কবিতা
আমরা-সকল দেশের শিশু যাব
ফররুখ আহমদ
আমরা- সকল দেশের শিশু যাব
নবীর মদিনায়!
তোরা- সঙ্গে যাবি আয়॥
আমার- নবীর মদীনাতে
খোদার রহম দিনে রাতে,
সবাই সেথা ভালোবেসে
ভালোবাসা পায়॥
সেথা নবীর পথে চলে সবাই
পায় যে দ্বীনের আলো,
নবীর মুহব্বতে ডুবে
সবাই বাসে ভালো॥
সেথা- রহমতে আলম
সেথা সৃষ্টি নিরুপম
সেথা ইনসানিয়াৎ পূর্ণ হলো
নবীর অছিলায়॥
শরৎ-পরী
রফিক রাইচ
শরৎ-পরীর খোঁপায় গোঁজা সাদা শিউলি ফুল যে
সবুজ ঘাসের ডগায় দোলে মুক্তা শিশির দুল যে।
পুকুর ডোবায় পদ্ম ফোটে নদীর পাড়ে কাশফুল
রূপ ঝলমল চাঁদের আলোয় ঘোমটা টানে বাঁশফুল।
আকাশটা হয় স্বচ্ছ ভীষণ বুকটা ভরা নীল
নীলের মাঝে সাদা মেঘে হাসে রে খিল খিল।
নেই তো কোথাও ঝড় বৃষ্টি, ভ্যাপসা গরম কাদা
এই আরামে শহর গ্রামে তাই কাজে নাই বাধা।
আমাদের গ্রাম
শামীম শাহাবুদ্দীন
ক্ষণে ক্ষণে ভেসে আসে
দোয়েলের শিস
গ্রাম ছাড়া পাবে না তো
এমন জিনিস।
কোকিলেরা কুহু কুহু
ডাকে মিটে সুরে
মন-প্রাণ ভরে যাবে
গ্রামখানি ঘুরে।
যতোদূর চোখ যায়
সবুজের মাঠ
গাছ গাছালিতে ভরা
পুরো তল্লাট।
কোনোখানে এ গ্রামের
জুড়ি মেলা ভার
সারাগ্রাম মিলে যেনো
এক সংসার।
বিশ্বটাকে গড়বি
শেখ বিপ্লব হোসেন
কুসুমকলি আয় সকলেই
শোনরে দিয়ে মন,
সত্য কথা বলবি সদা
হোক-না জ্বালাতন।
গুরুজনকে করবি সালাম
স্নেহ ছোটজনকে,
মন্দলোকের গন্ধ থেকে
রাখবি সজীব মনকে।
হাসিখুশি থাকবি সদা
দুঃখটাকে ভুলে,
করবি যতন বাবা-মায়ের
রাখবি বুকে তুলে।
পড়তে হবে আকাশ, নদী
ঝর্না-পাহাড়, বিশ্ব,
চাঁদ-সুরুজ, গ্রহতারা
আছে যতো দৃশ্য।
বাধার পাহাড় পাড়ি দিয়ে
বিশ্বটাকে গড়বি,
শান্ত-শীতল রাখতে সমাজ
ন্যায়ের পথেই লড়বি।
ফুটলো সাদা কাশ
সাইফুল্লাহ ইবনে ইব্রাহিম
ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে
ফুটলো সাদা কাশ,
ছুটছে মানুষ কাশবনে তাই
মেটায় মনের আশ।
কাশের সারি হাওয়ায় দোলে
মনে লাগে সুখ,
বিষণœতা যায় কেটে যায়
হেসে ওঠে মুখ।
নবীর দরদ
ইউনুছ আলী
শুনলে তুমি অবাক হবে
রাসুল এলেন যে সময়,
মন্দ কাজের চাপটা ছিল
পুরো আরব দেশময়।
মানুষ ছিল ভীষণ খারাপ
এবং পুরাই অশান্ত,
নবী বলেন, ‘বন্ধুরা সব-
এবার তোরা হ শান্ত!'
বহু মানুষ তাঁর আদেশে
বদলে গেল পলকে,
নিখিল জাহান ফর্সা হলো
দয়াল নবীর ঝলকে।
নবীর বিধান মানতে হবে
বাঁচতে হলে পাপ থেকে,
কত দরদ নবীর ছিলো-
পারবে ওটা মাপতে কে?
আঁকতে পারি
আমীরুল ইসলাম ফুআদ
আঁকতে পারি ফুলের ছবি
আঁকতে পারি গাছ,
আঁকতে পারি নদী- নালা
আঁকতে পারি মাছ।
আঁকতে পারি ডোবা পুকুর
আঁকতে পারি হাঁস,
আঁকতে পারি কাশফুলও যে
আঁকতে পারি ঘাস।
আঁকতে পারি ভোরের ছবি
আঁকতে পারি রাত,
আঁকতে পারি মায়ের আঁচল
আঁকতে পারি হাত।
আঁকতে পারি সবুজ মাঠও
আঁকতে পারি ধান,
আঁকতে পারি মিষ্টিমাখা
ডাহুক সুরের গান।
মায়ের মতো দেশ
আবদুল লতিফ
এদেশ আমার মায়ের মতো
মায়া ভরা মুখ
আর কোথাও পাই না খুঁজে
তারচে বেশি সুখ।
বুক জুড়ে তার হাজার নদী
সবুজ শ্যামল মাঠ
তারই মাঝে পাই যে খুঁজে
জীবন চলার পাঠ।
এই বাংলার আকাশ বাতাস
মাটি নদীর জল
আহার জোগায় তৃষ্ণা মেটায়
বাড়ায় মনের বল।
ভালোবাসি এই বাংলার
মাটি মানুষ ভাষা,
এই বাংলায় কাটিয়ে জীবন
মরার করি আশা।
খোকার পোকার ভয়
বিজন বেপারী
খোকা বাবু খুব যে কাবু
পোকায় বড় ভয়,
তবু খোকার বুকে আশা
ভয় করবে জয়।
তেলাপোকার ভয়ে খোকার
পা পড়ে না নিচে,
গুড় গুড়িয়ে ফোঁকড় গলে
আসে পোকা মিছে।
দিনের বেলা পোকার ভয়ে
মশারিটা ঘরে,
কেউ যদি কয় পোকার কথা
পালায় পোকার ডরে।
খোকার দেখা আর পাবে না
ঢোকে এমন কোনে,
যতই বলো গ্যাছে পোকা
সেকেন্ড মিনিট গোণে।
রাতের আকাশ
মইনুল ইসলাম মুইন
রাতের আকাশ নিকষ কালো,
দেখতে লাগে অনেক ভালো,
যখন দেখি তারাগুলো,
নিঝুম রাতে দিচ্ছে আলো।
মিটিমিটি তারাবাতি,
দিচ্ছে আলো সারা রাতি,
নাবিক চলে তার ইশারায়,
পথহারা লোক পথ খুঁজে পায়।
কে দিলো এই তারার মেলা?
আর কেহ নয়, আল্লাহতা'য়ালা।
ছন্দ
শেখ শান্ত বিন আব্দুর রাজ্জাক
ছন্দ বেজায় গন্ধ ছড়ায়
দোল দিয়ে যায় দোল,
ছন্দসুরে কোলের শিশুর
বোল ফুটে যায় বোল ।
বৃষ্টি পড়ে ছন্দতালে
দীঘির জলে টিনের চালে
টুপ্ টুপ্ টুপ্ ঝনঝনাঝন।
ছন্দে বাজে বাঁশের বাঁশি
ছন্দে কাশে বুড়ি মাসি
খনখনাখন খন ।
ছন্দে ময়ূর পেখম তোলে
সাপ আর বেজি দ্বন্দ্ব ভোলে
বদ্ধঘরের দুয়োর খোলে
ছন্দপরশ পেলে ।
আহা! কীযে লাগে ভালো
জ্বলে ওঠে খুশির আলো
দূর হয়ে যায় মনের কালো
ছন্দ ভেসে এলে ।