শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বিশ্বে করোনায় আক্রান্তদের প্রায় অর্ধেকই ভারতে

স্টাফ রিপার্টার: করোনায় বিধ্বস্ত ভারত। মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ কিছুতেই সামাল দিতে পারছে না। গত এক সপ্তাহে সারা বিশ্বে যত মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তার প্রায় অর্ধেকই ভারতে। এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

গত বুধবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা। সেখানে বলা হচ্ছে, গত সপ্তাহে বিশ্বের মোট কোভিড আক্রান্তের ৪৬ শতাংশই ভারতে। শুধু তাই নয়, এ সময়ে মোট মৃত্যুর চার ভাগের এক ভাগও দেশটিতে হয়েছে। 

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানার পর এপ্রিলের শুরু থেকেই ভারতে বাড়তে শুরু করেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত কয়েক সপ্তাহে তা চরমে পৌঁছেছে। গত ১৪ দিন ধরে দেশটির দৈনিক সংক্রমণ রয়েছে গড়ে ৩ লাখের বেশি। গত ১০ দিন তা সাড়ে ৩ লাখের বেশি রয়েছে। শুধু তাই নয় গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ-মৃত্যুতে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েছে দেশটি। 

এদিন সেখানে নতুন করে ৪ লাখ ১২ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। মারা গেছেন প্রায় চার হাজার রোগী। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান করোনা সংক্রমণের মধ্যে এটিই দেশটিতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যুর রেকর্ড।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে  ৩ হাজার ৯৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে ২ লাখ ৩০ হাজার ১৬৮ জনের মৃত্যু হলো। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার দেশটির নির্ভরযোগ্য গণমাধ্যম এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে বিশ্বের কোনো দেশ করোনায় একদিনে এত বেশি সংখ্যক আক্রান্ত ও মৃত্যু দেখেনি।

ভারতের পেছনে থাকা যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলেও দৈনিক আক্রান্ত থাকছে ১ লাখের অনেক কম। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বে করোনার অধিকাংশই হচ্ছে ভারতে। এই সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতে স্বাস্থ্য পরিষেবার করুণ চিত্র ফুটে উঠছে সর্বত্র। অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর পাশাপাশি কোভিড রোগীদের শয্যা না পাওয়া, করোনা পরীক্ষা করতে দীর্ঘ অপেক্ষার খবর বারবার উঠে এসেছে গত কয়েক সপ্তাহে। 

কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনার অভাবের জন্য ভারত সরকারের সমালোচনা হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে কারফিউ, লকডাউন জারি করে সংক্রমণ কমানোর চেষ্টা করা হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন নাগরিকদের।

বিদেশী দূতাবাসগুলোতেও সংক্রমণ

ভারতের আপামর জনসাধারণই নয়, বরং দেশটিতে অবস্থিত অনেক দেশের দূতাবাসেও করোনা ভাইরাস হানা দিয়েছে। সেসব দূতাবাসের বহু কর্মচারী এবং কর্মকর্তারা করোনা পজিটিভ হয়েছেন। সম্প্রতি অক্সিজেনের সাহায্য চেয়ে বিতর্কে পড়ে দেশটিতে অবস্থিত নিউজিল্যান্ড দূতাবাস। কারণ সরকারের কাছে সাহায্যের আর্জি না করে নিউজিল্যান্ড অক্সিজেন চেয়ে বসেছিল বিরোধী দল কংগ্রেসের কাছে। এরপরই ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের করুণ পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে ব্যঙ্গ করতে থাকেন একের পর এক কংগ্রেস নেতা। শেষে সাহায্য চেয়ে করা টুইট মুছে ফেলে নিউজিল্যান্ড দূতাবাস।

দ্য প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে শুধু নিউজিল্যান্ড-ই নয়, অনেক দেশের দূতাবাস কর্মীরাই করোনাক্রান্ত হয়েছেন। বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইসরায়েল, আফগানিস্তান, সুইডেন, নেপালের দূতাবাস এসবের অন্তর্ভুক্ত। ২৮ এপ্রিল তানজানিয়া হাই কমিশনের সামরিক অ্যাটাশে করোনায় মারা যান। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের দুজন স্থানীয় কর্মীও গত মাসে মারা গেছেন। পরিবারের সদস্যসহ দেশটির দূতাবাসের ১০০ জনেরও বেশি করোনাক্রান্ত।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ