শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

জনগণের মৌলিক অধিকারগুলো ধ্বংস হতে হতে আজ নিশ্চিহ্ন প্রায় -আ স ম রব

 

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জে এস ডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেছেন, গণতন্ত্র আজ একটা কাগুজে শব্দে পরিণত হয়েছে। এর কোন বাস্তব রূপ নেই। মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো ধ্বংস হতে হতে আজ নিশ্চিহ্ন প্রায়। ফলে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তপনা জেঁকে বসেছে। দুর্নীতি ও চরম অবক্ষয় সমাজ দেহে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকে আজ পর্যন্ত এই সুদীর্ঘ প্রায় ৫০ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা  ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। গেল বছরের প্রাপ্তি ও নতুন বছরের প্রত্যাশার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন। তার এ সাক্ষৎকারটি নিয়েছেন দৈনিক সংগ্রামের স্টাফ রিপোর্টার মোহাম্মদ জাফর ইকবাল। 

আ স ম রব বলেন, নিরবচ্ছিন্ন  আন্দোলন, সংগ্রাম ও নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধ এবং অগণিত শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হয়। যে লক্ষ্য ও আর্দশ নিয়ে  স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে সে লক্ষ্য এখনো পূরণ হয়নি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে স্বাধীনতার সুফল এবং রাজনৈতিক অর্থনৈতিক মুক্তি অর্থাৎ স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। 

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর নেহাত কম নয়। আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অর্থনীতির আকারসহ সব ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্যের কথা ছিল। কিন্তু রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে উপনিবেশিক শাসন কাঠামো অব্যাহত থাকায় সর্বক্ষেত্রে কাঙ্খিত উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। পৃথিবীর অনেক দেশ এর চেয়ে কম সময়ের মধ্যেই উন্নয়ন এবং নৈতিকতায় অনেক উচ্চ মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে। গুম খুন আজ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। ধর্ষণের ভয়াবহতা  দিন দিন বাড়ছে,  ক্ষমতার আড়ালে এর বীভৎস চেহারা প্রতিনিয়ত ফুটে উঠছে। বিচারব্যবস্থার অবস্থাও তথৈবচ। রাষ্ট্রীয় যন্ত্র দ্বারা বিচার বহির্ভূত হত্যা স্বাধীনতার পর থেকে  শুরু হলেও এখন এটা মহামারির আকার ধারণ করেছে। 

 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আজ ধ্বংসের মুখে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন জনগণের ভোটাধিকার প্রশ্নে সাংবিধানিক দায়িত্ব ও নৈতিক কর্তব্য পালন না করে সংবিধান লংঘন করে চলেছে। নির্বাচন কমিশন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্নকে ‘বধ্যভূমি’তে পরিণত করেছে, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বড় ধরনের কৌতুকে রূপান্তর করেছে। গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অর্জন। এগুলোকে কোনভাবেই ধ্বংস করা যায় না। এই নির্বাচন কমিশন রক্তরঞ্জিত বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। একটি স্বাধীন দেশের নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক দায়িত্ব লংঘন করে গুরুতর অসদাচরণ, অনিয়মসহ আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়লে তদন্তের মাধমে কমিশনকে অপসারণ করা রাষ্ট্রের নৈতিক কর্তব্য হয়ে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় বিদেশে পাচার হয়ে গিয়েছে। যার দ্বারা আরো কয়েকটা পদ্মা সেতু করা সম্ভব হতো। কয়েকটি স্থাপনা দিয়ে স্বাধীনতার সুফলকে পুঁজি করা যায় না। এর পিছনের সীমাহীন দুর্নীতির চিত্র বারবার ভেসে ওঠে যা যৎসামান্য অর্জনকেও ম্লান করে দেয়। এই অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তিনি জানান, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার ছাড়া স্বাধীনতা অর্থহীন। রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছে।

 

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ