শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে দুই মামলার আর্জি ॥ আদেশ আজ

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন- ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে নিয়ে ‘মানহানিকর বক্তব্য’ দেয়ার অভিযোগে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে দুটি মামলার আবেদন হয়েছে ঢাকার আদালতে। কাজী আনিসুর রহমান এবং অ্যাডভোকেট মো. সারওয়ার আলম নামের দুই ব্যক্তি গতকাল সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন দুটি করেন। মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী দুই আবেদনকারীর আর্জি শুনে মামলা গ্রহণের বিষয়ে আজ মঙ্গলবার আদেশ দেবেন বলে জানান আদালতের বেঞ্চ সহকারী রিপন মিয়া জানিয়েছেন। এর আগে সকালে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে তিনি মানহানির মামলা করবেন।
ফুলবাড়িয়া মার্কেটে সাম্প্রতিক উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পুনর্বাসনের দাবিতে শনিবার ঢাকায় কদম ফোয়ারার সামনে মানববন্ধন করেন। সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন ওই কর্মসূচিতে সংহতি জানাতে এসে বর্তমান মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন।
তিনি বলেন, “তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন এবং এই শত শত কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ হিসেবে গ্রহণ করছেন। অন্যদিকে অর্থের অভাবে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের গরিব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না, সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।” ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে’ তাপস সিটি করপোরেশন আইনের ৯(২)(জ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার ‘যোগ্যতা হারিয়েছেন’ বলেও মন্তব্য করেন সাঈদ খোকন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মেয়র তাপস গতকাল সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, “আমি লক্ষ্য করেছি, তিনি মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন। যেহেতু মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন, সুতরাং আইনি ব্যবস্থা নেব।"
দুর্নীতির অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই দাবি করে তাপস বলেন, গত ১৭ মে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছেন। সেই অভিযান এখনও চলছে। “সেখান গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে মার্কেট সংক্রান্ত দুর্নীতির কিছু তথ্য বের হয়ে এসেছে। সেখানে যে টাকা লেনদেন হয়েছে, তা বের হয়ে এসেছে। যাদের সঙ্গে টাকা লেনদেন হয়েছে, যারা এর সঙ্গে জড়িত তারাই এখন আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে।”
সাবেক মেয়রের দিকে ইংগিত করে বর্তমান মেয়র বলেন, “আমি কোনো অভিযোগ আনি নাই। এখানে যারা অবৈধভাবে দোকান দখল করেছে, টাকা লেনদেন করেছে...এখন তিনি পুরো দোষ আমার উপরে চাপাচ্ছেন। এটা অনভিপ্রেত এবং শুধু আক্রোশের বশবর্তী হয়ে।"
বাদী অ্যাডভোকেট মো. সারোয়ার আলম মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন, আসামী সাঈদ খোকন গত শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে জাতীয় ঈদগাহ গেটের সামনে ফুলবাড়িয়া মার্কেটের উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে তার বক্তব্যে বলেন, ‘তাপস ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করে চলেছেন, আমি তাকে বলব রাঘবোয়ালের মুখে চুনোপুঁটির গল্প মানায় না। কেননা দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে হলে সর্বপ্রথম তার নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। তারপর চুনোপুঁটিদের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। অথচ তিনি উল্টো কাজ করছেন। তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর তাপস ডিএসসিসির শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘গত রোববার আসামী সাঈদ খোকনের এই বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পত্রিকা এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে ব্যারিস্টার শেখ ফলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশ করে আসামী সাঈদ খোকন দণ্ডবিধি আইনের ৫০০ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।’
অভিযোগে বাদী আরও বলেন, ‘মামলার বাদী গত রোববার বিকেল ৫টায় শাহবাগ থানায় হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করতে চাইলে থানা কর্তৃপক্ষ এজাহার না দিয়ে আদালতে পিটিশন মামলার পরামর্শ দেন। এমতাবস্থায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৫০০ ধারায় অপরাধ আমলে গ্রহণ করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে জেলহাজতে আটক রাখার জন্য আবেদন করছি।’

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ