ঢাকা, বৃহস্পতিবার 28 March 2024, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী
Online Edition

এবার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সের বাড়িতেও মিলল গোপন নথি

সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের পর এবার সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের বাড়ি থেকেও গোপনীয় বেশকিছু রাষ্ট্রীয় নথি উদ্ধার করা হয়েছে।

খবরে প্রকাশ, গত সপ্তাহে পেন্সের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের বাড়ি থেকে নথিগুলো উদ্ধার করা হয়। রিপাবলিকান নেতা মাইক পেন্স ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। এরই মধ্যে নথিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পেন্সের আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আর্কাইভকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন।

আইনজীবী গ্রেগ জ্যাকবের লেখা ওই চিঠিগুলো মঙ্গলবার দেখেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ন্যাশনাল আর্কাইভকে ১৮ জানুয়ারি লেখা চিঠিতে ওই গোপন নথিগুলো পাওয়ার কথা জানান জ্যাকব, পরে ২২ জানুয়ারি লেখা চিঠিতে বলেন, ভাইস প্রেসিডেন্টের বাড়িতে এসে এফবিআই ওই নথিগুলো সংগ্রহ করেছে।

এর মাধ্যমে বাসভবনে গোপন নথি উদ্ধার হওয়া বাইডেন ও ট্রাম্পের দলভুক্ত হলেন পেন্স।

১৮ তারিখের চিঠিতে পেন্সের আইনজীবী জ্যাকব লিখেছিলেন, বাইডেনের বাসভবন থেকে গোপন নথি উদ্ধারের খবর পেয়ে ‘সাবধানতার অংশ হিসেবে’ পেন্স তার বাড়িতে রাখা নথির মধ্যে গোপনীয় কিছু আছে কিনা, তা জানতে বিশেষজ্ঞ আইনজীবীদের দ্বারস্থ হন।

“ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নথিগুলোর মধ্যে সামান্য কিছু নথিকে আইনজীবীরা সম্ভাব্য সংবেদনশীল বা গোপনীয় নথি হিসেবে চিহ্নিত করেন। নথি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক ন্যাশনাল আর্কাইভের নির্দেশনার অপেক্ষা না করে তাৎক্ষণিকভাবে পেন্স সেগুলোকে নিরাপদ তালাবদ্ধ জায়গায় রেখে দেন,” চিঠিতে লেখেন জ্যাকব।

সম্ভাব্য সংবেদনশীল বা গোপনীয় নথি চিহ্নিত করার পর পেন্সের আইনজীবীরা আর সেসব নথি পর্যালোচনা করে দেখেননি।

২২ জানুয়ারি লেখা পৃথক চিঠিতে জ্যাকব জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার মন্ত্রণালয় ‘স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে পাশ কাটিয়ে পেন্সের বাসভবন থেকে সরাসরি সেসব নথি সংগ্রহের’ অনুরোধ জানায়।

সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্সের সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী, এফবিআই-র কর্মকর্তারা ১৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে পেন্সের ইন্ডিয়ানার বাড়িতে যান এবং তালাবদ্ধ জায়গায় রাখা ওই নথিগুলো সংগ্রহ করেন বলে জ্যাকব জানান।

বাইডেনের কাছে যেসব গোপন নথি মিলেছে, তার বেশিরভাগই তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন নথি; আর ট্রাম্প তার নথিগুলো হস্তান্তরেই রাজি হননি, যে কারণে তার বাসভবনে এফবিআইকে অভিযানও চালাতে হয়েছে।

সাবেক, বর্তমান দুই প্রেসিডেন্টের গোপনীয় নথি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার মন্ত্রণালয় দুই বিশেষ কাউন্সেলকে নিয়োগ দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে এক প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষে অন্য প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার মধ্যবর্তী সময়ে বিদায়ী প্রশাসনের কাছে থাকা যাবতীয় নথি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আর্কাইভের আইনি দায়িত্বে চলে যাওয়ার কথা।

উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা জানা থাকা সত্ত্বেও গোপন নথি বা জিনিস সরিয়ে ফেলা বা নিজের কাছে রেখে দেওয়া বেআইনি। গোপন জিনিসপত্র ঠিকমত সুরক্ষিত রাখতে না পারলে, তা ভুল হাতে পড়লে তা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

পেন্সের বাড়ি থেকে গোপন নথি উদ্ধারের ঘটনা বাইডনকে রাজনৈতিকভাবে খানিকটা স্বস্তি দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

ট্রাম্পের বাড়ি থেকে গোপন নথি উদ্ধারের ঘটনায় কড়া সমালোচনা করেছিলেন বাইডেন, পরে যখন তার বাড়ি, গ্যারেজ আর কার্যালয়েই গোপন নথি মেলে তখন তা ডেমোক্র্যাট পার্টির জন্যও বড় ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।

গোপন নথি উদ্ধারের ঘটনা ট্রাম্প এবং বাইডেন উভয়ের জন্যই বড় ধরনের রাজনৈতিক দায় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, তারা দুজনই ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বাইডেনের কট্টর সমালোচক ও ট্রাম্পের মিত্র রিপাবলিকান সেনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, সাবেক, বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট কেউই ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেছেন বলে মনে করেন না তিনি।

“স্পষ্টতই এটা একটা সমস্যা। সম্ভবত আমরা নথিপত্র বেশি বেশি গোপনীয়তার কাতারে শ্রেণিবদ্ধ করছি, এটাও সমস্যার অংশ হতে পারে। রিপাবলিকানদের জন্য যেটা রাজনৈতিক সমস্যা ছিল, তা এখন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে,” বলেছেন গ্রাহাম।

রয়টার্স জানিয়েছে, পেন্সের বাড়িতে গোপন নথি মেলার খবর প্রথম জানায় সিএনএন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ