শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে কিশোরীসহ আরও চারজনকে ধর্ষণ

স্টাফ রিপোর্টার : সারাদেশে যেখানে ধর্ষণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-সমাবেশ হচ্ছে এ সময়ে খোদ রাজধানীতেই সড়কে সড়কে পোস্টার-ব্যানার হাতে সরব সাধারণ জনগণ থেকে তারকারা; সেখানে পল্লবীতে এক কিশোরী গণধর্ষণের শিকার হয়েছে। শনিবার রাতে পল্লবীর কালশীর একটি মেসে ধর্ষণের শিকার হয় ওই কিশোরী (১২)। এ ঘটনায় পুলিশ ৪ যুবককে আটক করেছে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে আরো তিনজনকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে আইনজীবীসহ কয়েকজনকে।
পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, দুদিন আগে নোয়াখালী থেকে কালশীতে বাবার কাছে বেড়াতে এসেছিল ভুক্তভোগী। বাবার সঙ্গে রাতে রাগ করে বাসা থেকে বের হয়েছিল ওই কিশোরী। কিছুদূর গিয়ে সে পথ হারিয়ে ফেলে। এ সময় চারজন কিশোরীকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে কৌশলে কালশীর একটি মেসে নিয়ে যায় গ্রেফতার চার যুবক। সেখানে তারা মেয়েটিকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে রাতভর ধর্ষণ করে। রোববার সকালে কিশোরীর চেতনা ফিরলে সে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। এ ফাঁকে ওই চারজন পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন এসে ঘটনা শুনে মেয়েটিকে থানায় নিয়ে আসে। ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, ‘মেয়েটি স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারছে না। এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় সে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তাকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েটি বাবার বাসা কোথায়, বলতে পারেনি। পুলিশ অনেক খোঁজাখুঁজি করে মেয়েটির বাবাকে খুঁজে পায় এবং মামলা নেয়।’ এরই মধ্যে পুলিশ মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আলামিন (২৩), মিন্টু (২২), জুয়েল (২৪) ও হৃদয় (২১) নামে চার যুবককে আটক করে বলে ওসি জানান। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এটা নিশ্চিত এই যুবকরাই ধর্ষণে জড়িত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তারা ‘স্থানীয় বখাটে’।
গাজীপুরে ঘরে ঢুকে পোশাক শ্রমিককে গণধর্ষণ: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের চকপাড়া এলাকায় এক পোশাক শ্রমিক (২৫) গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আশরাফুল আলমকে (২২) শ্রীপুর থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার মল্লিকবাড়ী এলাকার তকুমুদ্দিনের ছেলে। অপর অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম (৩৩) দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। অভিযুক্তরা শ্রীপুরের চকপাড়া এলাকার হাজী আব্দুস ছাত্তারের বাড়ির ভাড়াটিয়া। রোববার রাতে ভিকটিম তার বসতঘরে ধর্ষণের শিকার হন। এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার ও ভিকটিমের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভিকটিম একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। অভিযুক্তরা তাকে নানা সময় উত্যক্ত করত। অভিযুক্ত আশরাফুল আলম ভিকটিমের পার্শ্ববর্তী কক্ষের ভাড়াটিয়া। ওই রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওয়াশ রুমের ওপর দিয়ে গ্রিল টপকিয়ে অভিযুক্ত আশরাফুল আলম ভিকটিমের ঘরে ঢুকে। পরে দরজা খুলে দিলে অপর অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমও ঘরে ঢুকে। তারা ঘুমন্ত ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে খুন জখমের হুমকি দিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। পরে ঘটনা গোপন রাখার হুমকি দিয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে অভিযুক্তরা বেরিয়ে যায়। ভোরেই বাড়ির অন্যান্য ভাড়াটিয়া ও স্থানীয়দের জানানো হলে তারা প্রধান অভিযুক্ত আশরাফুল আলমকে আটক করে। অপর অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, আটক অভিযুক্ত আশরাফুল আলমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলা করে ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভিডিও প্রকাশের হুমকি দিয়ে প্রেমিকাকে ধর্ষণ: মুন্সিগঞ্জে টঙ্গীবাড়ি উপজেলার আব্দুল্লাপুর গ্রাম থেকে সোহান চোকদার (২৫) নামে এক যুবককে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে তাকে মুন্সিগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমিকাকে (১৭) একাধিকবার ধর্ষণ করেন ওই যুবক। এ সময় ভিডিও ধারণ করে রাখেন তিনি। পরবর্তীতে মেয়েটি বিয়ের কথা বললে তিনি তাকে হুমকি দেন এবং অশ্লীল ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে পরেও একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এনিয়ে এলাকায় আপোষ মিমাংসার চেষ্টা চললেও মেয়েটিকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করেন ওই যুবক। পরে গত ৮ অক্টোবর ধর্ষণের শিকার মেয়েটি বিষ পান করে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন। এই ঘটনায় টঙ্গিবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হলে প্রেমিক সোহান চোকদারকে রোববার রাতে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মো. হারুন অর রশিদ বলেন, মেয়েটিকে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। ধর্ষক সোহানকে গ্রেফতার করে মুন্সিগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুতুলের প্রলোভনে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ : কুমিল্লার লাকসামে ৬ বছর বয়সী এক শিশুকে পুতুলের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। পৌরসভার ডুরিয়া বিষ্ণুপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রোববার এ ঘটনায় ওই শিশুর মা বাদী হয়ে লাকসাম থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত কিশোরের নাম তৌহিদুর রহমান রাহিম (১২)। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ওই গ্রামের তাজু ও মফিজ মিয়ার কলোনির ভাড়াটে আনোয়ার হোসেনের ছেলে তৌহিদুর রহমান রাহিম একই বাসার অন্য ভাড়াটের ৬ বছর বয়সী শিশুকে (মাদ্রাসাছাত্রী) শনিবার বিকেলে পুতুলের প্রলোভন দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি নির্জন বাড়ির বাথরুমে নিয়ে ধর্ষণ করে। দীর্ঘ সময় ধরে শিশুকে নিজ ঘরে দেখতে না পেয়ে স্বজনরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে শিশুটির বড় বোন নির্জন বাড়িটিতে ছোট বোনকে খুঁজতে গিয়ে ধর্ষণের ঘটনা দেখামাত্রই অভিযুক্ত তৌহিদ পালিয়ে যায়। লাকসাম থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
রংপুরে শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টা: রংপুরে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সাহিদার রহমান (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা। রোববার সন্ধ্যায় নগরীর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম  নীলকন্ঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাহিদার রহমানকে  আটক করেছে। আটক সাহিদার ওই এলাকার মৃত নছর মুন্সির ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রোববার বেলা সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই এলাকার এক মাছ ব্যবসায়ীর শিশু কন্যাকে পাশের একটি ফুলের নার্সারিতে ফুসলিয়ে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন সাহিদার। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধারসহ সাহিদারকে বিবস্ত্র করে গণপিটুনি দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মজনু মিয়া জানান, সাহিদারকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ