ফুটবল
কোচ নয়, বাফুফের উচিত সাবিনাদের প্রাধান্য দেয়া ---সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নারী ফুটবলারদের দাবি উপেক্ষা করে ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের ওপরই আস্থা রাখছে।
Printed Edition
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) নারী ফুটবলারদের দাবি উপেক্ষা করে ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলারের ওপরই আস্থা রাখছে। সভাপতি তাবিথ আউয়ালের অনুরোধের পরেও সাবিনা খাতুনরা অনুশীলনে যোগ না দেয়ায় কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে বাফুফে। এরই মধ্যে আন্দোলনরত ১৮ জন ফুটবলারকে বাদ দিয়েই বিকল্প দল গড়ার কাজও শুরু করছে বাটলার। সরাসরি বাদ না দিয়ে এমন অবস্থা সৃষ্টি করা হচ্ছে যেন সাবিনারাই এক পর্যায়ে স্বেচ্ছায় ক্যাম্প ছাড়তে বাধ্য হয়। তখন ফেডারেশন কর্তারা এভাবে বুলি আওড়াতে পারবেন, ‘তারা নিজেরাই চলে গেছে, আমরা তো তাদের যেতে বলিনি।’ ১৮ জন নারী ফুটবলার বাফুফে ক্যাম্প ছাড়লে সেটা বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য অনেক বড় ক্ষতি হবে আখ্যায়িত করে জাতীয় পুরুষ দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তিনি গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘তারা (সিনিয়র ফুটবলাররা) যদি চলেই যায় এই ক্ষতি বাংলাদেশের ফুটবলে অপূরণীয়। এটা জাতির দুর্ভাগ্য হয়ে থাকবে এবং দায়ও বাফুফেকে নিতে হবে। বাফুফের অবশ্যই তাদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিৎ। তারা যেন ফুটবলের সঙ্গেই থাকেন সেটা নিশ্চিত করাও বাফুফের দায়িত্ব।’
২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গোলরক্ষক আমিনুল হক এর দক্ষতায় শিরোপা জিতেছিল স্বাগতিক বাংলাদেশের। সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের এই সদস্য সরাসরি সাবিনাদের পাশে দাঁড়ালেন, ‘একটি শিরোপা কত কষ্ট-পরিশ্রমে আসে এটা খেলোয়াড়রাই জানে। আর সেখানে এই নারী দলের অনেকেই টানা দুই বার সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য। খেলোয়াড়-কোচ সমস্যা নাকি অনেকদিন থেকেই। খেলোয়াড়দের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে অবশ্যই ফেডারেশনের উচিৎ ছিল বিষয়টি মীমাংসা করে এরপর কোচ ঠিক করা।’ জাতীয় দলের অন্যতম সিনিয়র ফুটবলার মাসুরা পারভীন কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে সেটাই বলেছিলেন সাংবাদিকদের, ‘আমরা এতদিন ধরে কোচের কথা বলছি। ফেডারেশন কি একবারও ভাবল না মেয়েরা এত করে বলছে কোচ নেয়ার আগে অন্তত একবার কথা বলি?’ উদ্ভুত পরিস্থিতির পেছনে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল বাফুফের নারী উইংয়ের দায়ই বেশি দেখেন। তার দাবি, ‘ফেডারেশনের উচিৎ যাদের দায়িত্বের অবহেলায় এই সংকট তৈরি হয়েছে অতি সত্ত্বর তাদের অপসারণ করা।’বাংলাদেশ নারী দল দক্ষিণ এশিয়ায় টানা দুইবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন।
দক্ষিণ এশিয়ার গ-ি পেরিয়ে এখন দৃষ্টি এশিয়ান পর্যায়ে। ঋতুপর্ণা, রুপ্না চাকমারা ফুটবল ছেড়ে দিলে ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের ফুটবল। তাদের স্থান পূরণ সহসাই সম্ভব নয় বলে মনে করেন আমিনুল, ‘নারী ফুটবলে এশিয়ান পর্যায়ে অবস্থান করতে হলে দক্ষিণ এশিয়ার সেরাদের দ্বারাই সম্ভব। সেরা গোলরক্ষক ও টুর্নামেন্টসেরা বাংলাদেশের রুপ্না-ঋতুপর্ণা। এদের পক্ষেই সম্ভব এশিয়ান পর্যায়ে কিছু করা। নতুনদের সাফ পর্যায়ে প্রতিষ্ঠা পেতে সময় লাগবে, এরপর না এশিয়ান।’
বাটলার-সাবিনাদের দ্বন্দ্ব এখন অনেকটাই ইগোকেন্দ্রিক। ঠিক তেমনি বাফুফের কাছেও এখন বিষয়টি ‘ইগো’র পর্যায়ে। বাটলারকে সরালে বাফুফের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ভুল প্রমাণিত হবে। ফুটবলসংশ্লিষ্টদের ধারণা, ফেডারেশনের অদূরদর্শী ও অপেশাদার সিদ্ধান্তে কয়েকজন ফুটবলারের বিমুখতা তৈরি হচ্ছে। ফুটবলে কোচই সর্বেসর্বা। দলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে কোচের হাতেই।