শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

কাগজের মিল বন্ধের পাঁয়তারা

আমদানিকারক চক্রের আড়ালে একটি বিশেষ গোষ্ঠী বাংলাদেশের সকল কাগজের মিল বন্ধের পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারকে সম্প্রতি লেখা বাংলাদেশ পেপার মিলস অ্যাসোসিয়েশন- বিপিএমএর চিঠির তথ্য উল্লেখ করে গতকাল কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গড়ে তোলা কাগজের মিলগুলো নিজেদের উৎপাদিত কাগজ বিক্রি করতে না পেরে নিয়মিত লোকসান দিতে বাধ্য হচ্ছে। বিক্রি করতে না পারার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বিপিএমএ জানিয়েছে, দেশ কাগজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও বিভিন্ন অজুহাতে বিদেশ থেকে কাগজ আমদানি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমদানিকারকরা সরকারের দেয়া বন্ডের সুবিধার অপব্যবহার করছে। এর ফলে বিপুল পরিমাণ বিদেশি কাগজ দেশে ঢুকছে এবং খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এভাবে বিদেশি কাগজ বিক্রি হওয়ায় দেশে উৎপাদিত কাগজ বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে লোকসানে পড়ছেন দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তা তথা মিল মালিকরা।

এভাবে চলতে থাকলে দেশের সকল মিল-কারখানাই বন্ধ হয়ে যাবে। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সরকারকে লেখা এক চিঠিতে বিপিএমএ বিদেশি তথা আমদানিকৃত কাগজের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের দাবি জানিয়েছে। কোনো চক্রই যাতে অবৈধভাবে সরকারের দেয়া বন্ডের বিশেষ সুবিধা কাজে লাগিয়ে কম দামে কাগজ আমদানি না করতে পারে এবং খোলা বাজারে সে কাগজ বিক্রি করতে না পারেÑ সে ব্যাপারেও কঠোর নজরদারি করার দাবি জানিয়েছে বিএমপিএ। সংস্থাটি বলেছে, এখনই ব্যবস্থা না নেয়া হলে দেশীয় কাগজকলগুলোকে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। পরিণতিতে ধ্বংস হয়ে যাবে কাগজের সকল কারখানা।   

বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশীয় কাগজ কল বিরোধী ষড়যন্ত্র এরই মধ্যে মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এবং বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই সরকারের উচিত এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়ে ওঠা। না হলে এখনও কোনোভাবে টিকে থাকা ২৭টি কাগজ কলও যে কোনো সময় বন্ধ হয়ে যাবেÑ যেমনটি বন্ধ হয়েছে ৭৯টির বেশি কল। 

প্রকাশিত রিপোর্টগুলোতে জানানো হয়েছে, বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলেই নিকট অতীতের বিভিন্ন সময়ে কলগুলোর ধ্বংসাত্মক পরিণতি এড়ানো সম্ভব হয়নি। আমরা মনে করি, বর্তমান পর্যায়ে সরকারের উচিত বিদেশ থেকে কাগজ আমদানি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা এবং বন্ডের অপব্যবহার বন্ধ করার পাশাপাশি এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, যাতে খোলা বাজারে তো বটেই, বিশেষ ব্যবস্থায়ও দেশের ভেতরে কারো পক্ষে কাগজ কেনা সম্ভব না হয়। আমরা চাই, দেশীয় কাগজ শিল্পকে লাভজনকভাবে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে সকল ব্যবস্থা নেয়া হোক। 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ