বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪
Online Edition

তিস্তার পানি আবারও বিপদসীমার উপরে চরাঞ্চল প্লাবিত ॥ ১০ হাজার লোক পানিবন্দী

সংগ্রাম ডেস্ক : ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি আবারও বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি নীলফামারীর ডালিয়া ও লালমণিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর ফলে তিস্তা নদী সংলগ্ন চর ও নিম্ন্ঞ্চালগুলো পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে এলাকার উঠতি ফসল। লালমণিরহাট জেলার পাঁচটি উপজেলার কয়েক হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
 আমাদের নীলফামারী সংবাদদাতা কামারুজ্জামান  জানান, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে তিস্তা নদী সংলঘ্ন চরগ্রামগুলোতে পানি উঠেছে। নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পুর্বাভাস সর্তকীকরণ কেন্দ্র  জানায়, বৃহস্পতিবার রাত হতে তিস্তার পানি হুহু করে বাড়তে থাকে। রাত ২ টার পর  বিপদসীমা অতিক্রম করে। যা শুক্রবার সকাল ৬ টায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ৫২ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার)।
তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা নদী সংলগ্ন ডিমলা উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে ওইসব এলাকার উঠতি ফসল। পাশাপাশি স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত চরখড়িবাড়ী এলাকার একটি ক্রস বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানান এলাকাবাসী।
ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ জানান, তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় তার ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষজন আতংকে রয়েছে।
এদিকে পানির গতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি  সকাল ৬টা থেকে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
 এদিকে আমাদের লালমনিরহাট সংবাদদাতা লাভলু শেখ জানান,  ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার চর অঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ২০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তিস্তা ব্যারেজ দোয়ানি পয়েন্টে তিস্তা পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২দশমিক ৮০সেন্টিমিটার। ব্যারাজ রক্ষার্থে ৪৪টি জলকপাট খুলে পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
গত কয়েক দিন ধরে ভারি বর্ষণ আর উজানের থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে তিস্তা নদীর চর এলাকাগুলোতে লোকজন পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধিতে চরের লোকজন চরম বিপাকে পড়েছে। উজানের পানি ও ভারী বর্ষণের কারণে বন্যা ও জলবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। 
এ দিকে পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার নদীর চরাঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার পানি বন্দী হয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ জানিয়েছেন।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা রাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন মোফা জানান, তার ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষই পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। 
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান জানান, গড্ডিমারীর ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের পরিবারগুলো নদীর পানি বৃদ্ধিতে প্রতিনিয়তেই দুর্ভোগে পড়েন। নতুন করে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙ্গণ। তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে বলেও তিনি জানান। 
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)র দোয়ানী ডালিয়া’র নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, বৃষ্টি আর উজানের ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চর এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, শুক্রবার সকাল থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২০সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলায় প্রায় ১০হাজার চরবাসী পানিবন্দী।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ