DailySangram-Logo

অন্যান্য খেলা

ফেডারেশনগুলোর কাছে আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়েছে এনএসসি

বাৎসরিক আয় ব্যয হিসাব ও বিদেশ ভ্রমণে প্রতিবেদন যারা জমা দেযনি তাদের অনতিবিলম্বে জমা দিতে ফেডারেশন/ অ্যাসোসিয়েশনগুলোতে তাগাদা করতে পাঠিয়েছে জাতীয় ক্রীডা পরিষদেও (এনএসসি)।

Printed Edition

বাৎসরিক আয় ব্যয হিসাব ও বিদেশ ভ্রমণে প্রতিবেদন যারা জমা দেযনি তাদের অনতিবিলম্বে জমা দিতে ফেডারেশন/ অ্যাসোসিয়েশনগুলোতে তাগাদা করতে পাঠিয়েছে জাতীয় ক্রীডা পরিষদেও (এনএসসি)। ইতিমধ্যে নির্ধারিত সময়ে জমা না দেযায় ২৬ ফেডারেশন/অ্যাসোসিয়েশনের বরাদ্দের অর্থ ছাড় স্থগিত করেছে (এনএসসি)। এই শাস্তি পাওয়া ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোর মধ্যে হকি, অ্যাথলেটিকস, শ্যুটিংয়ের মতো খেলাও আছে। ক্রীড়া উপদেষ্টা ফেডারেশনগুলো প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমরা বলে দিয়েছি পূর্ববর্তী দুই বছরের অডিট রিপোর্ট জমা না দিলে বাজেটের অর্থ ছাড় দেবো না।’এ নিয়ে অনেক আগে থেকেই কাজ করছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ফেডারেশনগুলোকে তাগাদা দেওয়া হয়েছিল তাদের ২০২২-২০২৩ ও ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের আয়-ব্যয়ের বিবরণী দাখিল করতে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৯ টি ফেডারেশন ও ১৭ টি অ্যাসোসিয়েশন তাদের দুই বছরের হিসাব দাখিল করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের অনুকুলে বরাদ্দকৃত বাজেটের অর্থ ছাড় দেওয়া স্থগিত করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।

৫৫ ফেডারেশন/অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে ২৬টি হিসাব দিতে ব্যর্থ হওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে ক্রীড়াঙ্গনে অনিয়ম কিভাবে জেঁকে বসেছে। দীর্ঘ একটা সময় হিসাব প্রদানের ক্ষেত্রে অনিয়মিত ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলো। সবচেয়ে বড় কথা হলো দেশের তৃতীয় বড় খেলা হকিসহ প্রতিষ্ঠিত অনেক ফেডারেশন আছে এই শাস্তির তালিকায়। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৮ অনুসারে প্রত্যেক ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন বাৎসরিক হিসাব দিতে বাধ্য। কিন্তু যুগের পর যুগ এই বাধ্যবাধকতা মানেনি কেউ। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ শাসন আমলে দলীয় লোকদের ফেডারেশনে বসিয়ে দেওয়ায় এই নিয়মের তোয়াক্কা করেননি কেউ। ওই সময় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তরা তটস্থ থাকতেন ফেডারেশন কর্মকর্তাদের দাপটে। অন্তর্বতী সরকারের ক্রীড়া প্রশাসন বরাদ্দের অর্থ ছাড় স্থগিত করে একটা নজিরই স্থাপন করেছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন, ‘এমন ঘটনা প্রথম। ক্রীড়া উপদেষ্টার কথায় এটা পরিষ্কার যে, বিগত দুই বছরের আয়-ব্যায়ের হিসাব দাখিল না করলে অর্থ ছাড় পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বরাদ্দের অর্থ ছাড়া স্থগিত হওয়া ৯ ফেডারেশন হচ্ছে- হকি, স্কোয়াস, কারাতে, শ্যুটিং, অ্যাথলেটিকস, গলফ, শরীরগঠন, ব্রিজ ও টেনিস। অ্যাসোসিয়েশনগুলো হচ্ছে-বেসবল-সফটবল, সেপাক টাকরো, প্যারা আরচারি, মাউন্টেনিয়ারিং, থ্রোবল, কান্ট্রি গেমস, মার্শাল আর্ট, ঘুড়ি, কিকবক্সিং, আন্তর্জাতিক তায়কোয়ানদো, ব্যুত্থান, সার্ফিং, ইয়োগা, চুকবল, জুজুৎসু, খিউকুশীন ও ইয়োগা।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নিয়ম উপেক্ষা কেবল হিসাব জমা দেওয়ার ক্ষেত্রেই নয়, বিভিন্ন ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন বিদেশে যে ক্রীড়া দল পাঠায় সেই প্রতিবেদনও জমা দেয় না। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের তথ্য অনুসারে প্রতিবেদন জমা দেয়না ৭০ ভাগ ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কিছুদিন আগে সব ফেডারেশনকে চিঠি দিয়ে ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বিদেশে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিল। সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে মাত্র ১৬ টি ফেডারেশ ও অ্যাসোসিয়েশন থেকে বেদিশে সফরের প্রতিবেদন পেয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। যে সকল ফেডারেশন / অ্যাসোসিয়েশন এখনো প্রতিবেদন জমা দেয়নি, তাদের অনতিবিলম্বে প্রতিবেদন জমা দেওযার জন্য মঙ্গলবার নতুন করে তাগাদা পত্র দিয়েছে জাতীয় ক্রীডা পরিষদ। এই ১৬ ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন হচ্ছে- ফুটবল, ক্রিকেট, জুডো, টেনিস, কারাতে, শ্যুটিং, কাবাডি, প্যারালিম্পিক, আরচারি, সেপাক টাকরো, ভারোত্তোলন, বিওএ, দাবা, রোলার স্কেটিং, সাইক্লিং ও কুস্তি।