সবচেয়ে কম পিই রেশিও ব্যাংকখাতে বেশি জীবন বীমায়
স্টাফ রিপোর্টার: শেয়ারবাজারে সব থেকে কম সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই) রয়েছে ব্যাংক খাতের। বর্তমানে এ খাতের পিই রয়েছে ৭ দশমিক ৮০ পয়েন্টে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭ দশমিক ৬০ পয়েন্ট। অপরদিকে, সব থেকে বেশি পিই রয়েছে জীবন বিমা খাতের। বর্তমানে এ খাতের পিই দাঁড়িয়েছে ৭০ দশমিক ২০ পয়েন্টে। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ৬৪ দশমিক ৮০ পয়েন্ট।
গেলো সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল দেশের শেয়ারবাজার। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই) দুই সপ্তাহ পর ১৪-এর ওপরে উঠে এলো। এর আগে শেয়ারবাজার টানা দরপতনের মধ্যে পড়ে ভালো-মন্দ সবধরনের কোম্পানির শেয়ার দাম বেশ কমে যায়। দাম কমে অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম যৌক্তিক মূল্যের নিচে চলে যায়। যার ফলস্বরূপ সার্বিক বাজারের পিই কমতে কমতে ১৩-এর কাছাকাছি চলে আসে। তবে, অর্থমন্ত্রী ও পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নানামুখী পদক্ষেপের কারণে বাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গেল সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় বেড়েছে পিই। তবে এরপরও সার্বিক বাজার এখনো বিনিয়োগের জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বড় দরপতনের কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম যৌক্তিক মূল্যের নিচে চলে গেছে। এ বাজার থেকে ভালো কোম্পানি বাছাই করে বিনিয়োগ করতে পারলে ভালো মুনাফা পাওয়া সম্ভব।
শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ ঝুঁকি নির্ণয় করা হয় মূল্য আয় অনুপাত দিয়ে। সাধারণত ১০-১৫ পিইকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি মুক্ত ধরা হয়। আর কোন কোম্পানির পিই ১০-এর নিচে চলে গেলে,
ওই কোম্পানির শেয়ার দাম অবমূল্যায়িত বা বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ ধরা হয়। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত অনেক আগেই ১৫-এর নিচে নেমেছে। টানা দরপতনের মধ্যে পড়ে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে তা আরও কমে ১৩ দশমিক ৭৪ পয়েন্টে নেমে যায়। গেলো সপ্তাহজুড়ে বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় এখন পিই কিছুটা বেড়ে ১৪ দশমিক ১২ পয়েন্ট উঠে এসেছে।
সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত বাড়লেও এখনো চার খাতের পিই সার্বিক বাজার পিইর নিচে রয়েছে। এ চার খাতের মধ্যে রয়েছে- ব্যাংক, ওষুধ, বিবিধ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে এ চার খাতের পিই কিছুটা বেড়েছে। আগের মতো সব থেকে কম পিই রয়েছে ব্যাংক খাতের। বর্তমানে এ খাতের পিই রয়েছে ৭ দশমিক ৮০ পয়েন্টে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭ দশমিক ৬০ পয়েন্ট। ১১ দশমিক ৬০ পিই নিয়ে এর পরের স্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাত। এক সপ্তাহ আগে এ খাতের পিই ছিল ১১ দশমিক ৪০ পয়েন্ট। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে এ খাতের পিই বেড়েছে দশমিক ২০ পয়েন্ট। ব্যাংক এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মতো সপ্তাহের ব্যবধানে বিবিধ খাতের পিইও বেড়েছে। ১২ দশমিক ১০ পিই নিয়ে সর্বনিম্ন পিইর তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে খাতটি। এক সপ্তাহ আগে এ খাতের পিই ছিল ১১ দশমিক ৯০ পয়েন্ট। সার্বিক বাজারের তুলনায় কম পিই থাকা আর এক খাত ওষুধের পিই ১৩ দশমিক ৭০ পয়েন্ট, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৩ দশমিক ৪০ পয়েন্ট।
অপরদিকে, সব থেকে বেশি পিই রয়েছে জীবন বিমা খাতের। বর্তমানে এ খাতের পিই দাঁড়িয়েছে ৭০ দশমিক ২০ পয়েন্টে। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ৬৪ দশমিক ৮০ পয়েন্ট। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে এ খাতের পিই বেড়েছে ৫ দশমিক ৪০ পয়েন্ট। সর্বোচ্চ পিইর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চামড়া খাত। এ খাতের পিই দাঁড়িয়েছে ৫৩ দশমিক ৭০ পয়েন্ট, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৫২ দশমিক ৩০ পয়েন্টে। ৩০ দশমিক ৩০ পয়েন্ট নিয়ে এ তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিরামিক খাত। এক সপ্তাহ আগে এ খাতের পিই ছিল ২৮ দশমিক ১০ পয়েন্ট। এছাড়া বাকি খাতগুলোর মধ্যে সাধারণ বিমা খাতের পিই ১৪ দশমিক ৪০ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ১৫ দশমিক ৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রকৌশল খাতের পিই ১৯ দশমিক ৪০ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ১৯ দশমিক ৯০ পয়েন্ট হয়েছে। সিমেন্ট খাতের পিই ২৪ দশমিক ৯০ পয়েন্ট থেকে বেড়ে হয়েছে ২৫ দশমিক ৩০ পয়েন্টে এবং আইটি খাতের পিই ২৫ দশমিক ৪০ পয়েন্টে থেকে বেড়ে ২৭ দশমিক ৫০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাকি খাতগুলোর মধ্যে সেবা ও আবাসন খাতের পিই ১৬ দশমিক ১০ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ১৭ দশমিক ৪০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং খাতের পিই ২২ দশমিক ৩০ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ২৩ দশকি ৪০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর খাদ্য খাতের পিই ২৪ পয়েন্ট থেকে বেড়ে ২৪ দশমিক ৯০ পয়েন্ট হয়েছে।