মিয়ানমারে লাশ নিতে সেনাবাহিনীকে দিতে হচ্ছে ৮৫ ডলার
১২ এপ্রিল, সিএনএন : মিয়ানমারের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিক্ষোভ, সংঘাতে দেশটির রাজপথ রঞ্জিত হয়ে উঠেছে। একের পর এক অভিযানে সেনাবাহিনীর হাতে শত শত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।
সম্প্রতি একটি পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, গত শনিবার মিয়ানমারের বাগো শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। অভিযানের পর নিহতদের লাশ সরিয়ে ফেলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। অভিযানে নিহত বিক্ষোভকারীদের লাশ পেতে স্বজনরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। কিন্তু সহজেই তারা স্বজনদের এক নজর দেখতে পারছেন না। সেনাবাহিনীকে টাকা দিয়ে তারপরেই মরদেহ নিতে পারবেন তারা।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিটি মরদেহ নেয়ার জন্য ৮৫ ডলার করে সেনাবাহিনীর কাছে দিতে হবে। বেশ কিছু পর্যবেক্ষণ সংস্থাও এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ইয়াঙ্গুন শহর থেকে ৯০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বাগো শহরে কমপক্ষে ৮২ জন নিহত হয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৭ শ'র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য সামরিক বাহিনী দমন-পীড়নের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির সেনাবাহিনী এক বছর ব্যাপী জরুরি অবস্থা জারি করেছে। তখন থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজপথ।
এখন পর্যন্ত বিক্ষোভে অংশ নেয়া প্রায় তিন হাজার মানুষকে আটক করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। সামরিক বাহিনীর আতঙ্কে বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, সৈন্যরা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করেছিল এবং এলোপাতাড়ি গুলী চালিয়েছে। তারা নিরস্ত্র মানুষের ওপর রাইফেল, রকেট গ্রেনেড এবং হ্যান্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, শুক্রবারের অভিযানে অনেক বাসিন্দাই পালিয়ে আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। শুক্রবার থেকেই পুরো শহরে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আশেপাশের অন্যান্য এলাকাতেও তল্লাশি চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।
বাগো ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের এক ফেসবুক পোস্ট অনুযায়ী, সেনা অভিযানে নিহতদের মরদেহ নিতে তাদের স্বজনদের ৮৫ ডলার বা মিয়ানমারের টাকায় ১ লাখ ২০ হাজার কিয়াত খরচ করতে হচ্ছে।