মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

বছরে একবারই এলপিজির মূল্য নির্ধারণের দাবি লোয়াবের

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) এলপিজির মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি বলে দাবি করেছে এলপিজি অপারেটস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (লোয়াব)। নির্ধারিত মূল্যে এলপিজি বিক্রি করলে ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়বে উল্লেখ করে মূল্য পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। পাশাপাশি অটোগ্যাসের মূল্য প্রতিমাসে পরিবর্তন না করে বছরে একবারই নির্ধারণেরও দাবি জানানো হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার হোটেল রূপসী বাংলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমন দাবি তোলে লোয়াব। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী। এ সময় বেক্সিমকো  

পেট্রোলিয়ামের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মুনতাসির আলম, পেট্রোম্যাক্স রিফাইনারির সিইও নাফিস কামাল, ওমেরা এলপিজির সিইও শামসুল হক আহমেদ, বসুন্ধরা এলপিজির হেড অব সেলস জাকারিয়া জালাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

গেল ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করে দেশে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজির) মূল্য নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। পরে প্রতি মাসেই আমদানি মূল্য বিবেচনায় নিয়ে এলপিজির দাম সমন্বয় করে আসছিলো বিইআরসি। কিন্তু এলপিজি ব্যবসায়ীরা শুরু থেকেই ঘোষিত মূল্যের বিরোধিতা করে আসছিলেন। এমনকি বিইআরসি নির্ধারিত মূল্য কার্যকর করেনি তারা। ব্যবসায়ীদের আপত্তিতে ফের শুনানির জন্য আগামী ৭ জুলাই দিন নির্ধারণ করেছে বিইআরসি।

সেবা খাত হিসেবে তাদের ব্যবসায় যেন ক্ষতি না হয় সেটি বিবেচনা করে এইখাতে সাবসিডি দিয়ে গ্রাহককে সুলভ মূল্যে এলপিজি দেওয়ার সুপারিশ করে লোয়াব। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১২ এপ্রিল বিইআরসি যে এলপিজির দাম নির্ধারণ করেছে তা সঠিকভাবে হয়নি। প্রত্যেক মাসের শুরুতে এলপি গ্যাসের আন্তর্জাতিক মূল্য (সৌদি কন্ট্রাক্ট প্রাইস বা সিপি) ঘোষণা করা হয়। তাই এলপি গ্যাসের সিপি ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মূল্যহার ঘোষণা করা প্রয়োজন। 

বিইআরসি বর্তমানে একমাস পর মূল্যহার ঘোষণা করছে। যেহেতু তাদের মূল্যহার ঘোষণার পর পরই ভিন্ন মূল্যে নতুন সিপি ঘোষিত হয় সেহেতু মূল্যহার নিয়ে বাজারে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।

তিনি আরো জানান, অটোগ্যাসের দাম প্রতিমাসে পরিবর্তন করা হলে গ্রাহক পর্যায়ে অসন্তোষ দেখা দেবে। কারণ বাজারে যানবাহনের অন্য যে সব জ্বালানি আছে যেমন, সিএনজির দাম প্রতিমাসে পরিবর্তন করা হয় না। তাই অটোগ্যাসের দাম বছরে একবার নির্ধারণ করতে বিইআরসিকে অনুরোধ করে লোয়াব।

এলপি গ্যাসকে একটি সেবামূলক ব্যবসা উল্লেখ করে লোয়াব বলছে, বেসরকারি এলপি গ্যাস অপারেটররা আশা করে ভোক্তা সাধারণের কাছে সুলভমূল্যে এলপি গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এবং এলপি গ্যাস শিল্পের সুষ্ঠু বিকাশের লক্ষ্যে সরকার প্রত্যেক অপারেটরের উপর থেকে ব্যবসায়ীর কোটি টাকার বার্ষিক ফি এবং যে সকল শুল্ক ধার্য করে আসছে তার যৌক্তিকীকরণ করবেন এবং পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সাবসিডি দিয়ে ভোক্তা সাধারণের কাছে সুলভ মূল্যে তা পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধও করেন তারা।

এক প্রশ্নের জবাবে আজম জে চৌধুরী বলেন, কমিশন এখন যে দাম নির্ধারণ করেছে, তা একেবারেই একপেশে। এমনভাবে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। দেখে মনে হয়, তারা (বিইআরসি কর্মকর্তা) এই খাতকে ধ্বংস করতে চান।

বাজারে একেক কোম্পানির এলপি গ্যাসের দাম একেক রকম কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেশে এখন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অনেক বেশি থাকায় দামের এই পার্থক্য হচ্ছে। সরকার এখন একটি নীতিমালা করছে, এর মাধ্যমে আমরা আশা করছি কোন কোম্পানি কতটুকু এলপি গ্যাস আনতে ও বিক্রি করতে পারবে তা নির্ধারণ করে দেবে। এছাড়া কোম্পানির সংখ্যাও এখন অনেক বেশি। নীতিমালায় কী পরিমাণ কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া দরকার তারও একটা নির্দেশনা থাকা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

বসুন্ধরা এলপিজির কর্মকর্তা জাকারিয়া জালাল বলেন, আমাদের এখন এই ব্যবসা করতে গিয়ে মোট প্রায় ১৩টা প্রতিষ্ঠানের যেতে হয়। খুব চাপে থাকি আমরা। এরপর আবার নতুন করে এই দাম নির্ধারণ করায় সমস্যা আরো বেড়ে গেছে।

ওমেরা এলপিজির সিইও শামসুল হক বলেন, সরকার ব্যবসায়ীদের লোকসানে না ফেলে গ্রাহকদের সুলভ মূল্যে এলপি গ্যাস দিতে পারে। এজন্য এই খাতকে সেবা খাত হিসেবে নিয়ে সাবসিডি দেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করা উচিত। 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ