ক্রিকেট
ফাইনালের টিকিট চড়া দামে ছিল কালোবাজারিদের হাতে
বিপিএলের ফাইনাল বলে কথা। বিপিএল নিয়ে যতই সমালোচনা থাকনা কেন, ফাইনালের টিকিট যেন সবসময়ই সোনার হরিণ। ফাইনালের টিকিট নিয়ে বরাবরের মতো এবারও ছিল দর্শকদের মধ্যে হাহাকার।
Printed Edition
স্পোর্টস রিপোর্টার: বিপিএলের ফাইনাল বলে কথা। বিপিএল নিয়ে যতই সমালোচনা থাকনা কেন, ফাইনালের টিকিট যেন সবসময়ই সোনার হরিণ। ফাইনালের টিকিট নিয়ে বরাবরের মতো এবারও ছিল দর্শকদের মধ্যে হাহাকার। তবে বেশি দামে টিকিট মিলেছে কালোবাজারিদের কাছ থেকে। গতকাল একাদশ বিপিএলের মেগা ফাইনালে চিটাগাং কিংসের মুখোমুখি হয় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল। মিরপুরের শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয় সন্ধ্যা ৬ টায়। ফাইনালের টিকিট পেতে এবারও যেন যুদ্ধে নামতে হয়েছে ক্রিকেট ভক্তদের। গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত টাকা। কালোবাজারে ৪০০ বা ৫০০ টাকার টিকিটের জন্য হাঁকানো হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। শহীদ মুশতাক বা শহীদ জুয়েল স্ট্যান্ডের ১ হাজার টাকার টিকিটের জন্য চাওয়া হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার টাকার বেশি। মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়াম সংলগ্ন আবাসিক এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর হাতে হাতে ািছল টিকিট। খোঁজ নিয়ে জানা গেল ৪০০ বা ৫০০ টাকার টিকিটের জন্য হাঁকানো হচ্ছে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। শহীদ মুশতাক বা শহীদ জুয়েল স্ট্যান্ডের ১ হাজার টাকার টিকিটের জন্য চাওয়া হচ্ছে সাড়ে ৩ হাজার টাকার বেশি। তবে এমন উন্মাদনার মাঝেও কেউ কেউ বাজেটের মাঝে কিনছেন টিকিট। তাদের চোখেমুখে ভর করেছে আনন্দ। স্টেডিয়ামের প্রবেশমুখে যারা আছেন, তাদের চোখেমুখে তৃপ্তির হাসি। প্রিয় দলকে সমর্থন জানানোর সব রসদও প্রস্তুত তাদের হাতে। এখন অপেক্ষা হাউজফুল দর্শকের সামনে মাঠের খেলা শুরু হওয়ার। এদিকে, ফাইনাল ম্যাচের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে দুপুরের আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিসিবি। আগত দর্শকদের ভোগান্তি যাতে না হয়, তাই বিষয়টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জানিয়েছে, যেহেতু কোনো টিকিট অবিক্রীত নেই। এমন অবস্থায়, জাতীয় সুইমিং কমপ্লেক্স সংলগ্ন টিকেট বুথের কাছে অথবা স্টেডিয়ামের আশপাশে ফাইনালের টিকেটের সন্ধান না করার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে। এর আগে মিরপুরে বিপিএলের ম্যাচের টিকিট নিয়ে কম বিশৃঙ্খলা হয়নি। বিক্ষুব্ধ দর্শকরা টিকিট কাউন্টারে আগুণ ধরিয়ে দিয়েছিল। যদিও এবার অনলাইনে টিকিট বিক্রিতেই বেশি জোর দিচ্ছে বিসিবি। এ ছাড়া নির্দিষ্ট ব্যাংকের বুথ থেকেও সংগ্রহ করা গেছে টিকিট। ঢাকার বাইরে থেকে ওমর নামে ফরচুন বরিশালের এক ভক্ত। স্টেডিয়াম সংলগ্ন সুইমিংপুল এলাকা থেকে চারশ টাকার টিকিট কিনেছেন ১৫০০ টাকা দিয়ে। কিন্তু প্রবেশ করতে গিয়ে পারেননি, স্ক্যানে ধরা পড়ে জাল টিকিট। ফাইনাল দেখতে এসে এমন ঘটনার সাক্ষী হওয়ার পর গেটের সামনে কাঁদছিলেন ওমর। তাকে ঘিরে রয়েছে উৎসুক জনতা। ওমর বলেন, ‘আমি ভৈরব থেকে এসে এখানের একজনের কাছ থেকে টিকিট কিনি। কিন্তু ঢুকতে গিয়ে পারিনি। স্ক্যান করে আমাকে বের করে দেয়। এখন আমার চলে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। চারগুণ টাকা খরচ করেছি। আসা যাওয়ার ভাড়াও লস।’ ওমর যখন জাল টিকিট নিয়ে চেঁচামেচি করছিলেন তখন আরও চারজন আসেন জাল টিকিট হাতে। তাদের মধ্যে একজন তরিকুল ইসলাম। তরিকুল বলেন, ‘আমরা ১০টা টিকিট কিনি। প্রতিটির দাম ১৫০০ টাকা। ৬ জন ঢুকতে পেরেছে, আমরা চারজন ঢুকতে গিয়ে পারিনি। এভাবে ঠকলাম, বুঝতেও পারিনি।’ তরিকুল আরো বলেন, ‘আগে ব্ল্যাক হতো, এখনও হচ্ছে। অনলাইনে ছাড়ার পর টিকিট জাল করে বিক্রি হচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়ে কিনেছি। আমরা যাব কোথায়?’ ফাইনাল ম্যাচ দেখতে ভোরে মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে এসেছিলেন আসাদ নামের এক দর্শক। অনলাইনে বিপিএল ফাইনালের টিকিট না পেয়ে শেষ ভরসা হিসেবে সরাসরি স্টেডিয়ামে চলে আসেন। ছয় বন্ধুকে নিয়ে মিরপুরে এসেও আসাদের চোখেমুখে হতাশা। সকালে সুইমিং ফেডারেশনের সামনের নির্ধারিত বুথে এসে টিকিট পাননি। টিকিট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আসাদ বলেন, ‘সকাল থেকে এখানে এসে নির্ধারিত লাইনে দাঁড়াই। বুথ থেকে বলা হয়েছিল সকাল ৯টায় টিকিট ছাড়া হবে। কিন্তু নির্ধারিত সেই সময়ের অনেকটা পরেও পাওয়া যায়নি টিকিট। সেখানে উত্তপ্ত অবস্থার সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নেয়। এরপর থেকেই অন্য উপায়ে টিকিট সংগ্রহের চেষ্টায় আছি।’