স্থায়ী হলো না শেয়ারবাজারের উত্থান
স্টাফ রিপোর্টার: বড় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বৈঠক ঘিরে দুদিন শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু গতকাল বুধবার শেয়ারবাজারে আবারও বড় দরপতন হয়েছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, বিনিয়োগকারীদের আতঙ্ক এখনও কাটেনি। এ ছাড়া গত দুই দিন যারা শেয়ার কিনেছিলেন তারা হয়তো কিছুটা লাভ পেয়েই শেয়ার ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ তারা আস্থা রাখতে পারেননি। এ জন্য ব্যাপক সেল প্রেসারের কারণে ট্রানজেকশন মোটামুটি হলেও ব্যাপক দর পতন হয়েছে।
গতকাল বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। পাশাপাশি সবকয়টি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর আগে ঈদের পর শেয়ারবাজারে টানা নয় কার্যদিবস দরপতন হলে গত সোমবার ৩০ জন বড় বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বৈঠক করে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন। বৈঠকে বিএসইসির আহ্বানে সাড়া দিয়ে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়ানোর আশ্বাস দেন বড় বিনিয়োগকারীরা। একই সঙ্গে বড় বিনিয়োগকারীরা মার্কেট মেকারের ভূমিকা পালন করবেন বলে কথা দেন। বিএসইসি বড় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে এমন খবরে টানা নয় কার্যদিবস দরপতনের পর সোমবার শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। বৈঠকের পরের দিন মঙ্গলবারও ঊর্ধ্বমুখী থাকে বাজার।
এ পরিস্থিতিতে বুধবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বড় হতে থাকে দরপতনের তালিকা। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে মাত্র ১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে পেয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৩৮টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বড় পতন হয়েছে অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২৭ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ১৬২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৩১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭৭৮ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৮৩৮ কোটি ৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৫৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে কেডিএস এক্সসরিজের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩০ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মতিন স্পিনিংয়ের ২৭ কোটি ৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ২৬ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্কয়ার টেক্সটাই, কাট্টালী টেক্সটাইল, তিতাস গ্যাস, বেক্সিমকো ফার্মা, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৭০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৪৪ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ২৭৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৯টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।