শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

মহাকাশে রোজার বিধান

মহান মাস রমজান এলে অনেক কথা হয়, আলোচনা হয়। এই আলোচনা এখন আর শুধু সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। জড়িয়ে যান চিকিৎসক, গবেষক, বিজ্ঞানীসহ আরও অনেকে। এই রমজানে তো জড়িয়ে গেলেন নভোচারীও। লক্ষণীয় বিষয় হলো, জ্ঞানের দিগন্ত যত সম্প্রসারিত হচ্ছে, রমজান তথা রোজা তত বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। ২৪ মার্চ সিএনএন-এর একটি প্রতিবেদন মদ্রিত হয়েছে পত্রিকান্তরে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। অথচ এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) নভোচারী সুলতান আলনিয়াদি অবস্থান করছেন মহাকাশে। তিনি ছয় মাস মহাকাশে থাকবেন। এখন অনেকের মনে প্রশ্ন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কোন নিয়মে রোজা রাখবেন সুলতান?

উল্লেখ্য যে, সুলতানকে বহনকারী মহাকাশ পরীক্ষাগারটি ঘণ্টায় ২৭ হাজার ৬০০ কিলোমিটার গতিতে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে। তিনি প্রতি ২৪ ঘন্টায় ১৬টি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখেন। কিন্তু রোজার নিয়ম হলো, সূর্যোদয়ের আগে সাহরি খেতে হবে এবং তারপর সূর্যাস্ত পর্যন্ত সব ধরনের খাবার ও পানীয় পরিহার করতে হবে। তাহলে এখন মহাকাশে নভোচারী সুলতান কোন নিয়মে রোজা রাখবেন? প্রাথমিকভাবে প্রশ্নটি বেশ জটিল মনে হতে পারে। কিন্তু ইসলামের বিধান যেহেতু মহান আল্লাহ প্রদত্ত, তাই এই বিধানের কোনো কিছুই মানুষের জন্য অসম্ভব বা কঠিন হতে পারে না, তবে সেই বিধান জেনে নিতে হবে। নভোচারী সুলতান সেই বিধান জানেন। মহাকাশে যাওয়ার আগে মানুষের মনে জাগা প্রশ্নের জবাব তিনি দিয়ে গেছেন। ৩ মার্চ সুলতান আলনিয়াদি মহাকাশে যাওয়ার পর থেকেই মানুষের মনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। আর প্রশ্নটি হলো, মহাকাশ স্টেশনে আপনি কীভাবে রোজা রাখবেন? এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, মহাকাশে থাকায় তার রোজা রাখার প্রয়োজন হবে না। কারণ মহাকাশে অবস্থান করার সময় আমি একজন ভ্রমণকারী হিসেবে বিবেচিত হবো, তখন রোজা রাখা আমার জন্য বাধ্যতামূলক নয়। সুলতান আরও বলেন, ‘যেহেতু মহাকাশের যে কোনো কিছু মিশনকে ধ্বংস করতে পারে কিংবা ক্রুদের স্বাস্থ্য বিপন্ন করতে পারে, তাই ডিহাউড্রেশন ও অপুষ্টি এড়ানোর জন্য আমাদের পর্যাপ্ত খাবার খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’ এছাড়া ফেব্রুয়ারিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সুলতান বলেছিলেন, ‘আমি চাইলে গ্রিনিচ টাইম বা আর্থ-টাইম অনুযায়ী রোজা রাখতে পারি, যা অফিশিয়াল স্পেস টাইম হিসেবে বিবেচিত হয়।’ সুলতান আর বলেছেন, ‘তিনি যদি রোজা রাখার সুযোগ পান, তাহলে তিনি তা পালন করবেন। রোজা রাখা স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। আমি অপেক্ষা করবো এবং দেখবো, রোজা রাখা যায় কিনা।’ ইসলাম ধর্মের একটি সৌন্দর্য হলো, বাস্তব কারণে কোনো বিধান কারো জন্য কঠিন হয়ে উঠলে তা সহজ করে দেওয়া হয়। রোজার বিধানের ক্ষেত্রেও বিষয়টি লক্ষ্য করা যায়। ইসলামের বিধানে বান্দাকে পরীক্ষা করার বিষয় আছে, তবে অযথা কষ্ট দেওয়ার কাঠিন্য নেই’।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ