হুমায়ুন আবিদ-এর গুচ্ছছড়া
মায়ের আদেশ
পাখির ছানা উড়তে গিয়ে
গাছের নিচে পড়ে
গাছের নিচে পড়ে ছানা
ভয়ে কান্না করে।
বাসার মাঝে উঠতে ছানা
মাকে ডাকে জোরে
মা যে গেছে খাবার খোঁজে
আলো ফোটা ভোরে।
মায়ের সাড়া পায় না যখন
ছোট্ট পাখির ছানা
মনে পড়ে মায়ের আদেশ
একা উড়তে মানা।
খোকার নৌকা
ছোট্ট খোকা নৌকা বানায়
বসে না সে পাঠে
নৌকায় চড়ে যাবে নাকি
কদমতলীর হাটে।
হঠাৎ করে বৃষ্টি এসে
উঠোন জলে ভাসে
জলের উপর নৌকা রেখে
খোকা জোরে হাসে।
খোকার হাসি শুনে মায়ে
দৌড়ে আসে কাছে
কাছে এসে দেখে খোকা
বৃষ্টি জলে নাচে।
ফাগুন মেয়ে
গাছে গাছে আমের মুকুল
দুলে বাতাস পেয়ে
মেঠো পথে বাউল চলে
দেশের গানা গেয়ে।
দুষ্টুরা রয় পুকুর জলে
ডুবসাঁতারে মেতে
দাওয়ায় বসে ডাকে মায়ে
আয় না খোকা খেতে।
বাদামী পাল উড়াই মাঝি
যাচ্ছে দূরে নায়ে
এক্কাদোক্কা খেলে খুকু
নূপুর পরা পায়ে।
ফুলের বাগে ভ্রমর ঘুরে
মিষ্টি মধু পেতে
বাউরি বাতাস দুল দিয়ে যায়
ফসল ভরা ক্ষেতে।
নতুন পাতা ছড়ায় বাহার
গাছের শাখা ছেয়ে
মনের মতো সাজায় বাংলা
এসে ফাগুন মেয়ে।
তাইরে নাইরে
ডাকলো পাখি কাটলো আঁধার
সূর্য দিলো উঁকি
দুয়ার খুলে বাইরে এলো
খেলতে খোকাখুকি।
হাসলো আকাশ আঁকলো ছবি
শিশির ভেজা ঘাসে
উড়লো ফড়িং ঘুরলো তারা
খোকাখুকির পাশে।
ফুটলো আলো ছুটলো বাতাস
দোললো গাছের পাতা
খোকাখুকি উঠলো মেতে
তাইরে নাইরে তাতা।
পেটুক বাঘ
শিয়াল মামার বিয়ের দিনে
দাওয়াত পায়নি বাঘ
দাওয়াত কেনো দেয়নি তারে
তাইতো বাঘের রাগ।
বাঘটা ছিলো পেটুক বেশি
খেতো অনেক ভাত
পেট না ভরলে গর্জন করতো
বের করে তার দাঁত।
সবার খাবার একলা খেয়ে
বলতো হেসে বাহ
তাইতো তারে দাওয়াত দিতে
সবাই করলো নাহ!
* হুমায়ুন আবিদ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার অন্তর্গত তাঁতীসুতা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৮টি, সম্পাদনাঃ নির্বাহী সম্পাদক "মাসিক মোহনা" এবং বিভাগীয় সম্পাদক ‘ঘাসফুল’ দৈনিক বিরাজমান। পুরস্কার -বীর মুক্তিযোদ্ধা ছায়েদুল ইসলাম স্মৃতি পদক।