DailySangram-Logo-en-H90
ই-পেপার আজকের পত্রিকা

সমন্বয়কের মুখোমুখি

জুলাই ২০২৪ এর ১৩ তারিখ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। ছাত্ররা তাদের অধিকারের কথা বলার জন্য রাজপথে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুলিশ যখন মানবদেওয়াল তৈরি করে রাখলো; তখন আমাদের ছাত্র অগ্নিদাবানলের মতো সেটা ভেদ করে বের হয়ে আসলো। মনে হলো যে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়া থেকে আজ পর্যন্ত আমি এবং আমরা রাজপথে আছি। সেখান থেকে সমন্বয় শুরু।

ইবরাহীম খলিল
Printed Edition
Untitled-1

মেহরাব সিফাত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক। তিনি দৈনিক সংগ্রামকে শুনিয়েছেন উত্তাল জুলাই মাসে আন্দোলনের সময়ের অভিজ্ঞতা। দৈনিক সংগ্রামের সুবর্ণ জয়ন্তীর সংখ্যায় মেহরাব সিফাতের স্মৃতিকথা পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরেছেন ইবরাহীম খলিল।

দৈনিক সংগ্রাম : উত্তাল জুলাই আন্দোলনের একটি স্মৃতিকথা বলেন।

মেহরাব সিফাত : জুলাই ২০২৪ এর ১৩ তারিখ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। ছাত্ররা তাদের অধিকারের কথা বলার জন্য রাজপথে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুলিশ যখন মানবদেওয়াল তৈরি করে রাখলো; তখন আমাদের ছাত্র অগ্নিদাবানলের মতো সেটা ভেদ করে বের হয়ে আসলো। মনে হলো যে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়া থেকে আজ পর্যন্ত আমি এবং আমরা রাজপথে আছি। সেখান থেকে সমন্বয় শুরু। এরপর ১৪ই জুলাই রবীন্দ্রনাথ হলের সামনে যখন ছাত্রলীগের একটি মানব দেওয়াল; তখন বাম ডান মধ্যপন্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং অরাজনৈতিক ছাত্ররা মিলে প্রতিবাদ জানাচ্ছি কেন আমাদের নিরীহ ছাত্র ভাইকে কেন আটক করে রেখেছে হলের ভেতরে ছাত্রলীগেরা? সেই প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে তারা আমাদের ওপর আক্রমণ করতে আসলো। আমরা তাদের তাড়িয়ে দিয়ে তাদের হলের ভেতর তাদের আটক করলাম। সেই পর্যায়ে আমাদের কোন ভাই আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। হলের বিল্ডিংয়ের উপর থেকে ইট মারায় আমার এক বোনের পায়ে এসে লাগলো। সেও লুটিয়ে পড়লো। আমরা মেডিকেলে গেলাম। গিয়ে দেখলাম আমার ডান হাতের আঙ্গুলে ইতোমধ্যে ফ্র্যাকচার ধরে গেছে। তো এভাবেই চলছিল। সেই জায়গা থেকে ১৫ জুলাইয়ের ভয়াল রাত এলো। রাত সাড়ে দশটার দিকে ভিসি ভবনের সামনে আমরা যখন আন্দোলন করতে করতে উপস্থিত হলাম, ভিসির সামনে আমরা আমাদের দাবি নিয়ে আসলাম; ভিসি বের হলো, কিন্তু কিছুক্ষণ পর দেখলাম ভিসি আমাদের দাবির ব্যাপারে কোন রকম কথা না বলেই বাসভবনে ফিরে যাচ্ছে। এরপর আমাদের মিছিল আরও তীব্রতা পেল, আরও শিক্ষার্থীরা এসে মিছিলে যোগ হলো। ইতিমধ্যে আমরা একটা থমথমে পরিবেশ আঁচ করলাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম ছুরি চাপাতি নিয়ে কিছু ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী ও কিছু টোকাই শ্রেণির লোকজন আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। আমরা তখন ভিসির বাসভবনের ভেতরে ঢুকে গেলাম। তখন তারা ভিসির পুরো ভবন ঘেরাও করে ফেলে। তখন তারা বাউন্ডারির উপর দিয়ে আমাদের ছুরি এবং চাপাতি দেখালো। এসময় তারা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।

তাদের আক্রমণের ভেতর সাংবাদিক ভাইরা পড়ে যায়। বাইরে থেকে তারা পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করছিল। তখন দেখা গেলা তারা সাংবাদিকদেরও ছাড় দিলো না। সাংবাদিকরা তখন তাদের ভয়ে পুকুরে নামতে বাধ্য হলো। আমাদের কাছে মনে হলো যে আমরা ৭১ এর যুদ্ধের ঘটনা শুনেছি। ভিসির বাসভবনের পাশে যে পুকুর তাদের আক্রমণ থেকে রেহাই পেতে পুকুরে ডুব দিয়েছিল। ডুব দিয়ে যতক্ষণ পানির নিচে থাকা যায়, থাকলো। আবার কতক্ষণ শ্বাস নিলো। এই পর্যায়ে আমাদের ছাত্রদের একটি অংশ ভিসির বাসভবনে আটক। সেখানে মালিহা আমলার যে লাইভ ভিডিও আমরা দেখেছি সেখানে আর্তনাদ আর আত্মচিৎকার আমরা শুনেছি। এটি রাষ্ট্রের ৫৩ বছরের ঘুণে ধরার আর্তনাদ। বেদনার চিৎকার। সেটি মর্মান্তিকভাবে সাড়া দিয়ে আন্দোলনে নামলো মানুষ। সেদিন অবাক চোখে তাকিয়ে দেখলো, সবার মনে বিভিষীকা জাগলো। এবং সেই জায়গা থেকেই আমাদের জুলাই অভ্যুত্থানের সূচনা হলো। সারাদেশে আন্দোলনের তীব্রতা ছড়িয়ে পড়লো।

দৈনিক সংগ্রাম : ১৬ তারিখ যখন আবু সাঈদ রংপুর এবং ওয়াসিম আকরাম শহীদ হলো চট্টগ্রামে। সেইদিন আপনার কেমন কাটলো।

মেহরাব সিফাত : ১৫ তারিখ সেইরাতের আমরা দেখলাম ১৬ তারিখ সকালে, বিশেষ করে আমরা ১৫ তারিখ রাতেই যদি বলি, ভিসির বাসভবনে থাকতে পারিনি। আমরা থাকতে হয়েছে একটি জঙ্গলে। আপনি জানেন যে আমাদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয় জঙ্গল দ্বারা আবদ্ধ। সেই জঙ্গলে রাত কাটাতে হয়েছে। আমাদের ছয়জনকে আটক করায় আমরা বার বার জঙ্গল ভেদ করে ক্যাম্পাসে ঢুকার চেষ্টা করলেও গেইটে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা গেইটের মুখে টহল দিচ্ছিল। আমরা বার বার পেছনে আসছিলাম। তাদের হাতে তখন অস্ত্র ছিল। সেদিন একটি বীভৎস পরিস্থিতি দাঁড়ায়। ভোর হওয়ার পর আমরা ক্যাম্পাসে ফিরে দেখি ক্যাম্পাসে বিদ্যুতের যে খাম্বাগুলো ছিল সেগুলো পড়ে আছে। অনেকগুলো মোটরসাইকেল আগুনে জ¦লছে। এর বাইরেও অনেকগুলো দোকান জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা সারারাতে না ঘুমিয়ে জঙ্গলে ছিলাম। কিন্তু ছাত্ররা তাদের কাজ চালিয়ে গেছে। সকালে দেখি পুরো সাভার ধামরাই গাবতলীসহ সব এরিয়া থেকে এসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছে, ২০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী।

দৈনিক সংগ্রাম : এবার আপনার কাছে জানতে চাই, আন্দোলনের কারণে সরকার যখন ইন্টারনেট বন্ধ করে দিলো তখন আপনারা সমন্বয়করা একে অপরের সাথে কিংবা কেন্দ্রের সাথে কিভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতেন?

মেহরাব সিফাত : ব্যক্তিগতভাবে যদি বলি তাহলে বলবো আমরা মাল্টিপল সিম ব্যবহার করতাম। এ সিমগুলো সরবরাহ করতো আমার এক বান্ধবী। সে আমাকে অনেকগুলো সিম সরবরাহ করেছে। এর সাথে আমি একটি ছোট বাটন ফোন ব্যবহার করতাম। আমরা মেসেজ ফরওয়ার্ড করতাম, আমরা মেসেজ দিতাম, সেটা ফরওয়াডেড হয়ে হয়ে যতক্ষণ না আমাদের কাছে এসে পৌঁছতো; সার্কেলের মতো তার আগ পর্যন্ত আমরা বুঝতে পারতাম যে আমাদের চ্যানেল এখনো ইস্টাবলিস হয়নি। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত মেসেজটা সবাই পায়নি। সার্কেলটা আমাদের গোছানো ছিল। একই সাথে আমি টাইট জামা পরতাম, টাইট প্যান্ট পরতাম। যেন দেখতে শ্রমিক বা এই শ্রেণির পেশাজীবী মনে হয়। টি-শার্ট পরতাম এবং চুলে অনেক তেল দিয়ে বের হতাম। কখনো দাঁড়ি বড় থাকতো, কখনো ফ্রেন্স দাড়ি করতাম। কখনো শুধু গোফ রাখতাম। এরকমভাবেই চলাফেরা করেছি। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গাতে যাওয়ার সময় মোবাইল বন্ধ রাখতাম। আমরা থাকি না এমন জায়গাতে মোবাইল অন করতাম। মোবাইল বন্ধ করে বন্ধ ফোন নিযে বাসায় যেতাম। একেক দিন একে বন্ধুর বাসায় রাত কাটাতাম। একেকদিন বড় ভাইয়ের বাসায় থাকতাম। কখনো কোন অজানা প্রতিবেশির বাসায় গিয়ে ওঠতাম।

দৈনিক সংগ্রাম : ৫ আগস্ট আপনি কোন জায়গায় ছিলেন?

মেহরাব সিফাত : ৪ তারিখ রাতে আমরা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য বরাদ্দ অরুনা গলি নামের একটি জায়গা আছে, সেটি আবাসিক প্রকল্প শিক্ষকদের জন্য। সেখানে অনেক আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরাও থাকে। আওয়ামী পন্থী শিক্ষকরাও এব্যাপারে সচেতন ছিলেন। এখানে ওই রকম কোন ছাত্ররা আসছে কি-না। সেখানে আমাদের হোস্টেলের একজন শিক্ষিকা, দর্শন বিভাগের একজন ম্যাম। তার কাছে আমরা গিয়ে উঠি। তিনি আমাদেরকে আশ্রয় দেন। সেখানে আমরা রাতটা থাকি। আমি সারা রাতই জেগে থাকি। আমি আমার নাম পরিচয় দিয়ে আমার ওয়াল পেপারটা সেট করি। আমি প্রস্তুতি নেই যে, যেহেতু আমার আইডিকার্ড আমার সাথে ছিল না। আমার ফোনটা যেন আমার আইডেনটিটি হিসেবে ব্যবহার হতে পারে। মোবাইলে ফুলচার্জ দিয়ে ওয়াল পেপারে আমার এবং বাবার নাম পরিচয় এবং মোবাইল নাম্বারসহ ঠিকানা দিয়ে রাখি। তখন মৃত্যুর জন্য যত রকমের প্রস্তুতি এবং মানসিকতা নিয়ে রাখি এবং সকালবেলা সেই অরুনা গলি থেকে জাহাঙ্গীর নগরের উদ্দেশ্যে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা হবে, সেখানে আমরা যাই। সেদিন রিকশাওয়ালা জানিয়েছিল যে আমরা দেড়টার দিকে কর্মসূচি দিয়েছি। সকালে আপনারা যান, দুপুরে আমরা বের হবো। সেই জায়াগা থেকে জাহাঙ্গীরনগরের শহীদ মিনারে একত্রিত হওয়া। আমরা তখন ২০ জন, বিশ থেকে ৫০ জন, এভাবে ৫শ’জন একত্রিত হয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের গন্ডি পার হই। রাস্তা পার হওয়ার যখন কিছুক্ষণ পর পর যখন আমরা থামছিলাম, বিরতি নিচ্ছিলাম আমাদের সাথে ২ হাজার ৪ হাজার লোকের জমায়েত বাড়ছিল। মানিকগঞ্জ থেকে উত্তরা থেকে আসছিল। কখনো দেখলাম ৫ হাজার গার্মেন্টস শ্রমিকের জমায়েত। এভাবে করে করে আমাদের ৩০/৩৫ হাজারের একটি জমায়েত নিয়ে ঢাকা- আরিচা সড়কে আমরা গাবতলীর দিকে ধাবিত হই।

দৈনিক সংগ্রাম : শেষ প্রশ্ন, কখন জানতে পারলেন স্বৈরাচার পালিয়েছে? এবং তখনকার অনুভূতিটা কেমন ছিল?

মেহরাব সিফাত : আমি তখন দেখলাম যে, চারপাশে প্রচ- আওয়াজ হচ্ছে। মানুষ দৌড়াচ্ছে। সেটা ৫ আগস্ট বেলা এগার কিংবা সাড়ে এগারটা। কিছুক্ষণ পরই দেখলাম টিয়ার গ্যাসের জন্য আর শ^াস নিতে পারছি না। আমার পেপসোডেন্টেও কাজ হচ্ছে না। তখনই টের পেলাম যে, সামনে ছররাগুলীর আওয়াজ। পুলিশ ছররা গুলী ছুঁড়ছে। আমার শিক্ষকরা সামনে ছিলেন। আমি কিছুটা সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলাম। জায়গাটা সাভার সিটি সেন্টারের সামনে। আমি আর বেশি দূর এগুতে পারলাম না। এরমধ্যেই আমি টের পেলাম আমার কানের পাশ দিয়ে গুলী গেছে অথবা গুলী আমার গায়েই লাগছে। শব্দটা ঠিক আমার গা থেকে আসছে বলে মনে হচ্ছে। সবাই যেদিকে দৌড় দিলো। উল্টো হয়ে আমিও সেদিকেই দৌড় দিলাম। লাল টিশার্ট পরা একটা ১৮/১৯ বছর বয়সের শিক্ষার্থী আমাকে মেহরাব ভাই মেহরাব ভাই বলে আমার হাতটা ধরে সে টান দিলো। সে আমাকে বললে মেহরাব ভাই আপনি সাইড দিয়ে দৌড়ান। সে আমাকে ঠেলা দিয়ে ওভারব্রীজের পাশ দিয়ে ঠিক ফুটপাতের ওপর দিয়ে যেতে বাধ্য করলো। কিন্তু সেই ধাক্কার সাথে সাথে নিজেও অনেকটা মাঝপথে এসে পড়লো। ঠিক এক সেকেন্ডের মধ্যে আমি আরেকটি গুলীর শব্দ পেলাম। আরও কয়েকটি গুলীর শন্দ পেলাম। মনে হচ্ছিল গুলীগুলো আমার গায়ে এসে বিঁধছে। আমি ডানে মোড় নেওয়ার আগেই বামে তাকিয়ে দেখি যে লাল টি শার্ট পরা শিক্ষার্থীটা মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। আমি যখন ডান পাশে গলি দেখলাম, সিটি সেন্টারের পাশের রোডে ঢুকার পর আমি দেখতে পাচ্ছি যে, মানুষ বলছে এখানে ছাত্রলীগ আছে। গলির ভেতর ঢুকতে মানা করছে। এরপরও আমি একটা বাসার সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন এক বোরকা পরা মা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কে? আমি বললাম আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি এরকম কিছু শুনতে চাচ্ছিল যে আমি কোন স্টুডেন্ট। আমি ছাত্রলীগ না। তিনি একদম খামচি দিয়ে আমার টিশার্টটা ধরলেন। আমাকে তাদের গলি থেকে বাসার গেটে নিয়ে গেল। তার বাসার সব ছেলে মেয়েরা ছোটাছুটি শুরু করলো। বাসার কর্তা ডাক দিলেন যে, তাকে ঘরে নিলে আমাদের সমস্যা হতে পারে। তখন ওই বললেন যে, যদি তোমার ছেলে আজ বেঁচে থাকতো তাহলে তাকেও হয়তো এরকম আন্দোলনে নামতে হতো। আমাকে ৫ ফুট বাই ৬ ফুটের একটা ছোট কামরাতে আমাদের বসতে দিয়ে বাইরে থেকে তালা মেরে দিলো। তখন আমি আমার ব্যথা টের পাচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ ওই মা একটা বড় গ্লাসে করে আমার জন্য শরবত নিয়ে এলেন। আমি যখন শরবত খাচ্ছিলাম, ওই মায়ের কথা শুনছিলাম এবং তার কান্না শুনছিলাম। শরবত শেষ করে যখন গ্লাসটা ফেরত দিলাম তার হাতে তখন আমি টিভির আওয়াজ শুনতে পেলাম যে, আর্মি ঘোষণা করছে, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছে। বর্তমানে হাসিনার সরকার আর বিদ্যমান নেই। তখন আমি ওই মায়ের দিকে তাকিয়ে আছি। আমার কাছে মনে হলোÑ এই সাভার আমার জন্মভুমি। আমার সামনে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন তিনি আমার নতুন মা। এই বাংলাদেশ আমার নতুন বাংলাদেশ।

লেখক: সাংবাদিক