শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

শেয়ার কারসাজিতে ১৬ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা সাড়ে ৪ কোটি টাকা

স্টাফ রিপোর্টার : তালিকাভুক্ত নর্দান জুট ম্যানুফ্যাক্সারিং, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক, ফাইন ফুডস এবং স্টাইলক্র্যাফটের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করার দায়ে ১৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে চার কোটি ৬৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিউটিরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এদিকে বীমা কোম্পানির শেয়ার দামে ধস নামলেও ব্যাংক কোম্পানিগুলো দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে। এতে দিনের লেনদেন শেষে পতন কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী থেকেছে সূচক।
গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির ৭৫৮তম কমিশন সভায় এ জরিমানা করা সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি জানান, ১৪ ব্যক্তিকে তিন কোটি ২৩ লাখ টাকা এবং দুই প্রতিষ্ঠানকে এক কোটি ৪৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
মোহাম্মদ রেজাউল করিম আরও জানান, ইনফমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্কের শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে জিমস মার্টিন দাস, ড. জে এম মুর্শিদ মো. নুরল ইসলাম কামরান এবং সহযোগী মনজিলা নাসরিন ইসলাম, সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স-১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(ভি) ভঙ্গ করেছে। আর নর্দান জুট ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে পরিমল চন্দ্র পাল এবং সহযোগী (রিপন শেখ, মল্লিক আবু বক্কর, মো. তোফাজ্জল হোসেন, বিধান মিস্ত্রী, অমল কৃষ্ণ দাস), সালেক আহমেদ সিদ্দিকী এবং সহযোগী (মনির হোসেন), সমির রঞ্জন পাল এবং সহযোগী (শিউলি পাল, চিত্ত হারান দত্ত), মো. আমানত উল্লাহ এবং সহযোগী (সেতারা বেগম, সন্দীপ কর্পোরেশন, হাল ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রশান্ত কুমার হালদার) সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স-১৯৬৯ এর সেকশন ১৭(ই)(ভি) ভঙ্গ করেছে।
এ অপরাধের জন্য বিনিয়োগকারী জেমস মার্টিন দাসকে দুই লাখ, পরিমল চন্দ্র পালকে ২০ লাখ, রিপন শেখকে ২০ লাখ, মল্লিক আবু বক্করকে ১০ লাখ, মো. তোফাজ্জল হোসেনকে ৪০ লাখ, বিধান মিস্ত্রীকে পাঁচ লাখ, অমল কৃষ্ণ দাসকে সাত লাখ, সালেক আহমেদ সিদ্দিকীকে সাত লাখ, সমির রঞ্জন পালকে ২০ লাখ, শিউলি পালকে ৫০ লাখ, চিত্ত হারান দত্তকে ১২ লাখ, মো. আমানত উল্লাহকে এক কোটি, সেতারা বেগমকে পাঁচ লাখ, সন্দীপ কর্পোরেশনকে ৬০ লাখ, হাল ইন্ডাস্ট্রিজকে ৮৫ লাখ এবং প্রশান্ত কুমার হালদারকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এদিকে আগের দিন তালিকাভুক্ত ৪৯টি বীমা কোম্পানির মধ্যে ৪৫টির শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করলেও গতকাল বুধবার দেখা গেলে ভিন্ন চিত্র। এদিন মূলত বীমা খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দামে একপ্রকার ধস নামে। বীমা কোম্পানির শেয়ার দামে ধস নামলেও ব্যাংক কোম্পানিগুলো দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে। এতে দিনের লেনদেন শেষে পতন কাটিয়ে ঊর্ধ্বমুখী থেকেছে সূচক।
এদিন লেনদেনের শুরু থেকেই একের পর বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম কমতে থাকে। যা দিনের লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ফলে দিনের ডিএসইতে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৩১টি বীমা কোম্পানি। বিপরীতে দাম বেড়েছে ১৩টির। বীমা খাতের পতনের দিনে ২৫টি ব্যাংকের শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে মাত্র তিনটির। দাম বাড়ার ক্ষেত্রে ব্যাংক এমন দাপট দেখানোয় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৮২৭ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৯০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান মূল্য সূচকের উত্থান হলেও ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১২১টি প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৯টির। আর ৭৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অবশ্য প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪১৬ কোটি চার লাখ টাকা। যা আগের দিন ছিল এক হাজার ২৯০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১২৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১৪৩ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবির ১৩২ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৯২ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে ডিএসইতে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সামিট পাওয়ার, বেক্সিমকো ফার্মা, সিটি ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম, আইডিএলসি ও আইএফআইসি ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৭৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৭টির এবং ৬০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ