চট্টগ্রামে করোনায় ৩ জনের মৃত্যু নতুন শনাক্ত ৬০৩ জন
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিন মৃত ৩ জনের মধ্যে ২ জনই নগরের, ১ জন উপজেলার। এ সময় নতুন করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬০৩ জনের। নতুন শনাক্তদের মধ্যে ৪৩৬ জন নগরের এবং ১৬৭ জন উপজেলার বাসিন্দা। এ নিয়ে চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগী গিয়ে দাঁড়াল ৬৪ হাজার ২৯৯ জন। এদের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর ৪৯ হাজার ৭১৮ জন। আর বিভিন্ন উপজেলার ১৪ হাজার ৫৮১ জন।শনিবার (১০ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি ৯টি ল্যাব ও কক্সবাজারের ১টি ল্যাবে ১ হাজার ৯০৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৬০৩ জনের নমুনায় করোনা পজিটিভ আসে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে করোনা পজিটিভ আসে ৭১ জনের শরীরে। এদের মধ্যে ৪৫ জন নগরের এবং ২৬ জন চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে ৭৭১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে করোনার উপস্থিতি মিলে দিনের সর্বোচ্চ ২০৭ জনের দেহে। এদের মধ্যে নগরের ১৩০ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ৭৭ জন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ১৯৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৯ জনকে করোনার জীবাণু বাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে নগরের ৪৩ জন। বাকি ১৬ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ২২০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতে ৭৩ জনের দেহে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাওয়া যায়। যাদের মধ্যে ৪১ জন নগরের অধিবাসী, বাকি ৩২ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের রিজিওনাল টিবি রেফারেল ল্যাবরেটরিতে (আরটিআরএল) গত ২৪ ঘণ্টায় কারও নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। এছাড়া, নগরী ও উপজেলার বিভিন্ন ল্যাবে এন্টিজেন টেস্ট করানো হয় ৮৮টি নমুনা। তাতে করোনা পজিটিভ আসে ৩৪ জনের। এদের সবাই নগরের বাসিন্দা। নগরীর বেসরকারি করোনা পরীক্ষাগারের মধ্যে ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করানো হয়। তাতে ৫৯ জনের দেহে ভাইরাসের জীবাণু পাওয়া যায়। যাদের সবাই নগরের। শেভরণ ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরিতে ১৮৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৯ জন করোনা পজিটিভ রোগীর খোঁজ মিলে। যাদের ২২ জন নগরের এবং ৭ জন উপজেলার। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ২২ জন করোনা রোগীর শনাক্ত হয়। যাদের ১৯ জন নগরের, ৩ জন উপজেলার। গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল সেন্টার ল্যাবে ২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরের ৮ জন এবং উপজেলার ১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ইপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে ৪০ জনের দেহে করোনার জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায়। এদের মধ্যে ৩৫ জনই নগরের, বাকি ৫ জন বিভিন্ন উপজেলার। এদিন, কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের ১১টি নমুনা পরীক্ষা করা হলেও সেগুলোতে নেগেটিভ আসে।উপজেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত রোগী পাওয়া যায় মিরসরাইয়ে। সেখানে ৩৬ জনের দেহে ভাইরাসটির জীবাণু পাওয়া যায়। এছাড়া, রাউজানে ২৮ জন, সীতাকুন্ডে ২৬ জন, হাটহাজারী ও ফটিকছড়িতে ২০ জন করে, রাঙ্গুনিয়ায় ১৯ জন, বোয়ালখালীতে ১০ জন, সন্দ্বীপে ৪ জন, পটিয়ায় ২ জন এবং লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ায় ১ জন করে করোনার জীবাণু বাহক হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে শনিবার নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী ও স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট জাহানারা ফেরদৌসের নেতৃত্বে নগরীর নগরীর কাজীর দেউরী, জামালখান, গনি বেকারী, চকবাজার, বাদুরতলা, কাপাসগোলা, বহদ্দারহাট, নতুন চান্দগাঁও থানা, শুলকবহর ও কাতালগঞ্জ এলাকায় করোনাভাইরাস জনিত রোগের বিস্তার রোধে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করায় ১১টি মামলা রুজু পূর্বক ১১ ব্যক্তিকে ২ হাজার ১ শত টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানকালে ম্যজিস্ট্রেটগণ মাস্ক বিতরণ করেন এবং নগরবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা প্রদান করে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধকল্পে ও নগরবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষে চসিকের ভ্রাম্যমাণ আদালত অব্যাহত থাকবে। অভিযানে ম্যাজিস্ট্রেটগণকে সহায়তা করেন সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সদস্যবৃন্দ।