বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

লাইসেন্স ছাড়াই চলছে খুলনার হাসপাতাল-ক্লিনিক

খুলনা অফিস : খুলনা মহানগরীতে অনিয়ম-বিশৃঙ্খলায় চলছে অধিকাংশই বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগণস্টিক সেন্টার। শুধু অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবেদন করে, আবার কোনো প্রতিষ্ঠান কোনো কিছু না করেই বহালতবিয়তে থাকছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে লাইসেন্সহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অনুমোদনহীন এসব হাসপাতালে চিকিৎসার নামে ব্যবসা, প্রতারণাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও পরবর্তীতে অদৃশ্যর কারণে আবারও পুনরায় চালু করেন। রমরমা ব্যবসার কারণে খুলনা শহর থেকে শুরু করে উপজেলাগুলোতেও এখন রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে।

খুলনা বিভাগ পরিচালক (স্বাস্থ্য) এর দপ্তরের পরিচালক ডা. জসিম উদ্দিন হাওলাদার বলেন, আমি অল্পকিছু দিন হলো এখানে যোগদান করেছি। কোভিড-১৯ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ আসলেই আমি নিজেই টিম নিয়ে নগরীতে অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগণস্টিক সেন্টারগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালাবো। তিনি বলেন, ক্লিনিক বা ডায়াগণস্টিক সেন্টার শুধু অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবদেন করেই কেউ কোন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো চালাতো পারবেন না। এটা আইনগত ভাবে অপরাধ। গত ১৬ জুলাই রাতে মহানগরীতে সুন্দরবন ক্লিনিক ও ডায়াগণস্টিক সেন্টারে অবৈধ গর্ভপাত, নবজাতক বিক্রির ও পাচার চেস্টার অপরাধে ক্লিনিক মালিকসহ ১০ জনকে আটক করেছিলো র‌্যাব-৬। প্রেসবিফিংয়ে র‌্যাব বলেছিলেন, মানব সেবার মত প্রশংসনীয় কাজে নিয়োজিত থেকে সুন্দরবন ক্লিনিক ব্যবসার আড়ালে অবৈধ বাচ্চা প্রসব, অবৈধ গর্ভপাত ও শিশু পাচারসহ বিভিন্ন ঘৃন্য কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। শুধু তাই নয় অবৈধ গর্ভপাত ও শিশু বিক্রির মতো নিকৃষ্ট কাজে রোগীদের উৎসাহিত করতো ক্লিনিকটির মালিক।

খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের সূত্র অনুযায়ী, সরকারি নীতিমালায় একটি ১০ শয্যার ক্লিনিক পরিচালনায় ৩ জন এমবিবিএস ডাক্তার, ৬ জন ডিপ্লোমা নার্স, ৬ জন আয়া এবং ৩ জন সুইপার নিয়োগের বিধান রয়েছে। কিন্তু ক্লিনিক পরিচালনায় সরকারি নীতিমালা বিভিন্ন অজুহাতে মানছেন না অনেক প্রভাবশালী ক্লিনিক মালিক।

অভিযোগ রয়েছে, কোন তদারকি না থাকায় বছরে একবার স্বাস্থ্য বিভাগের পরিদর্শনের সময়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পার পেয়ে যায় নীতিমালা তোয়াক্কা না করা অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশই। 

খুলনা বিভাগ পরিচালক (স্বাস্থ্য) অধিদপ্তরের সূত্র মতে, নগরীতে ক্লিনিক ও ডায়াগণস্টিক মিলে মোট সংখ্যা রয়েছে ২১২টি। এর মধ্যে অনলাইনের মাধ্যমে ২০২০-২১ সালের নবায়ন করেছিলো মাত্র ৬৩টি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে ক্লিনিক ও ডায়াগণস্টিকসেন্টারগুলো রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক এন্ড ডায়াগণস্টিক ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন (বিপিএইচসিডিওএ) এর সভাপতি ডা. গাজী মিজানুর রহমান বলেন, সরকারি নিয়ম নীতি অনুসারী নগরীতে প্রাইভেট হাসপাতাল ক্লিনিক এবং ডায়াগণস্টিকসেন্টারগুলো পরিচালিত হচ্ছে কি না সে বিষয়ে আমরা ২০২০ সালে সার্ভে করেছিলেন। ওই সময় নগরীর অনেক ক্লিনিক ও ডায়াগণস্টিকসেন্টারগুলো সরকারি নিয়ম তোয়াক্কা না করেই পরিচালনা করায় আমরা সেগুলো একটা তালিকা করেছিলাম। সেই তালিকাটা তৎকালীণ খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কাছে জমা দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নগরীতে প্রাইভেট ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগণস্টিনসেন্টাগুলোতে সঠিক মনিটরিং ও তদারকি না থাকায় অনেকেই অনিয়ম করেই পার পেয়ে যাচ্ছেন। শুধু মাত্র অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করেই কেউ কোন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান চালাতে পারেন না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ