ক্রিকেট
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে টিকে থাকল আফগানিস্তান
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। গতকাল আফগানিস্তান ৮ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। আগে ব্যাট করে আফগানিস্তান ইব্রাহীম জাদরানের সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে করে ৩২৫ রান। জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের সামনে টার্গেট ছিল ৩২৬ রান। ব্যাট করতে নেমে জো রুটের সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ড চ্যলেঞ্জটা ভালো ভাবেই নিয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
Printed Edition

ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথম জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। গতকাল আফগানিস্তান ৮ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ডকে। আগে ব্যাট করে আফগানিস্তান ইব্রাহীম জাদরানের সেঞ্চুরিতে ৭ উইকেটে করে ৩২৫ রান। জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের সামনে টার্গেট ছিল ৩২৬ রান। ব্যাট করতে নেমে জো রুটের সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ড চ্যলেঞ্জটা ভালো ভাবেই নিয়েছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। মাত্র এক বল বাকি থাকতে আফগান বোলারদের বোলিং আক্রমনে ৩১৭ রানে ইংল্যান্ড অল আউট হলে আফগানিস্তান জয় পায় ৮ রানে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৩ রানের। আদিল রশিদ ও মার্ক উড মিলে এই রান তুলতে ব্যর্থ হন। ওভারের ৫ম ওমরজাইয়ের বলে আউট হয়ে যান আদিল রশিদ। ফলে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ৮ রানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বিদায় করে টিতে থাকল আফগানিস্তান। ওমরজাই একাই নেন ৫ উইকেট।
জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের সামনে ৩২৬ রানের টার্গেটটা কঠিনই ছিল। এই কঠিন টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ইংলিশদেরও। মাত্র ১৯ রানে প্রথম উইকেট হারানো ইংল্যান্ড ৩০ রানে হারায় দ্বিতীয় উইকেট। দলের শতরান হওয়ার আগে তৃতীয় উইকেট হারায় দলটি। ওপেনার ফিল সল্ট ১২ রান আর বেন ডাকেট ৩৮ রানে আউট হওয়ার পর অধিনায়ক জেমি স্মিথ আউট হন মাত্র ৯ রানে। দলীয় ৯৮ রানে তিন উইকেট হারানো ইংল্যান্ডও ঘুরে দাঁড়ায় চতুর্থ উইকেট জুটিতে। হ্যারি ব্রুককে নিয়ে জুটি করে দলকে এগিয়ে নেন জো রুট। এই জুটি ভাংগার আগেই আংল্যান্ড পৌছে যায় ১৩৩ রানে। হ্যারির বিদায়ে ভাংগে এই জুটি। আউট হওয়ার আগে এই ব্যাটার করেন ২১ বলে ২৫ রান। হ্যারি ব্রুক আউট হরেও জস বাটলারকে নিয়ে আরো একটি বড় জুটি গড়েন জো রুট। এই জুটি মিলে ইংল্যান্ডকে পৌছে দেয় ২১৬ রানে। বাটলারের বিদায়ে ভাংগে এই জুটি। আউট হওয়ার আগে বাটলার ৪২ বলে ৩৮ রান করেন। দলীয় ২৩৩ রানে ইংল্যান্ড হারায় ৬ষ্ঠ উইকেট। ব্যাট করতে নেমে লিভিংস্টোন আউট হন মাত্র ১০ রান করে। সতীর্থতা এক এক করে আউট হলেও টিকে থেকে দলকে এগিয়ে নেয়ার পাশাপাশি নিজের সেঞ্চুরিও তুলে নেন জো রুট। ৯৮ বলে ১০ বাউন্ডারি হারিয়ে সেঞ্চুরি করেন এই ব্যাটার। দলীয় ২৮৭ রানে ওমরজাইয়ের বলে গুলবাজকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন রুট। আউট হওয়ার আগে ১১১ বলে ১২০ রানের ইনিংস খেলেন রুট। সেঞ্চুরিয়ান রুটের বিদায়ে দলের হাল ধরেন জেমি ওভারটন আর জোফরা আর্চার। এই জুটি ভাংগার আগে দলটি পৌছায় ৩০৯ রানে। ওভারটনের বিদায়ে ভাংগে এই জিটি। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ২৮ বলে ৩২ রান। জয়ের জন্য শেষ ১২ বলে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১৬ রান। কিন্তু দলীয় ৩১৩ রানে ইংল্যান্ড হারায় জোফরা আর্চারের উইকেট। ১৪ রানে আউট হন এই ব্যাটার। ১৯তম ওভারে এক উইকেট হারিয়ে মাত্র ৩ রান করে দলটি। ফলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৭ রান আর আফগানদের এক উইকেট। কিন্তু আফগানিস্তান আদিল রশিদকে ফিরিয়ে এক বল আগেই ইংল্যান্ডকে ৩১৭ রানে অলআউট করেন ম্যাচ জিতে ৮ রানে। আফগানিস্তানের পক্ষে আজমতুল্লাহ ওমরজাই ৫টি, মোহাম্মদ নবি ২টি,রশিদ খান, ও গুলবাদিন নাইব ও ফারুকী একটি করে উইকেট নেন। এরআগে, টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ৩২৫ রানের বিশাল স্কোর গড়ে আফগানিস্তান। আফগান ওপেনার ইব্রাহীম জাদরান সেঞ্চুরিসহ ১৭৭ রান করেন। সেই সাথে এই ওপেনার জোড়া রেকর্ডও গড়েন। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন ইব্রাহীম। এর আগে এই আসরেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লাহোরে বেন ডাকেটের ১৬৫ রান ছিল সর্বোচ্চ। আফগানিস্তানের জার্সিতেও এটি সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। ২০২২ সালে পাল্লেকেলেতে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১৬২ রান করে আগের রেকর্ডটির মালিকও ছিলেন তিনি। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা তেমন ভালো হয়নি আফগানদের। বিশেষ করে জফরা আর্চারকে ঠিকমতো সামাল দিতে পারছিলেন না আফগান ব্যাটাররা। দলীয় ১১ রানে প্রথম উইকেট হারোনো আফগানরা দলীয় ৩৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদেই ছিল। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদিকে নিয়ে ইব্রাহিম জাদরান দলকে এগিয়ে নেয় বিশাল স্কোরের দিকে। এই জুটি ভাংগার আগেই দলটি পৌছে যায় ১৪০ রানে। অধিনায়ক শাহিদির বিদায়ে ভাংগে এই জুটি। আউট হওয়ার আগে শাহিদি করেন ৬৭ বলে ৪০ রান। দলীয় ১৪০ রানে অধিনায়ক বিদায় নিলেও প্রথমে আজমতউল্লাহ ও পরে মোহাম্মদ নবিকে নিয়ে দলকে রানের পাহাড়ে নিয়ে যান ইব্রাহীম। ওমরজাই ৩১ বলে ৪১ রান আর মোহাম্মদ নবি ২৪ বলে ৪০ রান করে আউট হলেও সেঞ্চুরিসহ ১৭৭ রান করে দলীয় ২২৩ রানে আউট হন জাদরান। ১৪৬ বল খেলে ১২টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান ৭ উইকেটে ৩২৫ রান ইংল্যান্ডের সামনে ৩৩৬ রানের বিশাল টার্গেট দেয়। জোফরা আরচার নেন সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। ২টি নেন লিয়াম লিভিংস্টোন। ১টি করে নেন জেমি ওভারটন ও আদিল রশিদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান--- ৩২৫/৭ (৫০ ওভার)
ইংল্যান্ড-------- ৩১৭ /১০ ( ৪৯.৫ ওভার)
আফগানিস্তান ৮ রানে জয়ী।