মুরগি ও ডিমের বাজার চড়া
সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢাকার বাজারে সব ধরনের মুরগি ও ডিম, ডাল, তেল, চিনি ও দেশি আদার দাম বেড়েছে।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, মুরগি ও ডিমের দামই বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।
বিক্রেতাদের ভাষ্য, যোগানের তুলনায় চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মুরগি ও ডিমের দাম বেড়েছে। কেউ কেউ মহামারীর কারণে বন্ধ থাকা রেস্তোরাঁগুলি লকডাউন শেষে খুলে দেওয়াকে বাড়তি চাহিদার কারণ হিসেবে দেখাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে।
প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা থেকে ১৫৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সোনালী মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা যায়।
এমনকি ঢাকার পার্শবর্তী টঙ্গী বাজারেও সোনালী মুরগী ২৬৫ থেকে ২৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে সেখানকার ক্রেতারা জানিয়েছেন।
লেয়ার মুরগি ২৪০ টাকা থেকে ২৬০ টাকা কেজি এবং দেশি মুরগি ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এক সপ্তাহে লেয়ার মুরগি কেজিতে ২০ টাকা এবং দেশি মুরগি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ৪০ টাকা এবং ডজন ১১৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহের তুলনায় প্রতিটি ডিমের দাম এক থেকে দেড় টাকা বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।
তেজগাঁওয়ের জিলানী মার্কেটের ইসলামী ট্রেডার্সের পাইকারি ডিম ব্যবসায়ী মো. ইসলাম বলেন, গত এক দুই সপ্তাহ ধরে ডিমের দাম বাড়ছে। গত এক সপ্তাহ আগে ১০০টি ডিম ৮২০ থেকে ৮৩০ টাকা ছিল, এই ডিমের দাম এখন ৮৮০ থেকে ৯০০ টাকা হয়েছে।
ডিমের দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, “একদিকে ফার্মে প্রোডাক্শন কম, অন্যদিকে শাক-সবজির কমে গেছে বলে ডিমের ওপর চাপও পড়েছে, যে কারণে দাম বেড়েছে।”
অন্যদিকে বাজারে ডাল, তেল, চিনি ও দেশি আদার দামও বেড়েছে; তবে সরু চাল ও আমদানি করা আদার দাম ‘সামান্য’ কমেছে বলে দোকানিরা জানিয়েছেন।
আমদানি করা ইন্ডিয়ান মোটা মসুর ডালের কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, দেশি ১১০ থেকে ১২০ টাকা, অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙ্গারু ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ডালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
তিন থেকে চার টাকা কেজিতে বেড়ে খোলা চিনি ৮০ টাকা এবং প্যাকেট ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দেশি আদা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা এবং চায়না ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়।
পাম অয়েল লুজ ১২২ থেকে ১২৬ টাকা ও সুপার ১২৫ থেকে ১৩২ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে সয়াবিন খোলা বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
আর বোতলজাত সয়াবিন লিটার ১৫০ টাকা এবং কোম্পানি ভেদে পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন ৬৬০ টাকা থেকে ৭১৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
রামপুরা বাজারের তাহের স্টোরের মালিক আবু তাহের বলেন, “গত কয়ের দিনের মধ্যে ডালের দামটা বেড়েছে, চিনিও বেড়েছে। তেলের দাম বেড়েছে শুনেছি, কিন্তু নতুন দামের তেল আমাদের এখানে এখনও আসেনি। কিন্তু আজকে আদা দেশিটা একটু দাম বেশি, তবে চায়নার দাম একটু কম আছে।”
তিনি বলেন, “সাধারণত দেশের বাজারে চায়না আদার চেয়ে দেশি আদার দাম কম থাকলেও এবার উল্টো হয়েছে। আমদানি বেশি বলে চায়না আদার দাম কম। কিন্তু দেশি আদা কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।”
ব্যবসায়ীরা জানান, সপ্তাহের ব্যবধানে সরু চাল মিনিকেট ও নাজিরশাইলের দাম কেজিতে এক থেকে দুই টাকা কমেছে। মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৫৮ থেকে ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে মোটা পাইজাম, লতা, স্বর্ণা চালের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।