বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪
Online Edition

বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী আজ

ইবরাহীম খলিল : আজ ২৫ বৈশাখ, শনিবার। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী। ডিজিটাল পদ্ধতিতে নানা আয়োজনে পালিত হবে দিনটি। বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকীতে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যরা।
১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘর আলো করে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের জন্ম ভারতে হলেও পূর্বপুরুষের আদি নিবাস খুলনার রূপসা উপজেলার পিঠাভোগ গ্রামে। নানাবাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি ফুলতলার দক্ষিণডিহি। এছাড়া পিতার জমিদারি দেখা ও নিমগ্ন কাব্যচর্চার জন্য কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, নওগাঁর পতিসর ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে গড়ে তুলেছিলেন দ্বিতীয় আলয়।
এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরস্কার পাওয়ার বিরল সম্মান অর্জনকারী রবীন্দ্রনাথ তার উপন্যাস, কবিতা ও গানে গভীর জীবনবোধ, প্রকৃতির সাথে সংলগ্নতা ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি গভীর আত্মনিবেদন প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে এক অনাবিল শান্তি ও স্বর্গীয় আনন্দের আবহ তৈরি করে। তার সৃষ্টির মধ্যে প্রাণ-প্রকৃতি এক অনন্যরূপ ধারণ করে।
কবি রবীন্দ্রনাথ জাতীয় জীবনের সব অচলায়তন ভেঙ্গে বিশ্বের অতি অগ্রসর জাতিসমূহের কীর্তিময় অর্জনগুলোকে গ্রহন করার আহবান জানিয়েছিলেন। আবার স্বজাতির অনিন্দ্য সুন্দর সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উপাদানসমূহ এবং মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ সূর ও বাণীর অনন্য ব্যঞ্জনায় ফুটিয়ে তুলেছেন তার প্রতিভাদীপ্ত সৃষ্টিকর্মে।
তার সাহিত্য কর্মে শান্তি, মানবতা, মহত্ত্ববোধ ও পরমত সহিঞ্চুতার বাণী মানুষকে প্রেরণা যুগায়। মানব প্রেম, প্রকৃতি প্রেম ও দেশপ্রেম তার লেখনির প্রধান অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করেছে।
কবি রবীন্দ্রনাথ শুধু কবিই ছিলেন না, ছিলেন সমাজ, রাজনীতি ও সামাজিক সম্প্রীতির অক্লান্ত ভাষ্যকার। তার অনন্য সৃষ্টিতে চিরাচরিত ধারার বাহিরে স্বাতন্ত্র্যধর্মের পরিচয় মেলে। ধর্ম-লোকাচার, রাজনীতি ও সমাজচিন্তা এবং বিশ্বভাবনায় এই স্বাতন্ত্র্যবোধ তার বিশাল সাহিত্য সংস্কৃতির পরিমন্ডলে বাংলা ভাষাভাষির মানসলোক নির্মানে নূতন মাত্রা যোগ করেছে।
সাহিত্য সমালোচকরা বলে থাকেন, বাংলাদেশে না এলে রবীন্দ্রনাথ ‘পূর্ণ স্বরূপ’ পেতেন না, থেকে যেতেন একাংশ এক কবি। তার অন্যতম অমরকীর্তি ‘সোনারতরী’ কাব্যগ্রন্থের সূচনাতে নিজেই লিখেছেন- “বাংলাদেশের নদীতে, গ্রামে গ্রামে তখন ঘুরে বেড়াচ্ছি। এর নতুনত্ব চলন্ত বৈচিত্র্যের নতুনত্ব।... ক্ষণে ক্ষণে যতটুকু গোচরে এসেছিল তার চেয়ে অনেকখানি প্রবেশ করেছিল মনের অন্দরমহলে আপন বিচিত্র রূপ নিয়ে।” রবি কবি ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের বাইশে শ্রাবণ জোড়াসাঁকোর বাড়িতে বিবর্ণ অস্তরাগ ছড়িয়ে ইহলোক ত্যাগ করেন।
রবীন্দ্রনাথ প্রথম নোবেল বিজয়ী বাঙ্গালি কবি। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী কাব্য গ্রন্থের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। তার লেখা ‘আমার সোনার বাংলা/আমি তোমায় ভালোবাসি’ বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও প্রেরণা যুগিয়েছিল তার অনেক গান।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ