শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

পাঁচ মাসে বাজেট ঘাটতি ৭১ শতাংশ

এইচ এম আকতার: করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারের নেয়া উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের হার কমেছে। এজন্য গত অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে বাজেটের ঘাটতি ৭১ দশমিক ৫৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এঘাটতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের রাজস্ব খাতকে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। তা না হলে ঘাটতি আরও বাড়বে।
করোনার মধ্য দিয়েই চলতি অর্থ বছর শুরু হয়। এখনও সে করোনা রয়েছে। আর এ কারণেই বাজেট ঘাটতি পুরন করা সরকারের পক্ষে কঠিন হবে। আর করোনার কারণেই বিদেশি দান অনুদানও কম আসছে। অভ্যন্তরিণ আয়ও কমছে। যা বাজেটে প্রভাব পড়ছে।
অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে নবেম্বর পর্যন্ত সরকার এক লাখ ৬ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা ব্যয় করেছে এবং ৯৬ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা আয় করেছে, এতে ১০ হাজার ২২২ কোটি টাকা ঘাটতি দেখানো হয়েছে।  আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল ৩৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
বাজেট প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত অর্থ বিভাগের ওই কর্মকর্তা বলেন, করোনা ভাইরাসের ফলে দেশজুড়ে ৬৬ দিন লকডাউন থাকায় সব ধরনের আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধ ছিল।  এ সময় সরকার সব ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।  এর ফলে বাজেট ঘাটতি বেড়েছে।
তবে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মহামারি সংক্রান্ত ব্যয়ের কারণে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে দেশের জিডিপির ৭ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ১০ শতাংশে আর্থিক ঘাটতি বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে।
এ বিষযে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ বি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, পাঁচ মাসের বাজেটের তথ্য থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতির আসল চিত্র পাওয়া সম্ভব নয়।  আইএমএফের তথ্য অনুযায়ী বড় বাজেটের ঘাটতি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।  এখন, সরকারের একমাত্র লক্ষ্য মহামারি থেকে জীবন বাঁচানো।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  এতে আসন্ন অর্থবছরের জিডিপির ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বাজেট ঘাটতি নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরকারি নথি অনুসারে, ২০২১-২২ অর্থবছরে সামগ্রিক বাজেটের ঘাটতি হবে ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা; যা ২০২০-২০২১ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ১ লাখ  ৮৯ হাজার ২২১ কোটি টাকার চেয়ে বেড়েছে।
চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণ ও সহায়তার ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা এবং স্থানীয় সম্পদ থেকে ঋণ ১ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা।  ঘাটতি পূরণে সরকারকে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ৯৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিতে হবে।
গত পাঁচ মাসে সরকার ৫ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে এবং ৩ হাজার ২০৬ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে।  বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের তথ্য অনুসারে, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এডিপির মাত্র ১৮ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।  যা গত দশ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ