বৈরুত বন্দরে যেভাবে এলো এত বিপুল পরিমাণের অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট
সংগ্রাম অনলাইন ডেস্ক: ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে বৈরুত বন্দরের পাশের গুদামে পড়েছিল আড়াই হাজার টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। এত দীর্ঘ সময় ধরে বিপুল পরিমাণের এই বিপজ্জনক বস্তু অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকার পর গত মঙ্গলবার তাতে বিস্ফোরণের প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বৈরুত শহর। স্বাভাবিকভাবেই এ ঘটনার পর এই বিপুল পরিমাণ দাহ্য পদার্থ বৈরুত বন্দরে কেন পড়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়। তবে, জানা গেছে, এগুলোর মালিক কিন্তু লেবাননের কেউ নয়। এগুলোর মালিক আসলে রাশিয়া।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ জানায়, লেবাননের কর্মকর্তারা বিস্ফোরণের জন্য যে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটকে দুষছেন, সেটি আসলে লেবাননের নয়, বরং রাশিয়ার মালিকানাধীন একটি পণ্যবাহী জাহাজে করে লেবাননে পৌঁছেছিল।
ছয় বছরেরও বেশি সময় আগের ওই ঘটনায় মোজাম্বিকে যাওয়ার পথে থাকা ওই রুশ জাহাজ ফুটো হয়ে যাওয়ায় লেবাননের রাজধানী বৈরুতের বন্দরে ভিড়ে। জাহাজটিতে বহন করা হচ্ছিল ২ হাজার টনের বেশি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। সার বানাতে কিংবা বোমা তৈরির কাজে এই রাসায়নিক ব্যবহার হয়।
জাহাজটির আর গন্তব্যে ফেরা হয়নি। অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক বিরোধের কারণে যে রুশ ব্যবসায়ী জাহাজটি লিজ নিয়েছিলেন তিনি চুক্তি বাতিল করেন। এরপরই জাহাজের অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট বৈরুতের বন্দরের কাছের একটি গুদামে নেওয়া হয়। এতবছর ধরে সেখানেই তা পড়ে ছিল।
লেবাননের এক আইনপ্রণেতা সেলিম আউন সরকারি নথির বরাত দিয়ে বলেছেন, ঝুঁকিপূর্ণ এই দাহ্য পদার্থ কীভাবে সরানো হবে সে পরামর্শ চেয়ে ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত লেবাননের কাস্টমস কর্মকর্তারা আদালতে অন্তত ছয়বার চিঠি লিখেছেন।
তারা ২,৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট রপ্তানি করা কিংবা লেবাননের সেনাবাহিনীকে তা অনুদান হিসাবে দিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও করেছিলেন। কিন্তু বিচারবিভাগ তাদের চিঠির কোনও জবাব দেয়নি।
বৈরুত বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার হাসানও বুধবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কাস্টমস এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বার বার অনুরোধের পরও ‘কিছুই হয়নি’। “আমাদেরকে বলা হয়েছিল, ওই পণ্য নিলামে বিক্রি করা হবে। কিন্তু তা আর কখনও হয়নি। বিচারবিভাগও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি,” বলেন তিনি।
সূত্র: রয়টার্স
ডিএস/এএইচ