বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

জিয়ার খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত রাজনীতিক এবং মুক্তিযুদ্ধের জন্য অবমাননা

মোহাম্মদ জাফর ইকবাল: মহান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘বীরউত্তম’ খেতাব বাতিলের যে সিদ্ধান্ত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকা নিয়েছে, সেটিকে শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক নয়- মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমান ও অবমাননা বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনরা। একইসাথে জামুকার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধারা। তারা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের কোনো এখতিয়ার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত একযুগেরও বেশী সময় ধরে দেশে চলমান সীমাহীন দুর্নীতি, দুঃশাসন ও নগ্ন দলীয়করণের যে বাস্তব চিত্র দেশে বিদেশে প্রকাশিত হচ্ছে, সেটি থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই এমনটি করা হচ্ছে। একইসাথে দেশকে একটি অস্থিতিশীল পরিস্তিতির মধ্যেও ঠেলে দেয়া হচ্ছে। কারণ খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে সারাদেশে এরই মধ্যে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো কর্মসূচি পালন করছে। এটি আরও বৃহৎরূপ ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

গত ৯ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকা সভায় জিয়াউর রহমানসহ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়। এর পরপরই সারাদেশে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা। গতকালও রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে দলটি। আগামী শনি ও রোববার সারাদেশে দুই দিনের কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। 

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় পদক বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ বীর বিক্রম। তিনি বলেছেন, জ্বলন্ত আগুনে হাত দিলে হাত পুড়ে যায়। আশা করি, সরকার ভুলেও সেই কাজটি করবে না। যদি কোনো কারণে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল হয়, ভবিষ্যতে সরকার পরিবর্তনের পর অনন্য অবদানের জন্য তাকে মরণোত্তর ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হবে। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। অলি আহমদ প্রশ্ন তোলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সরকার হঠাৎ এ ধরনের দুঃস্বপ্ন কেন দেখছে? 

 মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন বীর বিক্রম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করি, জনগনকে আর হাস্যস্প্রদ করবেন না। এই উদ্যোগ যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে আপনি আপনার পিতাকে অসন্মান করছেন। ডোন্ট চিফ ফরগেট ইট এভাব। এই খেতাব নিলো কি গেলো- কিছু আসে যায় না, তিনি মৃত এখন। খেতাব নিলেও জিয়াউর রহমান জিয়্উার রহমান থাকবেন, লক্ষ-কোটি মানুষের কাছে, অনাগত ভবিষ্যতের কাছে তিনি এই দেশের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রূপেই ইতিহাসে চিহ্নিত থাকবেন এবং জনগনের হৃদয়ে শ্রদ্ধার আসন তার চির অম্লান থাকবে।

জিয়াউর রহমানের ‘বীরোত্তম’ খেতাবটি বাতিলের সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কলঙ্ক বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের কোয়ারেন্টাইনে থাকা বিএনপি মহাসচিব টেলিফোনে গণমাধ্যমের কাছে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল খেতাবটি বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটাকে আমি মনে করি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। এই সিদ্ধান্ত যারা নিয়েছে তাদেরকে আমি কখনোই মুক্তিযুদ্ধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল মনে করি না। তারা স্বাধীনতার বিপক্ষে, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং পুরোপুরিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কলংঙ্ক লেপন করা হলো। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বীর উত্তম জিয়াউর রহমান যে প্রথম সেক্টর কমান্ডার এবং প্রথম ফোর্সেস কামান্ডার ছিলেন- এটা ঐতিহাসিক সত্য। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনায় তার সক্রিয় অংশগ্রহণ, বুদ্ধিদীপ্ত পরামর্শ এবং সাহসী নেতৃত্বের গাঁথা লিপিবদ্ধ আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় নেতাদের প্রকাশিত গ্রন্থ এবং সেই সময়কার পত্রিকায় সাময়িকীতে।দেশী বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, সাংবদিকদের বক্তব্য এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বদলে দেয়ার বৃথা চেষ্টা যারা করেছেন তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। জামুকার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন তাদের এই সিদ্ধান্ত শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক নয়। মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমান ও অবমাননা। এমনকি এই সিদ্ধান্ত তাকে খেতাব প্রদানকারী ততকালীন প্রধান মন্ত্রীর বিচার-বুদ্ধির প্রতিও অশ্রদ্ধা প্রকাশ। যেসব কারনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের খেতাব কেড়ে নেয়ার কথা জামুকা বলেছে, তার কোনটাই যুক্তি কিম্বা বাস্তবসম্মত নয়। এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক।

মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব ‘বীর উত্তম’ বাতিল করার প্রতিবাদ জানিয়ে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, যারা দেশমাতৃকার জন্য মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে মুক্তিযুদ্ধে অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন এবং  স্বাধীনতা অর্জনে বীরত্বপূর্ণ কৃতিত্বের জন্য রাষ্ট্রীয় খেতাব অর্জন করেছেন তাদের খেতাব বা পদক বাতিল করা মুক্তিযুদ্ধকে গৌরবান্বিত করে না। প্রতিহিংসামূলক কোন সিদ্ধান্ত ‘ঐতিহাসিক ন্যায্যতাকে বিলুপ্ত করে দিতে পারে না। অতীতের গৌরবউজ্জ্বল কৃতিত্বকে বর্তমানের পরিপ্রেক্ষিতে বিচার করা কোনভাবেই সুবিচার নিশ্চিত করেনা এবং নৈতিকভাবেও গ্রহণযোগ্য নয়।  রব বলেন, সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য রাষ্ট্র যাকে স্বীকৃতি প্রদান করেছে, ৫০ বছর পর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দৃষ্টিতে তা পূর্ণমূল্যায়ন করা নৈতিকতার বিচারে গ্রহনযোগ্য নয়।

জিয়াউর রহামনের স্বাধীনতা পদক প্রত্যাহারের পর এবার তার ‘বীর উত্তম’ খেতাবও বাতিলের খবরে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি। দলটি মনে করে আল জাজিরার  প্রতিবেদন থেকে মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার জন্য তথা রাজনৈতিক হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য এধরনের জঘন্য সিন্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে। এ ধরনের জঘন্য সিদ্ধান্ত সার্বিক ভাবে দেশের সকল রনাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমানজনক ও অবমাননাকর।

শহীদ জিয়ার ‘বীর উত্তম’ খেতাব প্রত্যাহার হটকারী সিদ্ধান্ত  বলে মনে করে লেবার পার্টি। সংগঠনটির চেয়ারম্যান ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান ইরান ও মহাসচিব লায়ন ফারুক রহমান গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জনগনের দৃষ্টি আড়াল করতেই স্বাধীনতার মহান ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘বীরউত্তম’ খেতাব প্রত্যাহার করার হটকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বলেন, শেখ হাসিনার ১২ বছরের সীমাহীন দুর্নীতি দুঃশাসন ও নগ্ন দলীয়করনের বাস্তব চিত্র আল জাজিরার প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে। দেশে বিদেশে সরকারের অনৈতিক ও মাফিয়া কর্মকান্ডের আসল চেহারা প্রকাশ পেয়েছে। এতে সরকার দিশেহারা হয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে এবং আল জাজিরা ইস্যুকে ধামাচাপা দিতেই শহীদ জিয়ার বীর উত্তম খেতাব প্রত্যাহারের হটকারী সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে। এতে প্রমান হয় আওয়ামী লীগ মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও আসলে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না। শহীদ জিয়ার খেতাব হরণ করা অসুস্থ্য মানুষিকতা ও অপরাজনীতি বলে মন্তব্য করেন তারা।  

বাংলাদেশ মুসলিম লীগ বিএমএল নির্বাহী সভাপতি এবিএম ফাখরুজ্জামান খান এবং মহাসচিব এডভোকেট শেখ জুলফিকার বুবুল চৌধুরী এক যুক্ত বিবৃতিতে মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীরউত্তম খেতাব প্রত্যাহারের উদ্যোগের তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন। নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিজ কর্মগুণে রাষ্ট্র কর্তৃক বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে শহীদ হওয়ার বহু বছর পর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের খেতাব প্রত্যাহারের উদ্যোগ রাজনৈতিক প্রতিহিংশা পরায়নতার বহিপ্রকাশ।

জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নিকৃষ্ট উদাহরণ বলে মনে করে জাগপা। দলটির একাংশের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস. এম. শাহাদাত বলেন,  সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে দেয়া রাষ্ট্রীয় খেতাবসমূহ জামুকা কর্তৃক বাতিলের সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নিকৃষ্টতম উদাহরণ। তারা বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। আজ যারা দলীয় লেজুরবৃত্তি করতে গিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে তার খেতাব বাতিলের কথা বলছেন ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ জিয়াউর রহমানের কন্ঠস্বর শুনেই তারা মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। 

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এর সভায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম এর খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিযেছে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। সংগঠনটির সম্মানিত সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ ও সম্মানিত মহাসচিব ডাঃ মোঃ আবদুস সালাম। এক যৌথ বিবৃতিতে সরকারের এহেন ন্যাক্কারজনক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তারা বলেন, একজন রনাংঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার মহান ঘোষক সেষ্টর কমান্ডারের বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত প্রতিহিংসাপরায়নতার বহিঃপ্রকাশ মাত্র। 

৯০’র ছাত্র গণঅভ্যত্থানের সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাংবিধানিক অধিকার ফোরাম এর সভাপতি সুরঞ্জন ঘোষ বলেছেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টকর কমান্ডার  জেড ফোর্সের প্রধান এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিল করার মধ্যদিয়ে ঘৃনিত ও ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে জামুকা। জামুকার এই কাজে সরকারের মদদ রয়েছে। 

এদিকে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা। তারা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের কোনো এখতিয়ার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার নেই।  এ প্রসঙ্গে মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন বীর বিক্রম বলেন, জামুকার এগুলো কাজ না, জামুকা হলো কে ভাতা পাবে কি পাবে না, কে মুক্তিযোদ্ধা, কে মুক্তিযোদ্ধা হবে না। বীর উত্তম, স্বাধীনতার ঘোষক, জেড ফোর্সে অধিনায়ক, সেক্টার কমান্ডার, সেনাবাহিনী প্রধান, জেনারেল, প্রেসিডেন্ট ...তাদের ব্যাপারে এখতিয়ার আছে। হু ইজ জামুকা। এদের চিনে কেউ। কোথায় জিয়াউর রহমান, কোথায় এগুলো।

৯ নং সেক্টরের সাব- সেক্টার কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর শাহজাহান ওমর বীর উত্তম বলেন, কী কারণে হঠাৎ করে জামুকা একটা প্রস্তাব করলো আমার বোধগম্য নয়। জামুকা কি? মুক্তিযুদ্ধের সময় তিন ধরনের মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। একটা হচ্ছে মিলিটারি ফোর্স, আরেকটা হলো ফ্রিডম ফাইটার, তিন নাম্বার হলো যুদ্ধের শেষ দিকে বিএলএফ নামে এটা সংগঠন গঠন করা হয়েছিলো যেটার বাংলা মুজিব বাহিনী। তিনি বলেন, আমরা যারা মিলিটারি ফোর্স আমাদের কন্ট্রোাল করে কোর নামে একটা সংস্থা আছে- সেন্টার অফিসার্স রেকর্ড অফিস। আমাদের সঙ্গে জামুকার কোনো সম্পর্ক নাই। জামুকা হলো যেমন ফ্রিডম ফাইটার তৎকালীন ছাত্র-কৃষক-যুব-শ্রমিক যারা যুদ্ধে গেছেন, ট্রেনিং করেছেন, আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করে যুদ্ধ করেছেন- তাদের ভাতা, তাদের সন্মানী, তাদের সুযোগ-সুবিধা কিভাবে অধিক থেকে অধিকতর দেয়া যায় দিস ইজ দ্যা জব অব জামুকা। জামুকার কোনো এখতিয়ার নেই্ আমাদের মিলিটারি অফিসার যারা মুক্তিযোদ্ধা তাদের বিষয় কিছু বলা, সিদ্ধান্ত নেয়ার। তিনি বলেন, জামুকা তাদের নিজস্ব বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটা তাদের এখতিয়ার বর্হিভুত এবং আমাদের মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী যে কথা বলেছে এটাও তার এখতিয়ার বর্হিভুত। এখন প্রশ্ন দাঁড়াল- বীর উত্তম, বীর শ্রেষ্ঠ, বীর বিক্রম, বীর প্রতীক- মামা বাড়ির আবদার নাকী না ছেলের বাড়ির মোয়া। যখন চাইবেন মামার বাড়ির হারটা কেড়ে নেবেন। এটা তো আমরা যুদ্ধ করে অর্জন করেছি। জিয়াউর রহমান ঘোষণা করেছেন হি ডিকলার ওয়ার এবং নিজে যুদ্ধ করেছেন। 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ