শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ঈদ লেনদেনে ক্রেতার উপচেপড়া ভিড় ব্যাংকগুলোতে টাকা তোলার হিড়িক

 

স্টাফ রিপোর্টার : ঈদুল আযহা উপলক্ষে দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বুধবার মধ্যরাত থেকে আটদিনের জন্য কঠোর লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় এ উৎসবকে কেন্দ্র করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকের ভিড় ও টাকা তোলার হিড়িক পড়েছে। ব্যাংকগুলোর প্রতিটি শাখায় দীর্ঘ লাইনে গ্রাহক দেখা গেছে। টাকা উত্তোলনের চাপে গ্রাহকদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিল ও দিলকুশা, দৈনিক বাংলা, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যাংকের শাখাগুলো ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

ব্যাংকগুলোতে সকাল থেকেই শাখাগুলোর ক্যাশ ও জমা কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন। পাশাপাশি বিভিন্ন চালানপত্র, ডিপোজিট, সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন সেবার বিল জমা দেওয়ার লাইনও লক্ষ্য করা গেছে। এদিকে গ্রাহকের করোনার স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করাও কর্মকর্তাদের পক্ষে দুরূহ হয়ে পড়েছে। দুপুরে মতিঝিল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসে গিয়ে দেখা যায় গ্রাহকের প্রচ- ভিড়। দীর্ঘ লাইনে টাকা উত্তোলনের জন্য গ্রাহকরা দাঁড়িয়ে আছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিঝিল সোনালী ব্যাংকের লোকাল অফিসের সিনিয়র অফিসার পারভেজ আনোয়ার বলেন, ঈদের আগে বিধিনিষেধ আজ থেকে শিথিল করা হয়েছে। অনেকে বাড়ি যাবে। আবার অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন বোনাস পরিশোধ করবে। সব মিলিয়ে গতকাল সকাল থেকেই গ্রাহকের ভিড়। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় সঞ্চয়পত্রের মুনাফার কাউন্টারে। ঈদ বাড়তি খরচ মেটাতে মুনাফা তুলতে এসেছেন গ্রাহকরা। তিনি জানান, গ্রাহকদের চাপে সেবা দিতে কর্মকর্তারা হিমশিম খাচ্ছেন। তারপরও যথাসম্ভব করোনার যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করে আমরা সেবা দিচ্ছি।

সোনালী ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়ানো আহমেদ তারেক নামের এক গ্রাহক বলেন, গত রোজায় বাড়ি যাইনি। এবারও অনিশ্চিত ছিল। কিন্তু বিধিনিষেধ শিথিল করেছে সরকার। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কেটেছি। বাড়ি যাব। ওইখানেই কোরবানি দেব। তাই টাকা তুলতে এসেছে। আজকে অনেক ভিড়। কিছু করার নেই। কারণ কোরবানির জন্য বাড়িতে টাকা পাঠাতে হবে।

অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায়ও সকাল থেকে গ্রাহকের ভিড়। টাকা উত্তোলনের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আল আমিন বলেন, আমাদের হোলসেল প্রতিষ্ঠান, ঈদের আগে কর্মীদের বেতন-বোনাস দিতে হবে। তাই টাকা তোলার জন্য এসেছি। অনেক ভিড়, এক ঘণ্টার বেশি সময় হলো লাইনে দাঁড়িয়েছি। ঈদের কারণে এত ভিড়, কত সময় লাগবে কে জানে।  

ঈদুল আযহার আগে চলমান বিধিনিষেধ শিথিল করেছে সরকার। এ সময় ব্যাংকের লেনদেন ও পরিচালনার নতুন সময়সূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে তিন দিন স্বাভাবিক নিয়মে চলবে ব্যাংক। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হবে।

নতুন এ নির্দেশনা অনুযায়ী, ঈদের আগে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালন করে ১৫, ১৮ ও ১৯ জুলাই (বৃহস্পতিবার, রোববার ও সোমবার) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হবে। লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে।

ঈদুল আযহার আগে তৈরি পোশাক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রফতানি বিল বিক্রয়ের এবং উক্ত শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বেতন-বোনাস ও অন্যান্য ভাতা পরিশোধের সুবিধার্থে ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত তফসিলি ব্যাংকের তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট শাখা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালন সাপেক্ষে ১৭ ও ২০ জুলাই (শনিবার ও মঙ্গলবার) সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। এ সময় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ব্যাংকে লেনদেন হবে। লেনদেন পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ