শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

ন্যায়ের কাছে হার মানতেই হয়

মানুষ সবসময় সঠিক ও সঙ্গত পথে চলে না। এটা মানুষের মর্যাদার সাথে যায় না। বর্তমান সভ্যতায় ক্ষমতাবান রাষ্ট্রপ্রধানরাও অনেক ক্ষেত্রে ভুলপথে চলার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। দাপুটে নেতারা হয়তো ভেবেছেন, তাদের শক্তি-সামর্থ ও চাতুর্যের কাছে সবাই হার মেনে যাবে। অতএব ইচ্ছামতো চলতে বাধা কোথায়? তারা হয়তো ভুলে গেছেন যে, ন্যায় ও সত্যকে হারানো যায় না। প্রকৃতির বিধান থেকেও তারা শিক্ষা নেন না। অহংকার ও দম্ভের ভুল পথে চলে তারা শান্তি ও প্রগতির পথে অন্তরায় সৃষ্টি করেন। কিন্তু তাদের এই ভুল কাজ মানুষ ও প্রকৃতির সমর্থন পায় না। ফলে এক সময় তাদের মেনে নিতে হয় হার। ১২ জুলাই এ ধরনের একটি খবর মুদ্রিত হয়েছে পত্রিকায়।
ওয়াশিংটন থেকে রয়টার্স পরিবেশিত খবরে বলা হয়, ছোটবেলা মা-বাবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া তরুণ-তরুণীদের নাগরিকত্ব দেয়ার ঘোষণা দিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এসব অধিবাসীর নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ খুলে দিতে তিনি শিগগিরই একটি নির্দেশে সই করতে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য যে, অবৈধভাবে অনেকে যুক্তরাষ্ট্রে যান। সঙ্গে থাকে তাদের শিশু সন্তানরা। ছোটবেলায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেয়া এসব অভিবাসীকে ‘ড্রিসার্স’ বলা হয়। ২০১২ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই রকম অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পরিবর্তে তাদের কাজ ও থাকার সুযোগ নিশ্চিত করতে ‘ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ড হুড অ্যারাইভালস’ (ডিএসিএ) নামের একটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। এর আওতায় প্রায় সাড়ে ছয় লাখ তরুণ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয়া হয়। আমরা জানি যে, অভিবাসী নীতিতে প্রথম থেকেই কঠোর অবস্থান নেন ওবামার উত্তরসূরি ট্রাম্প। তাই ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ডিএসিএ প্রকল্পটি বাতিলের চেষ্টা করেছেন ট্রাম্প। ২০১৭ সালে তার প্রশাসন প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। দেশটির নিম্ন আদালত ট্রাম্প প্রশাসনেরই ওই সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে রায় দেন। গত মাসে ওই রায় বহাল রাখেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারকরাও।
আসলে ‘ড্রিসার্স’ প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চিন্তাভাবনা ন্যায়সঙ্গত ছিল না। ফলে একসময় উপলব্ধি করলেন, তিনি কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। আর সামনেই তো নির্বাচন। ফলে শুক্রবার টিভি চ্যানেল টেলেমুন্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ড্রিসার্সদের নাগরিকত্ব প্রদানের প্রক্রিয়া শুরুর কথা জানান।
একটি ভুল সংশোধনের কথা তো জানালেন ট্রাম্প। কিন্তু তার ভুল তো অনেক। যুক্তরাষ্ট্রে শতভাগ অনলাইন ক্লাসে যাওয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিদেশী শিক্ষার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর নীতিমালা গ্রহণ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। এবার এর বিরোধিতা করেছেন ১২টি খ্রিস্টান সংগঠনের নেতারা। তারা বলেছেন, বিদেশী শিক্ষার্থীরা আমাদের দেশের জন্য যে অবদান রাখছেন এই নীতিমালা তার ক্ষতি করবে। উপলব্ধি করা যায়, গড়ায় নয় ভাঙ্গাতেই যেন ট্রাম্পের আনন্দ। কিন্তু মানুষ তো তা গ্রহণ করছে না। বিষয়টি একজন প্রেসিডেন্ট উপলব্ধি করলেই মঙ্গল।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ