শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

চট্টগ্রামে ৭ কোটি ৭১ ল্খ ৯০ হাজার টাকার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার ॥ ৮ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

চট্টগ্রাম ব্যুরো : গত ২ দিনে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরীতে ৪টি পৃথক অভিযান চালিয়ে ১,৫৪,৩৮০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ ৮ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার  করেছে র‌্যাব-৭। এ সময় মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত ১টি প্রাইভেট কার, ১টি ট্রাক এবং ১টি মোটর সাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
র‌্যাব-৭ সূত্রের খবর:  র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী সিএনজিযোগে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য নিয়ে কক্সবাজার হতে বাঁশখালীর দিকে আসছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে গত ১১ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টায় র‌্যাব-৭ এর একটি  দল চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী থানাধীন পুকুরিয়া তেচরীপাড়াস্থ বাঁশখালী-চট্টগ্রাম সড়কের তৈলারদ্বীপ ব্রীজের টোল ইজারাদার অফিসের সামনে পাকা রাস্তার উপর একটি বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশি শুরু করে। এ সময় র‌্যাবের চেকপোস্টের দিকে আসা একটি সিএনজির গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে র‌্যাব সদস্যরা সিএনজিকে থামানোর সংকেত দিলে সিএনজিটি র‌্যাবের চেকপোস্ট এর সামনে থামালে সিএনজির ভিতর হতে তিনজন লোক দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র‌্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে  মোঃ ইসমাঈল (৩৮), পিতা- মোঃ রফিক, সাং-দক্ষিণ পাহাড়তলী, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা- কক্সবাজার, সুমি আকতার (২৫), পিতা- তরিকুল ইসলাম, সাং-শান্তিনগর, থানা- চকরিয়া, জেলা-কক্সবাজার, বর্তমানে সাং- কাশিনগর, থানা-চৌদ্দগ্রাম, জেলা-কুমিল্লা, ও অপ্রাপ্তবয়স্ক বাস্তুচ্যুত এক মিয়ানমারের নাগরিক'কে আটক করে। পরবর্তীতে আটককৃত আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেখানো ও সনাক্ত মতে নিজ নিজ হেফাজতে থাকা জুতার ভিতর হতে কৌশলে লুকানো অবস্থায় ৮,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
 র‌্যাব ৭ সূত্রের আরও খবর, র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী একটি প্রাইভেট কার যোগে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য নিয়ে কক্সবাজার হতে চট্টগ্রামের দিকে আসছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে গত ১১ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায় র‌্যাব-৭ এর একটি দল চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানাধীন উত্তর দেয়াং ভেল্লাপাড়া ওশান স্টেট এর সামনে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর একটি বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশি শুরু করে। এ সময় র‌্যাবের চেকপোস্টের দিকে আসা একটি প্রাইভেট কার এর গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে র‌্যাব সদস্যরা প্রাইভেট কারটিকে থামানোর সংকেত দিলে প্রাইভেট কারটি র‌্যাবের চেকপোস্ট এর সামনে না থামিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র‌্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে মোঃ ইমাম হোসেন মজুমদার (২৬), পিতা- মোঃ জয়নাল আবেদীন মজুমদার, সাং- ফুলছড়ি, থানা- ফটিকছড়ি, জেলা- চট্টগ্রাম এবং   মোঃ মির হোসেন (২৯), পিতা- মোঃ আব্দুল খালেক, সাং- আজম নগর, থানা- মীরসরাই, জেলা- চট্টগ্রামদের’কে আটক করে।   উক্ত সময় ১ জন আসামী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে আটককৃত আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেখানো ও সনাক্ত মতে প্রাইভেট কারের সামনের বাম এবং ডান পাশের দরজার ভিতরে বিশেষ কৌশলে লুকানো অবস্থায় ৭৭,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ উক্ত প্রাইভেট কার (চট্র-মেট্রো-গ-১২-৯৫০৬) জব্দ করা হয়।
 এদিকে  গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭ জানতে পারে যে, কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী একটি মোটর সাইকেল যোগে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য নিয়ে কক্সবাজার হতে চট্টগ্রামের দিকে আসছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে গত ১১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় র‌্যাব-৭ এর একটি  দল চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানাধীন হাফেজ নগর শাহ আমানত সংযোগ, পূর্ব বাকলিয়ায় অবস্থিত আল মদিনা কমিনিউটি হল এর সামনে একটি বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশি শুরু করে। এ সময় র‌্যাবের চেকপোস্টের দিকে আসা একটি মোটর সাইকেল এর গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে র‌্যাব সদস্যরা মোটর সাইকেলটিকে থামানোর সংকেত দিলে মোটর সাইকেলটি র‌্যাবের চেকপোস্ট এর সামনে থামিয়ে মোটর সাইকেল চালক দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র‌্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে মোঃ আরাফাত হোসেন (২৩), পিতা- আবদুল মজিদ, সাং- মীর্জাখিল জামাদার পাড়া, থানা- সাতকানিয়া, জেলা- চট্রগ্রাম’কে আটক করে। পরবর্তীতে আটককৃত আসামীকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার দেখানো ও সনাক্ত মতে মোটর-সাইকেলের সাইড কভারের ভিতর বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় ১৯,৩৮০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ উক্ত মোটর সাইকেলটি (চট্র-মেট্রো-ল-১৫-৯৫৪৯) জব্দ করা হয়।
র‌্যাব ৭ সূএের আরও খবর, অপর একটি তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭ জানতে পারে যে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী ট্রাক যোগে বিপুল পরিমান মাদকদ্রব্য নিয়ে কক্সবাজার হতে ঢাকার উদ্দেশ্যে আসছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে ১২ সেপ্টেম্বর  ৪টায় র‌্যাব-৭ এর একটি দল চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানাধীন ২ নং জালালাবাদ ওয়ার্ডের আরেফিন নগর বাজারে কক্সবাজার হতে ঢাকাগামী মহাসড়কের উপর একটি বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন করে গাড়ি তল্লাশি শুরু করে। এ সময় র‌্যাবের চেকপোস্টের দিকে আসা একটি ট্রাক এর গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে র‌্যাব সদস্যরা ট্রাকটিকে থামানোর সংকেত দিলে ট্রাকটি র‌্যাবের চেকপোস্ট এর সামনে না থামিয়ে দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র‌্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে ইমরান (২৬), পিতা-রফিকুল ইসলাম, সাং-পারসিয়া খাল, থানা- পেকুয়া, জেলা- কক্সবাজার এবং একজন কিশোর'কে আটক করে। পরবর্তীতে আটককৃত আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের দেখানো ও সনাক্ত মতে ট্রাকের উপরে কথিত মুকুটের ভিতরে বিশেষভাবে রক্ষিত অবস্থায়  ৫০,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধারসহ উক্ত ট্রাকটি (চট্ট-মেট্টো -ট-১১-৮৩২৬) জব্দ করা হয়।গ্রেফতারকৃত আসামীদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন যাবত কক্সবাজার জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হতে মাদকদ্রব্য সংগ্রহ করে নানারকম অভিনব কৌশলে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের নিকট ক্রয়-বিক্রয় করে আসছে।
উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক মূল্য ৭ কোটি ৭১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা এবং আটককৃত প্রাইভেট কার, ট্রাক এবং মোটর সাইকেলের আনুমানিক মূল্য ৭৭ লক্ষ টাকা। গ্রেফতারকৃত আসামী এবং উদ্ধারকৃত মালামাল সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরীর সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ