বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

৩২ জেলায় নির্ধারিত সভা-সমাবেশ পুনর্র্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার : করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩২ জেলায় দলের নির্ধারিত সভা-সমাবেশ না করে তারিখ পুনর্র্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, আমরা বলেছি- যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সেই বিধিনিষেধ অযৌক্তিক ও অকার্যকর। কিন্তু তারপরও জনস্বার্থ এবং প্রাসঙ্গিক সবকিছু বিবেচনা করে আমাদের এই সমাবেশগুলোর তারিখ পুনর্র্নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিএনপি ও অঙ্গ দলসমূহের সব কেন্দ্রীয়, মহানগর ও জেলার নেতাদেরকে সভা-সমাবেশের পরবর্তী তারিখ জানিয়ে দেব।  সভা-সমাবেশ করার জন্য তাদেরকে প্রস্তুত থাকার আহবান জানাচ্ছি। তবে পুনর্র্নির্ধারিত তারিখ কবে হবে তা জানানো হয়নি সাংবাদিক সম্মেলনে।
সাংবাদিক সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
সভা-সমাবেশ আপনারা পুনর্নির্ধারণ অর্থাৎ স্থগিত করলেন বলা যায় কী প্রশ্ন করা হলে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা বলেছি যে, আমরা তারিখটা পুনর্নির্ধারণ করেছি। আমরা স্থগিত বলিনি। আপনি কি বুঝেন সেটা আপনার ব্যাপার। আমরা যেটা বলার সেটা বলেছি।
সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার থেকে ১১টি ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। তাতে উন্মুক্ত স্থানে যে কোনো সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার অনুমতির দাবিতে দ্বিতীয় ধাপে দেশের ৪০ জেলায় গত ৮ জানুয়ারি থেকে পর্যায়ক্রমে সমাবেশের কর্মসূচি ছিল বিএনপির। ইতিমধ্যে ৮টি জেলায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে গত ২২ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা পর্যায়ের প্রথম ধাপে ২৩ জেলায় সমাবেশ করে বিএনপি। গত ১৩ নভেম্বর থেকে  লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সকাল ১১টায় গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এই সাংবাদিক সম্মেলন ডাকা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম খান বলেন, সিটি করপোরেশ নির্বাচন, স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হতে পারে, হাটবাজার, দোকা-পাট, স্কুল-কলেজ সব খোলা থাকতে পারে। সেখানে বিশেষষজ্ঞরা বলছেন যে, উন্মুক্ত স্থানে সংক্রমনের সম্ভাবনা কম, বদ্ধ স্থানে বেশি। সেখানে সরকার বদ্ধ স্থানে অনুমতি দেয়, উন্মুক্ত স্থানে দেয় না।
তিনি বলেন, মূল উদ্দেশ্যটা হলো আমাদের আন্দোলনের যে কর্মসূচিটা চলছিলো সেটাকে তারা প্রথমে বাধা দেয়ার চেষ্টা করেছে, নানাভাবে শক্তিপ্রয়োগ করে, ১৪৪ ধারা জারি করে। আপনারা সাংবাদিকরা দেখেছেন সব কিছু। আমরা ১৫ দিন আগে চেয়েছি জায়গা, দুইদিন আগে অনুমতি দিয়েছে। পরেরদিন হঠাৎ করে তাদের কোন এক অঙ্গসংগঠন বা তাদের দল একটা চিঠি দিলো বা চিঠিও দেয়নি, ফেইসবুকে দিয়েছে। সরকার ১৪৪ ধারা জারি করে দিয়েছে। অর্থাৎ গণতান্ত্রিক হরণের যেসব কাজ সবই করছে তারা। অগণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে এটাই তো স্বাভাবিক।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, একদিকে ১১ দফা একটা সরকারি নির্দেশনা আছে। অপরদিকে সিটি করপোরেশন নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আরো আরো অনেক কাজ উন্মুক্ত আছে। সরকারের বিধিনিষেধের সাথে নারায়নগঞ্জের সিটি করপোরেশন নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠান সাংঘর্ষিক। এই মুহূর্ত পর্যন্ত সরকার নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেনি যে, সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে এটা স্থগিত করার। সুতরাং এটা যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই ব্যাপারে সন্দেহ থাকার আর কোনো কারণ নাই।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, ডয়েচে ভ্যালের একটা সার্ভে হয়েছে।  সেই সার্ভেতে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে, এটা কী সরকার রাজনৈতিক কর্মকান্ডকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য করেছে নাকী স্বাস্থ্য বিধি মানার জন্য করেছে। সেই সার্ভেতে ৮৮% মানুষ বলেছে যে, রাজনৈতিক কর্মকান্ড বন্ধ করার জন্য করা হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধির পক্ষে এই কাজটি করা হয়নি। এই সার্ভেটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ