শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ডেঙ্গু ঝুঁকিতে কুমিল্লা নগরী

রেজাউল করিম রসেল, কুমিল্লা অফিস: সম্প্রতি রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গুর উচ্চ সংক্রমণ দেখা দেয়ায় পাশরবর্তী জেলা হিসেবে কুমিল্লাকে ও ডেঙ্গুতে উচ্চ সংক্রমণ ঝুঁকিতে রেখেছে স্বাস্থ্যবিভাগ। চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত হওয়ায় করোনা সংক্রমনের পাশাপাশি ডেঙ্গু সংক্রমণকে ভয়াবহ উল্লেখ করে কুমিল্লা জেলা স্বাস্থ্যবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এপর্যন্ত জেলায় ৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নেয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাদের সবাই সুস্থ হয়েছেন। তাদের তিন জনই নগরীর। কুমিল্লাতে কোথাও ‘এডিস ইজিপ্টি’ মশার লার্ভা আছে কি না তা খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ও সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন বিভাগকে সমন্বিতভাবে কাজ করার কথাও বলা হয়েছে।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী ড. সফিকুল ইসলাম জানান, কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকা থেকে পানির নমুনা নিয়ে এতে এডিস মশার লার্ভা আছে কি না পরীক্ষা করা হয়েছে। শহরের বাইরের একটি জায়গা ছাড়া আর কোথাও তা পাওয়া যায়নি। যে জায়গায় পাওয়া গেছে সেখানেও খুব ভালো ভাবে মশক নিধক স্প্রে করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডেই মশা মারার ওষুধ প্রতিদিন ব্যবহার করা হচ্ছে। আগামী দুই মাস প্রতিরোধক প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ মোঃ আল-ইমরান ভুঁইয়া জানান, কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এডিস মশার লার্ভা আছে কি না পরীক্ষা করা হয়েছে। জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি গ্যারেজসহ দুই জায়গায় এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে এবং সেগুলো বিনষ্ট করা হয়েছে। আপাতত জাঙ্গালিয়া থেকে শুরু করে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড পর্যন্ত এলাকাটিতে এডিসের বিস্তার নিয়ে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু সংক্রমিত এলাকা রাজধানী ঢাকার খুব কাছাকাছি হওয়ায় যে কোন বাহনের মাধ্যমেই এডিস মশা কুমিল্লায় চলে আসতে পারে। আর  যেহেতু ঢাকার সাথে কুমিল্লার  যোগাযোগ খুবই ভালো সেক্ষেত্রে যে কোন সহজভাবেই এই মশা কুমিল্লায় হানা দিতে পারে। অন্যদিকে নোংরা পানিতে এডিসের বিস্তার নিয়ে খুব একটা চিন্তা না থাকলেও, স্বচ্ছ-পরিষ্কার জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গু বিস্তার নিয়েই যত চিন্তা। আর কুমিল্লা শহরে যেহেতু নির্মাণাধীন ভবনের সংখ্যা অত্যধিক সে কারণে এসব জায়গায় বৃষ্টির পানি জমে এডিস মশার আশ্রয় হতে পারে। এছাড়া ছাদ বাগানের টবে, এসি, ডাবের খোসা, চিপসের প্যাকেটের মত পানি ধরে রাখার যে কোন জিনিসে তিন দিনের বেশি জমা পানিতেই এডিস মশার বিস্তার হতে পারে। যে কারণে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নাই। সাধারণ মানুষই পারে ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে এডিস মশার বিস্তার ঠেকাতে। তবে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ এবং সিটি কর্পোরেশনের সমন্বয়ে কুমিল্লার বিভিন্ন জায়গা থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করে পর্যালোচনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার সৌমেন রায় জানান, এখন করোনার সংক্রমণ চলছে তার পাশাপাশি ডেঙ্গু সংক্রমিত হলে ফলাফল হবে ভয়াবহ। যেহেতু করোনা এবং ডেঙ্গু-দুই সক্রমণের চিকিৎসা বিপরীতমুখী সেকারণে একই সাথে এই দু’টির আক্রমণ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে চিকিৎসাও। আর কুমিল্লা ডেঙ্গু সংক্রমনের উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতার কোন বিকল্প নাই। 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ