বাসচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী স্বামী-স্ত্রী নিহত
স্টাফ রিপোর্টার : মোটরসাইকেল করে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে বাসের চাপায় প্রাণ হারিয়েছেন আকাশ ইকবাল (৩৩) ও মায়া হাজারিকা মিতু (২৫) দম্পতি। গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের পদ্মা ওয়েল পাম্পের পাশে আজমেরী পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়েন এই দম্পতি। ঘটনাস্থলে থেমে যায় এই দম্পতির জীবন। সেই সঙ্গে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হয় তাদের একমাত্র সন্তান আফরান (৪)। এদিকে এ ঘটনায় ঘাতক বাসটি আটক করা হলেও এর চালক ও বাসের সহকারি পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত আকাশের ফুপাতো ভাই মো. মিজানুর রহমান মিন্টু জানান, ফরিদপুর সদর উপজেলার ধুলদি গ্রামের শেখ জাফর আকবালের ছেলে আকাশ। একই এলাকাতে বাড়ি স্ত্রী মায়ারও। একমাত্র মেয়ে আফরানকে নিয়ে বর্তমানে দক্ষিণখান মোল্লারটেক তেতুলতলা উদয়ন স্কুলের পাশে একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন তারা। উত্তরায় একটি ডেভোলপার কোম্পানীতে আকাশ, আর বিমানবন্দরে হোটেল লেক ক্যাসেল রেস্টুরেন্টে চাকরি করতেন মায়া। প্রতিদিন মোটরসাইকেলে করে একসঙ্গে বাসা থেকে বের হতেন তারা। মায়াকে অফিসে নামিয়ে দিয়ে নিজের অফিসে যেতেন আকাশ। গতকালও তারা একই সঙ্গে বের হয়েছিলেন। কিন্তু বাসের চাপায় তাদের সব স্বপ্ন নিভে গেলো। মিন্টু আরো জানান, ৬-৭ বছর আগে বিয়ে হয় তাদের। আকাশের বাবা মা গ্রামে থাকেন।
বিমানবন্দর থানার এসআই ইমরান হোসেন জানান, গতকাল সকালে স্বামী-স্ত্রী মোটরসাইকেল যোগে যাওয়ার সময় পদ্মা ওয়েল পাম্পের পাশে আজমেরী পরিবহনের একটি বাস তাদের মোটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন। ঘটনার পরপরই বাসটি জব্দ করা হয়েছে। তবে এর চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে নিহত মেয়ের বাবা মানিক মিয়া বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করেছে। চালক ও হেলপারকে ধরতে অভিযান চলছে।
নার্সের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নার্সিং হোস্টেল থেকে লাইজু আক্তার (২৭) নামে এক নার্সের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের ৬ তলায় হোস্টেলের বাথরুমে লোহার অ্যাংগেলের সঙ্গে ওড়নায় ঝুলন্ত অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত লাইজু আক্তার সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসাবে শিশু সার্জারি বিভাগের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে কাজ করতেন। তিনি টাংগাইল জেলার মধুপুর উপজেলার সিঙেরবাড়ি গ্রামের আব্দুল লতিফের মেয়ে। তার স্বামী সুজন পারভেজ রাজধানীর শ্যাওড়াপাড়া এলাকায় থাকেন।
লাইজুর ভাই জহুরুল ইসলাম জানান, গত ৫ বছর আগে একই এলাকার সুজনের সঙ্গে লাইজুর বিয়ে হয়। তাদের লাবিব নামে ২ বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে। সে টাঙ্গাইল দাদির কাছে থাকে। লাইজু হোস্টেলে থেকে কাজ করতেন। তিনি বলেন, ওই হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী তানভীরের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল লাইজুর। বিষয়টি জানাজানি হলে তানভীরকে বাসায় ডেকে এনে শাসানো হয়। এ বিষয় নিয়ে লাইজু আর তার স্বামীর মধ্যে গত ১ মাস ধরে যোগাযোগ ছিল না। রাতে সংবাদ পাই লাইজু আত্মহত্যা করেছে। শাহবাগ থানার ওসি অপারেশন মাহবুবুর রহমান বলেন, তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, লাইজুর সঙ্গে তানভীর নামে এক ব্যক্তির সম্পর্ক ছিল। এ বিষয় নিয়ে তার পরিবার ও স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো ছিল না। এমনকি গত এক মাস ধরে স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না। এ জের ধরেই সে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।