বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

দুদকের আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি

স্টাফ রিপোর্টার: অপরাধে জড়িত সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে কি-না এবং এ জন্য নতুন করে সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত ওই ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে দুদকের আবেদন পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তবে পর্যবেক্ষণে কী থাকছে তা জানার জন্য রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
রায় ঘোষণার নির্ধারিত দিনে গত সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, এ কে এম ফজলুল হক। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। পৃথক রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার আরশাদুর রউফ ও মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এর আগে সুনির্দিষ্ট বিধি বা আইন প্রণয়ন না করা পর্যন্ত দুর্নীতি মামলার আসামী বা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বিষয়ে দুদক নয়, সিদ্ধান্ত নেবেন বিশেষ জজ আদালত- হাইকোর্টের এমন অভিমত দিয়ে দেয়া রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে ৫টি আবেদন করেছিল। অপরাধে জড়িত সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ওপর দুদক নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে কি-না এবং এ জন্য নতুন করে আইনের প্রয়োজন আছে কি-না সে প্রশ্নে গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের একই বেঞ্চ শুনানি শেষে রায়ের জন্য ২৭ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করেন। তারই ধারাবাহিতায় গতকাল এই রায় এলো।
নরসিংদীর ব্যবসায়ী আতাউর রহমান ওরফে সুইডেন আতাউর রহমান, জাহাজ ব্যবসায়ী গাজী বেলায়েত হোসেনসহ বেশ কয়েকজনকে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে বিরত রাখতে ব্যবস্থা নিতে ইমিগ্রেশন পুলিশকে চিঠি দেয় দুদক। শুধুই এই দুইজন নয়, এর আগেও ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদসহ অনেক ব্যক্তিকে বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চিঠি দেয় দুদক। এই নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করে ওই দুই ব্যবসায়ী, এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাফসির মোহাম্মদ আউয়াল হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন। আর কোনোটিতে দিয়েছেন আদেশ। এসব রায় ও আদেশের বিরুদ্ধে দুদক আপিল বিভাগে আবেদন করে। এসব আবেদনের ওপর আপিল বিভাগে শুনানি হয়।
গত ৭ সেপ্টেম্বর অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন এবং দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান দুদকের পদক্ষেপের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে শুনানি করেন। তারা হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত বাতিলের পক্ষে মত দেন। অপরদিকে রিট আবেদনকারীপক্ষে অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও বিদেশ যেতে অনুমতি সংক্রান্ত হাইকোর্টের পৃথক তিনটি রায় ও দুটি আদেশের বিরুদ্ধে দুদকের করা পৃথক পাঁচটি লিভ টু আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। আপিল বিভাগ ২৭ সেপ্টেম্বর রায়ের জন্য তারিখ রেখেছেন। এর আগে দেশত্যাগে বিরত রাখার বৈধতা নিয়ে নরসিংদীর মো. আতাউর রহমানের করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ মার্চ হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ রায় দেন। রায়ে বলা হয়, এ বিষয়ে যতক্ষণ পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট আইন বা বিধি প্রণয়ন না হচ্ছে অনুসন্ধান ও তদন্ত পর্যায়ে কাউকে বিদেশ যেতে বিরত রাখতে হলে সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে অনুমতি নিতে হবে।
অন্যদিকে পাসপোর্ট জব্দ ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মো. আহসান হাবিব নামের এক ব্যক্তির করা রিটের ওপর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ১৪ মার্চ রায় দেন হাইকোর্টের অপর একটি দ্বৈত বেঞ্চ।
এই রায় অনুসারে অপরাধের অনুসন্ধান বা তদন্তকালে জরুরি পরিস্থিতিতে কোনো ব্যক্তিকে দেশত্যাগে বিরত রাখা ও পাসপোর্ট জব্দ করা হলে কমিশন বা তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পরে অনুমোদনের জন্য সিনিয়র স্পেশাল জজ বা স্পেশাল জজ আদালতে আবেদন করতে হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ