শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

প্রয়োজন অন্য আলোর

বিত্তবৈভবে, বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে অনেক উন্নতি করেছে মানুষ। তবে বিত্তের বিপরীতে মানুষের চিত্তের অবস্থাটা এখন কেমন? মানুষের চিত্ত কি এখন বিকশিত হচ্ছে, না সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে? বিজ্ঞানের এত আলোর পরেও বর্ণের কারণে, ধর্মের কারণে মানুষ মানুষকে মারছে, ঘৃণা করছে। বিজ্ঞানের আলো তো এসব হ্রাস করতে পারছে না, তবে কিনা কোনো আলোর প্রয়োজন? যে চিত্রটি আঁকা হলো, তা এশিয়া বা আফ্রিকার কোনো দরিদ্র রাষ্ট্রের চিত্র নয়। এ চিত্র পৃথিবীর সবচাইতে ধনী ও উন্নত রাষ্ট্র আমেরিকার।
বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিদ্বেষের উর্বর ভূমি হতে পারে না। ১৯ মার্চ ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে নিয়ে জর্জিয়া সফরে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। উল্লেখ্য যে, গত সপ্তাহে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় বন্দুক হামলায় ছয়জন এশীয়সহ আটজন নিহত হন। ওই ঘটনার পর এশিয়ান-আমেরিকান সমাজের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলতে জর্জিয়া সফর করেন বাইডেন ও কমলা। পরে তারা বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে বক্তব্য রাখেন বিখ্যাত এমরি ইউনিভার্সিটিতে। লক্ষণীয় বিষয় হলো, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবিদ্বেষী হামলার ঘটনা বেড়েছে। গত ১২ মাসে এ রকম ৩ হাজার ৮০০টি হামলার ঘটনা সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এমন হামলা উসকে দেয়ার জন্য দায়ী করা হচ্ছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য চীনকে দায়ী করে বক্তব্য দেন। তার দাবি, চীনের লোকজন যুক্তরাষ্ট্রে ভাইরাস ছড়িয়েছেন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বল্প শিক্ষিত উগ্রবাদী লোকজনের বিদ্বেষের মুখে পড়তে হচ্ছে এশীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকদের। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নগরে ‘চায়না টাউন’ নামের বাণিজ্য এলাকার অধিকাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। নিউইয়র্কে শতাধিক হামলার পর এখন এক ভীতিকর অবস্থার মধ্য দিয়ে চলতে হচ্ছে সেখানকার এশিয়ান-আমেরিকানদের।
চিন্তার বিষয় হলো, শুধু এশিয়ান-আমেরিকানই নন, প্রায় সব অভিবাসীই যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্বেষপূর্ণ হামলার শিকার হচ্ছেন। কখনো বর্ণের কারণে, কখনো ধর্মের কারণে। ট্রাম্পের চার বছরে এমন হামলার ঘটনা বেড়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন একথা বলতে বাধ্য হলেন যে, ‘যুক্তরাষ্ট্র বিদ্বেষের উর্বর ভূমি হতে পারে না। এটা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এটা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। আমরা একসঙ্গে এটা বন্ধ করবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘নীরবতাই এ অপরাধের সহযোগী হয়ে উঠেছে। বিদ্বেষের ঘটনা ঘটলে আমরা নীরব থাকতে পারি না।’ এখন দেখার বিষয় হলো, চমৎকার এই বক্তব্যের প্রতিফলন কতটা ঘটে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ