শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

হাইফ্লো অক্সিজেনের বিকল্প অক্সিজেট

বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে স্বল্পমূল্যে করোনা রোগীদের হাইফ্লো অক্সিজেন নিশ্চিত করতে উদ্ভাবিত হয়েছে ‘অক্সিজেট’ নামের একটি ডিভাইস। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এ ডিভাইস তৈরি করেন। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকেই বেড়েছে অক্সিজেন ও আইসিউর চাহিদা। তবে বিদ্যুতের সমস্যা ও বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অনেক সময় রোগীর জন্য হাইফ্লো অক্সিজেন দেয়া সম্ভব হয় না। তাই স্বল্পমূল্যে অক্সিজেন এবং উচ্চগতির ভেন্টিলেশন নিশ্চিত করতে দীর্ঘ ১০ মাসের গবেষণার পর ‘অক্সিজেট’ নামে একটি ডিভাইস তৈরি করেছেন বুয়েটের বায়োমেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একদল গবেষক।

ডিভাইসটি সম্পর্কে গবেষক দলের গবেষণা সহকারী মীমনুর রশিদ বলেন, একজন রোগীকে কতটুকু অক্সিজেন দিলে বা বাতাসের সঙ্গে মেশালে তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ হবে; একই সঙ্গে অক্সিজেনের মাত্রা যেন ঠিক থাকে, এসব বিষয় মাথায় রেখে টেস্টিং এবং কম্পিউটার সিমুলেনের মাধ্যমে ডিভাইসটির ডিজাইন করা হয়। পরে  ইনহাউজ থ্রিডির মাধ্যমে প্রিন্ট করা হয়। এটি তৈরিতে কারেন্ট প্রযুক্তিতে দুই হাজার টাকা লাগে মাত্র। তবে বড় পরিসরে করলে খরচ আরও কমে আসবে।

গবেষণায় অংশ নেয়া বুয়েটের বায়োমেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌসিফ হাসান বলেন, বাংলাদেশের অনেক হাসপাতালে ইলেকট্রিক পাওয়ারের সমস্যা আছে। যেমন খোদ ঢাকা মেডিকেলের সব বেডের পাশে ইলেকট্রিক আউটলেট নেই। এ জন্য চেষ্টা করা হয় কীভাবে বিদ্যুৎ ছাড়া স্বল্পমূল্যে হাইফ্লো অক্সিজেন দেয়া যেতে পারে। সেখান থেকেই ‘অক্সিজেট’ ডিভাইসের ধারণাটা আসে। এর বাইরেও আরও প্রযুক্তি আছে। কিন্তু সেগুলো ব্যয়বহুল। প্রথম থেকেই এ বিষয়ে চেষ্টা চলে এমন একটা জিনিস তৈরি করা দরকার যেটার দাম পড়বে কম কিন্তু চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হবে। পরে বিএমআরসির অনুমোদন নিয়ে ফেজ এক ও দুইয়ের পরীক্ষা করা হয় এবং আশানুরূপ ফলও মেলে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা যথেষ্ট ব্যয়বহুল। আইসিইউ, সিসিইউসহ হাইফ্লো অক্সিজেন সাপোর্ট পাওয়াও মুশকিল। এর ফলে অনেক রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। তাই যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে ডিভাইসটি প্রস্তুত করেছেন তাঁদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আশা করি, তাঁরা ভবিষ্যতেও আর্ত মানবতার কল্যাণে এমনই অবদান রেখে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হবেন। আমরা সংশ্লিষ্টদের সাধুবাদ জানাই। 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ