শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

বহু কাঙ্ক্ষিত করোনার টিকা বাংলাদেশে আসছে আজ

স্টাফ রিপোর্টার : বহু কাক্সিক্ষত করোনার টিকা দেশে আসছে আজ। ভারতের উপহার হিসেবে ২০ লাখ করোনা টিকার পাশাপাশি বেসরকারিভাবে আনা আরও ১৫ লাখ টিকাও আজ দেশে আসবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। গতকাল বুধবার দুপুরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে এ কথা জানান তিনি। এ সময় প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আব্দুল মোমেন বলেন, ভারত উপহার হিসেবে করোনার ২০ লাখ ডোজ টিকা বাংলাদেশকে দেবে। এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি (বেক্সিমকো) যে চুক্তি করেছে, তার প্রথম চালান হিসেবে ১৫ লাখ ভ্যাকসিন আসবে। তিনি বলেন, আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) সব মিলিয়ে মোট ৩৫ লাখ ডোজ টিকা আসবে এবং আসার পরপরই ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু করে দেয়া হবে। টিকা কর্মসূচি ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, টিকা পাওয়ার বিষয়ে আমরা এখন যথেষ্ট নিশ্চিত।
রাশিয়া, চীনসহ আরো কয়েকটি দেশ বাংলাদেশকে টিকা দেয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানান আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া অনেক ভ্যাকসিন দিতে চায়। এই দলে চীনও আছে।’ চীন কোনো উপহার দিচ্ছে কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ৪০ লাখ প্রবাসী কর্মসংস্থান হারাতে পারে। তাদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিলে যৌথভাবে নতুন শ্রমবাজার খোঁজার কাজ চলছে। জাম্বিয়া, কেনিয়াসহ চারটি দেশে কৃষি জমিভিত্তিক কাজে শ্রমিক পাঠানোর পরিকল্পনার কথাও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিাকে বাংলাদেশে নতুন করোনা ভাইরাসের টিকা আসার পর প্রথম দিনে ২০ থেকে ২৫ জনের উপর তা প্রয়োগ করা হবে। আগামী ২৭ থেকে ২৯ জানুয়ারির মধ্যে টিকা প্রয়োগ শুরু হতে পারে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব মো. আবদুল মান্নান। ভারত থেকে উপহার হিসেবে আজ বৃহস্পতিবারই সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২০ লাখ ডোজ টিকা আসছে বাংলাদেশে।
বাংলাদেশ সরকারিভাবেও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনছে, যার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকা ২৫ জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। শুরুতে ফেব্রুয়ারির প্রথম ভাগে টিকাদান শুরুর পরিকল্পনা হলেও টিকা আগে পাওয়ায় প্রয়োগের সময়ও এগিয়ে আনা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে আবদুল মান্নান জানান, টিকা বিতরণের পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই করে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রথম দিন চিকিৎসক, নার্স, বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, পুলিশ, সেনাবাহিনী, প্রশাসন, সাংবাদিকদের একজন করে প্রতিনিধিকে টিকা দেওয়া হবে। আমরা প্রথম দিন এরকম ২০ থেকে ২৫ জনকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি। আমরা কাজ করছি এই ২০-২৫ জন কারা হবেন।
টিকা প্রয়োগ শুরুর দিনক্ষণের বিষয়ে সচিব বলেন, আমাদের একটা সম্ভাব্য দিন ঠিক করা আছে ২৭ অথবা ২৯ জানুয়ারি। তবে এটা চূড়ান্ত নয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন। ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে, এটাই প্রাথমিক পরিকল্পনা। মান্নান বলেন, টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা  জেনারেল হাসপাতাল এবং কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালকে নির্বাচন করা হয়েছে।  সেখানে ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে।
প্রথমদিন টিকা দেওয়ার পরদিন ড্রাই রান বা টেস্ট হিসেবে এই টিকা দেওয়া হবে। তারপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী, এক সপ্তাহ অপেক্ষা করব। আমরা দেখব টিকা নেওয়ার পরে তাদের মধ্যে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে কি-না।
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে সারাদেশে টিকা বিতরণ শুরু হবে জানিয়ে সচিব বলেন, সরকারের কেনা টিকা জেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেবে বেক্সিমকো। আর ভারত সরকারের উপহার হিসেবে আসা টিকা সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় জেলা পর্যায়ে পৌঁছানো হবে। তিনি জানান, আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি জেলা-উপজেলা এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে।
টিকা সংরক্ষণের বিষয়ে মান্নান বলেন, উপহার হিসেবে পাওয়া টিকা ঢাকায় কোল্ড চেইনে আমরা রাখার চেষ্টা করছি। ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জনদের কাছে পাঠানো হবে। এটা ইপিআই কর্মসূচির আওতায় যেভাবে টিকা পাঠানো হয়, সেভাবে পৌঁছে দেওয়া হবে। স্বাস্থ্যসচিব বলেন, এ পর্যায়ে দেশের বেসরকারি হাসপাতালে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হবে না।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ