটার। দ্বিতীয় সড়কটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রায়েরমহল পর্যন্ত ৪ দশমিক ৬ কিলোমিটার এবং তৃতীয় দৌলতপুর কৃষি কলেজ (পুরাতন সাতক্ষীরা রোড) থেকে বাস্তুহারা পর্যন্ত ২ দশমিক ৭ কিলোমিটার। এই তিনটি সড়কের ব্যয় ছিলো ৩০১ কোটি টাকা। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশন তিন সংযোগ সড়কের মধ্যে নিরালা সড়কের পুরোটা এবং বিশ্ববিদ্যালয় সড়কটি ময়ূর ব্রীজ পর্যন্ত অর্থাৎ ১ দশমিক ৬০ কিলোমিটার রেখে বাকিটা বাদ দিয়ে দেয়। ফলে একনেক বৈঠকে ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কেডিএ’র দু’টি সংযোগ সড়ক প্রকল্প উত্থাপন করা হয়। বৈঠকের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী জানতে চান প্রকল্প কেন এতো ছোট করা হলো? তখন তৎকালীন কেডিএ চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন প্রকল্পে তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মাণের কথা ছিলো। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পটি ছোট করে ১২৮ কোটি টাকা করেছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী একনেক সভায় ৩০১ কোটি টাকার আগে পাঠানো তিনটি সংযোগ সড়ক প্রকল্পের পুরোটাই অনুমোদনের ঘোষণা দেন এবং ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। এরপর একনেকের সভায় সিদ্ধান্ত হয় প্রথম প্রকল্পের তিনটি সংযোগ সড়ক নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদনের সঙ্গে অবশ্যই বাড়তি ব্যয় সংযুক্ত করতে হবে। এরপরও নিরালা সড়কটি ৪ লেনের পরিবর্তে দুই লেন নির্মাণ করতে হবে বলে জানায় পরিকল্পনা কমিশন। কিন্তু এতে আপত্তি জানায় কেডিএ। ওই আপত্তির প্রেক্ষিতে বিষয়টি সমাধানে জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরিকল্পনা কমিশনের সাব কমিটির ওই বৈঠকে একনেকে ঘোষণা অনুযায়ী তিনটি সংযোগ সড়ক অর্থাৎ ১০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ এবং সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে অনেক যুক্তির প্রেক্ষিতে পরিকল্পনা কমিশন নিরালা সড়কটি ৪ লেনে নির্মাণে সম্মতি দেয়। সে অনুযায়ী প্রকল্প রিভাইস করে ফের ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজল (ডিপিপি) পাঠানো হয় পরিকল্পনা কমিশনে। এতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪০৩ কোটি টাকা। কিন্তু সর্বশেষ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় তিন কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। এরপর ১ বছর ১০ মাস অতিবাহিত হয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ