শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

সাহেদ সাতক্ষীরার অস্ত্র মামলায় রিমান্ড শেষে কারাগারে

 

স্টাফ রিপোর্টার: রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ করিম ওরফে সাহেদকে সাতক্ষীরার দেবহাটা থানার অস্ত্র মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দেবহাটা আমলী আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রাজিব কুমার রায় শুনানি শেষে গতকাল বুধবার বেলা ১১টা ৪১ মিনিটে এই আদেশ দেন বলে আদালত পরিদর্শক অমল কুমার রায় জানিয়েছেন। এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে র‌্যাব তাকে খুলনা থেকে সাতক্ষীরায় নিয়ে আসে। 

রিমান্ডের চতুর্থ দিন গত ৩০ জুলাই সাহেদকে খুলনা র‌্যাব কার্যালয় থেকে তার গ্রেফতারের স্থান সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী শাখরা-কোমরপুর এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওইদিন বিকেলে লাবণ্যবতী নদীর ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজের ওপর মিনিট দশেক রাখা হয় সাহেদকে। পরে তাকে আবারও খুলনায় র‌্যাব-৬ সদর দফতরে নিয়ে যায় র‌্যাব। তদন্তের স্বার্থে রিমান্ডে প্রাপ্ত তথ্য না জানানো হলেও দায়িত্বশীল সূত্রে জানাগেছে, সাহেদ মাঝে মাঝে খুব ক্ষিপ্ত আচরণ করেছেন। আবার কখনো কখনো ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছেন। তবে গ্রেফতার হওয়ার আগে সাতক্ষীরায় তার অবস্থান ও অস্ত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা ক্যাম্পের এসআই রেজাউল ইসলাম জানান, রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা উচিত হবে না।

গত ১৫ জুলাই ভোরে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর সীমান্তের লাবণ্যবতী নদীর উপর নির্মিত ব্রেইলি ব্রিজের নিচ থেকে সাহেদকে বোরকা পরিহিত অবস্থায় গ্রেফতার করে র‌্যাব। তার কাছ থেকে একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলী উদ্ধার করা হয়। সকাল ৮টায় হেলিকপ্টারযোগে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকায়। ওইদিন রাতেই র‌্যাব-৬ এর সিপিসি-১ এর ডিএডি নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৯৭৮ সালের আর্মস অ্যাক্টের ১৯-এ উপধারা ও ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ এর বি/এ ধারায় দেবহাটা থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামী সাহেদ, বাচ্ছু মাঝি ও অপর একজন অজ্ঞাত। অস্ত্র ও গুলীসহ গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাবের পক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। গত ২৬ জুলাই সাতক্ষীরার আমলি আদালত-৩ এর বিচারক (ভার্চুয়াল) রাজীব রায় শুনানি শেষে সাহেদের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড কার্যকরে পরদিন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সাহেদকে খুলনা র‌্যাব কার্যালয়ে আনা হয়।

রিজেন্ট এমডি মিজানের দায় স্বীকার: মেট্রোরেল প্রকল্পে কর্মরত ৭৬ শ্রমিকের ভুয়া করোনা রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগের দায় স্বীকার করেছেন রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখার ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) মিজানুর রহমান। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লার আদালতে তিনি ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এদিন ১০ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। তিনি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ২৫ জুলাই তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক ইয়াদুর রহমান। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মইনুল ইসলাম ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

উল্লেখ্য, গত ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখায় অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে র‌্যাব প্রমাণ পায়, রিজেন্টে করোনা পরীক্ষা না করেই ভুয়া রিপোর্ট দেয়া হতো। এজন্য হাসপাতালটির মিরপুরের শাখাসহ উত্তরা শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়।  

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ