শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

করোনার সঙ্গে ডেঙ্গু ভয়ংকর

স্টাফ রিপোর্টার : উদ্বেগ প্রকাশ করে নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ষাকালে অন্যান্য রোগের পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগী দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শহর এলাকায়। সরকারি হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ৮১ জন। জানুয়ারি থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত ১ হাজার ৬১ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। শুধু জুলাই মাসেই ৬৬৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

করোনা মহামারির মধ্যেই রাজধানীতে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। লকডাউনে স্থবির জনজীবনে মশক নিধনের পর্যাপ্ত ওষুধ না ছিটানোর কারণে ঘটছে এডিস মশার বিস্তার। পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। এ পরিস্থিতিতে জ্বরে আক্রান্তদের করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার মধ্যে ডেঙ্গু বেড়ে গেলে তা হবে ভয়ংকর। একসঙ্গে করোনা ও ডেঙ্গু চিকিৎসা দেয়া চ্যালেঞ্জ হবে।’ করোনা ভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে রোববারের স্বাস্থ্য বুলেটিনে তিনি এ কথা বলেন।

উদ্বেগ প্রকাশ করে নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ষাকালে অন্যান্য রোগের পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগী দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শহর এলাকায়। ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। মশা নিধনের কাজে যারা জড়িত, তারা যদি ঠিকভাবে কাজ না করে তাহলে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেয়া চ্যালেঞ্জ।’

তিনি বলেন, ‘এডিস মশা মূলত দিনের বেলায় কামড় দেয়। তাই দিনে ঘুমালেও মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে। যদি কারও জ্বর হয় তাহলে করোনা পরীক্ষার পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষাও করতে হবে। আর চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই রেজিস্টার্ড কোনো চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।’ তিনি প্রয়োজনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন বা স্বাস্থ্য বাতায়নে যোগাযোগ করে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেন।

সজাগ নগর কর্তৃপক্ষ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ঢাকায় এখন সারা বছর এডিস মশা পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণ হচ্ছে নগরায়ণ। যত বেশি নগরায়ণ হবে তত বেশি এডিস মশা বাড়বে।’

ডিএসসিসি জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, ‘এডিস নিয়ন্ত্রণে আমরা সর্বাত্মক পদক্ষেপ নিয়েছি। এপ্রিলের শুরু থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশিত সব জায়গায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। আমাদের লার্ভিসাইডিং (মশার লার্ভা ধ্বংস) ও অ্যাডাল্টিসাইডিং (পূর্ণবয়স্ক মশা ধ্বংস) নিয়ম অনুযায়ী করা হচ্ছে।’

ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘মেয়র মহোদয় আমাদের কাউন্সিলর, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও মশক বিভাগের সঙ্গে মিটিং করেছেন। তিনি তদারকি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বৃষ্টির পরিমাণ এখন বেশি বলে মশক নিধন কার্যক্রম আরও ভালোভাবে পরিচালনা করতে হবে। প্রয়োজন হলে যেসব বাসায় প্রজনন হচ্ছে, সেখানে গিয়ে অনুমতি নিয়ে লার্ভা ধ্বংস করতে হবে।’

ইমামদের সহযোগিতা প্রত্যাশা

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, ‘আমরা গত মাসেই ক্র্যাশ প্রোগ্রাম করেছি। ঈদের পর আরও একটা করব। ‘আমরা গত বছর যেসব বাড়িতে লার্ভা পেয়েছি, এপ্রিল থেকে তাদের মোবাইলে বার্তা দিয়েছি। সবাইকে সচেতন থাকার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া বেসরকারি, আধা সরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি। ২২ মে ১০টি অঞ্চলে রোড শো করে জনসচেতনতা তৈরি করা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর ঠিকানা নিয়ে তাদের বাড়ির চারপাশে লার্ভা ধ্বংসের কাজ করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। সেখানে আমরা বলেছি, মন্ত্রণালয় যেন মানুষকে সচেতন করতে মসজিদের ইমামদের যুক্ত করে। এ বিষয়ে ইমামদের প্রশিক্ষণ দিতে একটি শিডিউল করা আছে। তবে লকডাউনের কারণে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ