মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

চারদিনের রাজশাহী অভিযাত্রা দূর-দূরান্তের বিএনপি নেতা-কর্মীদের ॥ মাঠেই রাতযাপন

জনসমাগম সীমিত করতে অন্তহীন চেষ্টা সরকারি মহলের

রাজশাহী ব্যুরো: আগামীকাল শনিবার বিভাগীয় গণসমাবেশ। আর বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে পরিবহন বন্ধের কর্মসূচি। ফলে বুধবার রাত থেকেই চারদিনের রাজশাহী অভিযাত্রা শুরু হয়েছে দূর-দূরান্তের বিএনপি নেতা-কর্মীদের। আর মাঠেই দিনযাপন করতে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে জনসমাগম সীমিত করতে অন্তহীন চেষ্টা চলছে সরকারি মহলে।

গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশ উপলক্ষে নেতাকর্মীদের জমায়েত শুরু হয়েছে। প্রশাসনের বাধায় শনিবারের আগে সমাবেশস্থল মাদ্রাসা মাঠে ঢুকতে পারবেন না বিএনপি নেতাকর্মীরা। যদিও বুধবার সন্ধ্যা থেকেই সমাবেশস্থলের পাশে ঈদগাহ মাঠে বিএনপি নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেছেন। কিন্তু তাদের মাদ্রাসা মাঠের ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। মাঠের দক্ষিণ পাশে ঈদগাহ মাঠ এবং রাস্তায় অবস্থান করছেন নেতাকর্মীরা। মাদ্রাসা মাঠে এই সমাবেশ হওয়ার কথা থাকলেও পাশের ঈদগাহ মাঠে তাঁবু টাঙিয়ে নেতাকর্মীরা জমা হতে শুরু করেছেন। বুধবার রাত থেকেই শত শত নেতাকর্মী এই মাঠে তাঁবুতে অবস্থান করছেন। মাঠে রান্নাবান্না চলছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে জমায়েত বাড়তে শুরু করে। ছোট ছোট আকারে জমায়েত হয়ে নেতাকর্মীরা স্লোগান দিচ্ছেন। 

বগুড়া সারিয়াকান্দি থেকে আশা আমিনুল ইসলাম নামের এক কর্মী জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাস ধর্মঘটের কারণে তারা বুধবার সকালেই বাসে করে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা দেন এবং বিকেলের মধ্যে এসে মাদ্রাসা মাঠের পাশে ঈদগাহ মাঠে অবস্থান নেন। এরপর রাতে তাঁবুতে অবস্থান করেন। মাঠেই তাদের জন্য রান্নার ব্যবস্থা করা হয় এবং সেখানেই তারা খেয়েদেয়ে অবস্থান করছেন। আগামী শনিবার সমাবেশ শেষ হওয়া পর্যন্ত তারা মাঠে অবস্থান করবেন। পাবনা থেকে আসা হযরত আলী নামের এক কর্মী বলেন, “আমরা বুধবার সন্ধ্যায় এসে রাজশাহীতে পৌঁছেছি এবং মাঠে তাঁবুতে অবস্থান করছি। সমাবেশ সফল করে বাসায় ফিরবো।”

জনসমাগম সীমিত করতে

রাজধানী ঢাকার আগে শেষ বিভাগীয় গণসমাবেশ হচ্ছে রাজশাহীতে। এই সমাবেশে জনসমাগম সীমিত করতে অন্তহীন চেষ্টা চলছে সরকারি মহলে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজশাহী বিভাগজুড়ে যাত্রী পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে। বিএনপি’র অভিযোগ, একই সঙ্গে ‘গায়েবি’ মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে নেতা-কর্মীদের। নগরীর বাসাবাড়ি ও মেসগুলোতে ‘বহিরাগত’ না রাখতে বলছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন। আবাসিক হোটেলগুলোও আগাম বুকিং নিচ্ছে না। নগরীর প্রবেশমুখে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং কোনো মিছিল নিয়ে শহরে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, এগুলো রুটিন কাজ। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় এবং বহিরাগতদের নাশকতা ঠেকাতে এসব ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে।

পরিবহন ধর্মঘটে দুর্ভোগে যাত্রীরা : কথিত বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ১০ দফা দাবি পূরণ না হওয়ায় রাজশাহীতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজশাহী থেকে কোনো রুটে বাস ছেড়ে যায়নি। বাইরের কোনো বাসও রাজশাহীতে প্রবেশ করেনি। ঢাকাগামী কোচগুলোও সকাল থেকে বন্ধ থাকে। ধর্মঘটের কারণে বাস বন্ধ থাকায় সকাল থেকে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। বাস না চলায় অটোরিকশা বা ছোট বাহনে মানুষ গন্তব্যে যাচ্ছেন। এজন্য তাদের বাড়তি ভাড়াও গুনতে হচ্ছে। এছাড়া চাপ বেড়েছে ট্রেনে। সকাল থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে মহানগরীর শিরোইল, ভদ্রা ও রেলগেট বাস টার্মিনালে আসেন যাত্রীরা। কিন্তু বাস না পেয়ে কেউ বিকল্প যানবাহন কেউবা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। সিএনজি, হিউম্যান হলার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন বিকল্প যানবাহনে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যাত্রীরা জরুরি প্রয়োজনে নিজ গন্তব্যে রওয়ানা দিচ্ছেন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ