বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

তারিকুল ইসলাম পিকু মানুষকে তোমার পথে ডেকেছে, হে আল্লাহ তাকে বেহেস্তে স্থান দাও -অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

খুলনা অফিস : গতকাল শুক্রবার বিকেলে খুলনা মহানগরী দৌলতপুর দক্ষিণ দেয়ানা স্কুল মাঠে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগরীর সাবেক সভাপতি, ইবনে সিনা হাসপাতালের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম পিকু’র জানাযা-পূর্বে তার ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

খুলনা অফিস : গতকাল শুক্রবার বিকেলে খুলনা মহানগরীর দৌলতপুরের দক্ষিণ দেয়ানা স্কুল মাঠে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও  খুলনা মহানগরীর সাবেক সভাপতি, ইবনে সিনা হাসপাতালের কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম পিকু’র জানাযা-পূর্বে কফিন সামনে রেখে তার ছাত্রজীবন থেকে শুরু করে কর্মময় জীবনের স্মৃতিচারণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জানাযায় উপস্থিত শোকাহত সদস্যবৃন্দ এলাকার শ্রদ্ধেয় রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ আজ সবার অন্তরে একটা কষ্ট আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ স্কুল জীবন থেকে তরুন বয়সে পিকু সৎ পথে থেকে তোমার দ্বীনের জন্য তোমার পথে মানুষকে ডেকেছে। এলাকার রাস্তা-ঘাটের ধুলাবালি মেখেছে। সৎ পথে ছিলো এ এলাকার সকল দলমতের মানুষ স্বাক্ষী দিয়েছে-সে একজন ভালো মানুষ ছিল। কারো মনে কষ্ট দেয়নি, আচার-ব্যবহার খারাপ করেনি। সৎ ছিল এবং তোমার দিনের পথে ছিল।
তিনি বলেন, আমরা পিকু’র দায়িত্বশীল সঙ্গী-সাথিরা স্বাক্ষী দিচ্ছি যে, হে আল্লাহ মাহে রমযান মাসের ১৭ রমযান এই দিনেই বদরের যুদ্ধ হয়েছিল আজ পবিত্র জুম্মার দিন এতবড় বরকতময় তোমার হাবিব হাদিসে বলেন, বহু কবরবাসীকে মাফ করে দেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। বরকতের এই মাসে তুমি তোমার বান্দা তারিকুল ইসলাম পিকুকে মাফ করে দাও। তিনি বলেন, তারিকুল ইসলাম পিকু একটা ফুটন্ত গোলাপ, এই গোলাপ দিয়ে দিলাম তোমার কবরে, এই সুন্দর গোলাপটিকে তুমি বেহেস্তে স্থান দিয়ে দিও। তার সঙ্গীরা, বড় ভাইরা এবং এলাকাবাসীসহ আমরা স্বাক্ষী দিচ্ছি পিকুর উপর আমরা সবাই  সন্তুষ্টু তুমি আল্লাহ তাঁর উপর সন্ত্রষ্ট হয়ে যাও । তুমি তাকে মাফ করে দাও, জান্নাতের সাথে তাঁর কবরকে সংযুক্ত করে দাও। কবরের ফেরেস্তারা যেন ভাল ব্যবহার করে, কবরের মাটি যেন তার সাথে ভাল ব্যবহার করে। আমরা সবাই তার উপরে খুশি, তুমি তোমার গোলামের উপর খুশি হয়ে যাও। তার সারা জীবনের নেক আমল কবুল কর।
তিনি বলেন, কত তরুনকে তোমার পথে এনেছে, অসৎ পথ থেকে ফিরিয়েছে। কোন নেক আমলের বদৌলতে তুমি তার গুনাহগুলিকে বদলিয়ে নেকি দ্বারা পরিণত করে দাও। তিনি তার তিনটি সন্তান স্ত্রীসহ শোকাহত পরিবার বর্গের প্রতি গভীর সমবেদনাও জানান।
তিনি বলেন, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সাহরির পরই হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তিনি সকলকে সালাম ও তার পরিবার বর্গের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, পিকু ইবনে সিনার  একজন ভাল অফিসার ছিলেন, তিনি সুখ্যাতির সাথে দায়িত্ব পালন করত। ইবনে সিনার প্রধান নির্বাহীর সাথে কথা হয়েছিল তার যে দুরারোগ্যব্যাধি তার জন্য ভারত গিয়েছিল তারপর সে কোভিড এ আক্রান্ত হলো। অত্যন্ত ব্যয়বহুল চিকিৎসার ব্যাপারে ইবনে সিনা কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার ব্যয় বহন করেছে।
আমীরে জামায়াত পিকুর পারিবারিক অবস্থা সম্পর্কে জানাতে বলেছেন। অমি পরিবারের সহিত কথা বলেছি। তার স্ত্রীসহ পরিবার বর্গকে বলেছি পিকু না থাকার কারণে আল্লাহ  ফেলে দেবেন না। পিকুর অভাব পুরণ করতে পারবো না তার ভাই হিসেবে আমরা পাশে সবসময় থাকবো ইনশাআল্লাহ। পিকু যে সংগঠনের জন্য সারাজীবন কষ্ট করেছে, সে সংগঠন তার পরিবারের পাশে থাকবে। পিকু বেচে থাকলে যেভাবে তার পরিবার-পরিজনের খেয়াল রাখতো ইবনে সিনা কর্তৃপক্ষ এবং সংগঠন সে দায়িত্ব গ্রহণ করবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে তরিকুল ইসলাম পিকু তার দুনিয়ার সফর শেষ করেছেন। শুরু হয়েছে তার অনন্তকালের সফর। এই সফরে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা তাঁর একান্ত সাহায্যকারী হোন। কবর থেকে শুরু করে পরবর্তী প্রত্যেকটি মঞ্জিলকে তাঁর জন্য সহজ, আরামদায়ক ও কল্যাণময় করে দিন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর জীবনের সকল নেক আমল কবুল করে তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন। এর আগে তিনি মরহুমের বাসভবনে যান এবং শোকাহত পরিবারের সদস্যদের খোজ খবর নেন। এসময় তিনি তাদের এই শোকে ধৈর্য্য ধারনের জন্য আল্লাহর দরবারের তাওফিক কামনা করেন।
খুলনা মহানগরী জামায়াতের আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, তরিকুল ইসলাম পিকুকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা ক্ষমা ও রহম করুন এবং তাকে নিরাপত্তা দান করুন। তাকে সম্মানিত মেহমান হিসেবে কবুল করুন ও তার কবরকে প্রশস্ত করুন। তার গুনাহখাতাগুলোকে নেকিতে পরিণত করুন। তার জীবনের নেক আমলসমূহ কবুল করে তাকে জান্নাতুল ফিরদাউসে স্থান দান করুন। তার শোক সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’য়ালা তাদেরকে এ শোকে ধর্য্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন।
উল্লেখ্য, সাবেক ছাত্র নেতা তারিকুল ইসলাম পিকু (৪৪) বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া ১ টার দিকে ঢাকায় ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তিকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাকে নয় দিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র, এক কন্যাসন্তান, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনসহ অসংখ্য  গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমের প্রথম নামাজের জানাজা তার কর্মস্থল রাজধানীর কল্যাণপুরস্থ ইবনে সিনা হাসপাতাল প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর দেড়টায় তার কফিন খুলনায় আনা হয়। বিকেলে দৌলতপুর দক্ষিণ দেয়ানা মাঠে জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ