শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

পঞ্চম জয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আবাহনী

স্পোর্টস রিপোর্টার : ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠেছে আবাহনী লিমিটেড। ৬ খেলায় ১০ পয়েন্ট তাদের। সমানসংখ্যক ম্যাচে ১০ পয়েন্ট প্রাইম ব্যাংকেরও। তবে রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয়স্থানে প্রাইম ব্যাংক। আবাহনীর রান রেট ০.৭৯৯। প্রাইম ব্যাংকের রান রেট ০.৬৯৩। পঞ্চম রাউন্ড শেষে ৫ খেলায় ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে ছিলো প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। গতকাল ষষ্ঠ রাউন্ডের ম্যাচে প্রাইম ব্যাংকের কাছে মাত্র ৩ রানে হেরে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান হারালো প্রাইম দোলেশ্বর। ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে প্রাইম দোলেশ্বর।  প্রাইম দোলেশ্বরের হারের দিন শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে বৃষ্টি আইনে ২৫ রানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে আবাহনী। এদিকে এক ম্যাচ হারের পর জয়ের দেখা পেল গাজী গ্রুপ। ওল্ড ডিওএইচএসকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ। ৬ খেলায় ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের সপ্তম স্থানে গাজী। সাভারের বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে আবাহনী। দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাইম ও আফিফ হোসেন। ১২ ওভারে ১১১ রান যোগ করেন তারা। এরমধ্যে ৪২ বলে ৫৪ রান করেন আফিফ। ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় নিজের  ইনিংসটি সাজান তিনি। এরপর একপ্রান্ত আকড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যান নাইম। হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন তিনিও। ১৮তম ওভারে আউট হবার আগে ৭০ রান করেন নাইম। সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় আবাহনী। শাইনপুকুরের বাঁ-হাতি স্পিনার তানভির ইসলাম ২৩ রানে ৪ উইকেট নেন। জবাবে আবাহনীর বোলারদের সামনে দ্রুত তুলতে ব্যর্থ হয় শাইনপুকুরের ব্যাটসম্যানরা। এক পর্যায়ে ১৪ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ৮১ রান তুলতে পারে তারা। আস্কিং রেট বেড়ে যাওয়ায় পরের দিকে দ্রুত রান তুলেছেন উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। ১৫তম ওভারে আবাহনীর স্পিনার আরাফাত সানিকে ৩টি ছক্কা মারেন অঙ্কন। তবে ১৭ ওভার শেষে বৃষ্টির কারনে ম্যাচটি বন্ধ হয়ে যায়। সেসময় শাইনপুকুরের রান ছিলো ৫ উইকেটে ১২৩।  কিন্তু বৃষ্টি আইনে ১৭ ওভার শেষে ১৪৯ রান করতে পারলে ম্যাচটি জিততে পারতো শাইনপুকুর। শেষ পর্যন্ত হারতে হলো তাদের। ১৫ বলে ৪টি ছক্কায় অপরাজিত ৩১ রান করেন অঙ্কন। ৩২ বলে ৩৬ রান করেন অধিনায়ক তৌহিদ হৃদয়। আবাহনীর সাইফউদ্দিন ১২ রানে ৩ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন নাইম। 

প্রাইম ব্যাংকের জয় ৩ রানে

সাভারে বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে জয় পেয়েছে প্রাইম ব্যাংক। প্রাইম ব্যাংক ৩ রানে হারায় প্রাইম দোলেশ্বরকে। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে প্রাইম ব্যাংক। শুরুটা ভালো হয়নি প্রাইম ব্যাংকের। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ৮ ও রনি তালুকদার খালি হাতে ফিরেন। ১৯ রানে দুই উইকেট পতনের পর দলের হাল ধরেন অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় ও মোহাম্মদ মিঠুন।  তৃতীয় উইকেটে মারমুখী মেজাজে ২৩ বলে ৪১ রান যোগ করেন বিজয় ও মিঠুন। বিজয় ১৮ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৯ রান করেন। তবে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে শেষ ওভারে আউট হন মিঠুন। ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫০ বলে ৫৫ রান করেন তিনি।  মিঠুনের সাথে শেষ দিকে নাহিদুল ইসলাম ১৮ বলে ২০ ও অলক কাপালি ১৪ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলেন। এতে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫১ রানের সংগ্রহ পায় প্রাইম ব্যাংক। ১৫২ রানের লক্ষ্যে ভালো শুরু হয়নি প্রাইম দোলেশ্বরেরও। ২২ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় তারা। শুরুর ধাক্কাটা পরের দিকের ব্যাটসম্যানরাও সামালে উঠতে পারেননি। বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা। ফলে ১১৮ রানেই নবম উইকেটের পতন ঘটে। তখন ম্যাচের ৯ বল বাকী ছিলো। এমন অবস্থায় প্রাইম ব্যাংকের জয় সময়ের ব্যাপার ছিলো।  কিন্তু শেষ ওভারে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন দশ নম্বরে নামা প্রাইম দোলেশ্বরের কামরুল ইসলাম। শেষ ওভারে জিততে ৩১ রান প্রয়োজন পড়ে দোলেশ্বরের। প্রাইম ব্যাংকের পেসার রুবেল হোসেনের করা শেষ ওভারে ৪টি ছক্কায় ২৭ রান তুলেন কামরুল। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৮ রান করে ৩ রানে ম্যাচ হারে প্রাইম দোলেশ্বরের। প্রাইম ব্যাংকের মুস্তাফিজুর রহমান ২৫ রানে ৩ উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন মিঠুন। 

গাজী গ্রুপের জয় ৬ উইকেটে

মিরপুর স্টেডিয়ামে জয় পেয়েছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। ওল্ড ডিওএইচএসকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে দলটি। মাহমুদুল খেলেন ৫৫ বলে অপরাজিত ৮৫ রানের ইনিংস। ৩ চার ও ৭ ছক্কার এই ইনিংসের আগে এবারের লিগের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ছিল মাহমুদুলেরই ৭৮। তার পরও ২০ ওভারে ওল্ড ডিওএইচএস করতে পারে ৭ উইকেটে ১৩৬ রান। রান তাড়ায় গাজী গ্রুপের কেউ ফিফটি করতে পারেনি। তবে কয়েকজনের কার্যকর অবদানে জিতে যায় তারা ৫ বল বাকি রেখে। মাঝারি রান তাড়ায় গাজী গ্রুপকে ঝড়ো সূচনা এনে দেন মেহেদি হাসান। তার ১০ বলে ২২ রানের ক্যামিওর পর বাকিদের কাজ ছিল স্রেফ বলপ্রতি রান করে যাওয়া। রান রেটের চাপ ছিল না, দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য সরকার ও মুমিনুল হক গড়েন ৬৩ বলে ৬৫ রানের জুটি। মুমিনুল ২৭ করতে খেলেন ৩৪ বল। টানা দুই ম্যাচে ফিফটির পর এবার সৌম্য করেন ৩৭। ইনিংসে ৪ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কার থাকলেও বল লাগে ৩৫টি। এরপর অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও শেষ করে ফিরতে পারেননি কাজ (১৮ বলে ১৯)। সেই দায়িত্ব নিতে হয় ইয়াসির আলি চৌধুরিকে (১৮ বলে ২৪*)। শেষ ওভারে তার ছক্কায় শেষ হয় ম্যাচ। ম্যাচের প্রথম ভাগ ছিল পুরো মাহমুদুলময়। উইকেটে যান তিনি ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ওল্ড ডিওএইচএস দুই ওপেনারকে হারায় দ্রুত। স্বীকৃত ক্রিকেটে প্রথম খেলতে নামা ডানহাতি পেসার মহিউদ্দিন তারেক উইকেটের দেখা পান প্রথম বলেই। তার ফুল টসে কাভারে ক্যাচ দেন আনিসুল ইসলাম ইমন। আরেক ওপেনার রাকিন আহমেদ এলবিডব্লিউ হন নাসুম আহমেদকে সুইপের চেষ্টায়। ৭ ওভার শেষে ওল্ড ডিওএইচএসের রান ছিল ২ উইকেটে মাত্র ২০। মাহমুদুলের রান তখন ১৫ বলে ৪। পরের ওভারে মেহেদি হাসানকে মাথার ওপর দিয়ে ছক্কায় উড়িয়ে প্রথম বাউন্ডারির দেখা পান তিনি। মুকিদুল হাসানের বলে ছক্কা মারেন দুর্দান্ত পুল শটে। কিন্তু আরেক প্রান্তে দল দ্রুত উইকেট হারাতে থাকলে তিনি ঢুকে যান খোলসে। আবার তিনি হাত খোলার সুযোগ পান মুমিনুল হককে সামনে পেয়ে। এবার ছক্কা মারেন টানা দুই বলে। ফিফটি স্পর্শ করেন ৪০ বলে। ১৮ ওভার শেষেও একশ হয়নি ওল্ড ডিওএইচএসের স্কোর। শেষ দুই ওভারে তা-ব চালান মাহমুদুল ও আলিস আল ইসলাম। তারেকের এক ওভারে আসে ২১ রান। তাতে মাহমুদুল মারেন এক ছক্কা এক চার, আলিসও এক ছক্কা এক চার। শেষ ওভারে মেহেদির অফ স্পিনে প্রথম তিন বলে মাহমুদুল মারেন দুই ছক্কা এক চার। এই ওভার থেকে আসে ১৯। ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের পাশাপাশি এবারের লিগের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ইনিংসে ৫টির বেশি ছক্কাও মারেন মাহমুদুল। কিন্তু সতীর্থদের ব্যর্থতায় কাজে লাগল না এমন ইনিংস। ম্যাচ সেরার পুরস্কার অবশ্য উঠল তার হাতেই। ৭ ছক্কায় ৮৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস, স্ট্রাইক রেট দেড়শর ওপরে। এক ব্যাটসম্যানের এমন ইনিংসের পরও দলের রান পৌঁছাল না দেড়শ কাছাকাছি। বাকিদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। চলতি লিগের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসে নিজেকে ছাড়িয়ে গিয়েও তাই পরাজিত দলে মাহমুদুল হাসান জয়। সেভাবে জমল না গাজী গ্রুপের সঙ্গে ওল্ড ডিওএইচএসের লড়াই।

  

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ