বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪
Online Edition

রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ

এম এ খালেক : প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমণে বিশ্বব্যাপী মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। করোনা ভাইরাস মানবিক বিপর্যয়ের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মারাত্মক অনিশ্চয়তা ডেকে এনেছে। গত শতাব্দীর ৩০ এর দশকের মহামন্দার পর বিশ্ব আর কখনোই এতটা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়নি। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু হবার পর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রাক্কলন করেছিল যে, এ বছর বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২ হতে আড়াই শতাংশে নেমে আসতে পারে। কিন্তু এখন তারা বলছেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো কমে যেতে পারে। এমনকি এই প্রবৃদ্ধি যদি  নেগেটিভ পর্যায়ে চলে যায় তাহলেও অবাক হবার কিছু থাকবে না। বিশ্বের অন্যতম র্শীষ প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ চীন তাদের অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেনি। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) তাদের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণজনিত কারণে বিশ্ব অর্থনীতির সব ধরনের উৎপাদনশীল কার্যক্রম কার্যত সম্পূর্ণরূপে থমকে গেছে। করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে ক্ষতি হবে তার পরিমাণ ৮দশমিক ৮০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার (১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার- ১ লাখ কোটি মার্কিন ডলার) ছাড়িয়ে যেতে পারে। এমন কি এই অবস্থা আরো কয়েক মাস অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিশ্বকে অনেক দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশ বিশ্ব অর্থনীতিতে অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতি হিসেবে স্বীকৃত। গত অর্থ বছরে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ৯টি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম ছিল। গত অর্থ বছরে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ৮দশমিক ১৫ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল। চলতি অর্থ বছরেও বাংলাদেশ উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে এটাই ছিল প্রত্যাশিত। কিন্তু বিশ্বব্যাপী সংক্রমিত অপ্রদর্শিত করোনা ভাইরাসের বিস্তৃতি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্যও মারাত্মক ঝুঁকির সৃষ্টি করেছে। করোনা সংক্রমণ শুরু হবার আগে অর্থ বছরের প্রথম ৬মাসে অর্থনীতির অধিকাংশ সূচকই ছিল নিম্নমুখী। একমাত্র রেমিটেন্স আয় ব্যতীত অন্যসব খাতের অবস্থা ছিল বিপর্যয়কর।  বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রধান উৎস পণ্য রপ্তানি খাতের আয় সাংঘাতিকভাবে কমে যায়। ফলে অর্থনীতিবিদগণ আশঙ্কা করছিলেন, এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা হয়তো অর্জিত হবে না। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা বলেছে, চলতি অর্থ বছরে বাংলাদেশ ৩ থেকে সাড়ে তিন শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে প্রবৃদ্ধির হার আরো কমে গেলেও বিস্মিত হবার কিছু থাকবে না। প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রেরিত রেমিটেন্স প্রবাহ আগামীতে অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে। কারণ বাংলাদেশের যে জনশক্তি বিদেশে কর্মসংস্থান করছে তারা বর্তমানে অত্যন্ত শোচনীয় অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। ইতোমধ্যেই কর্মহীন হয়ে প্রায় ৩ লাখ মানুষ দেশে ফিরে এসেছে। আরো ১৫ লাখ বিদেশে কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছেন। এরাও যে কোনো সময় দেশে ফিরে আসতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্প্রতি ভিয়েতনামকে শুল্কমুক্ত জিএসপি জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স) সুবিধা প্রদান করেছে। ফলে আগামীতে ভিয়েতনামের রপ্তানিকারকগণ বিনা শুল্কে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে পণ্য রপ্তানি করতে পারবে। উল্লেখ, আন্তর্জাতিক বাজারে ভিয়েতনাম হচ্ছে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক সামগ্রির প্রধান প্রতিদ্বন্দি। এতদিন বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত ২৮টি দেশে শুল্কমুক্তভাবে পণ্য রপ্তানি সুযোগ পেলেও ভিয়েতনাম তা থেকে বঞ্চিত ছিল। ফলে আগামীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের টিকে থাকা বেশ কঠিন হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ২০২৪ সালের মধ্যে চূড়ান্তভাবে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিকট থেকে প্রাপ্ত জিএসপি সুবিধা এমনিতেই উঠে যাবে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক সামগ্রির ৬০ শতাংশই রপ্তানি হয় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে।
এমনি এক অবস্থায় বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আগামীতে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংঘাতিকভাবে কমে যেতে পারে। তবে সর্বশেষ পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের ক্ষেত্রে একটি রেকর্ড। করোনা সংক্রমণজনিত নিদান কালে রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সৃষ্টি হওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বটে। এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে এই রেকর্ড পরিমাণ রিজার্ভ সৃষ্টি হলো? এর পেছনে কি ঘটনা কাজ করেছে? উল্লেখ্য, কোনো দেশের অর্থনীতিতে রেকর্ড পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংরক্ষিত থাকা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক একটি ঘটনা। কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংরক্ষিত থাকলে সেই দেশকে বৈদেশিক মুদ্রার জন্য অন্যদের মুখাপেক্ষি হয়ে থাকতে হয় না। এটা আত্মনির্ভরতার প্রতীকও বটে। তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ থাকলে তাকে সন্তোষজনক বলে মনে করা হয়। বাংলাদেশের বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের মাধ্যমে দেশের ৮/৯ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যেতে পারে। বাংলাদেশ এখন যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংরক্ষণ করছে তা সার্ক দেশগুলোর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। একমাত্র ভারতই আমাদের চেয়ে বেশি পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ করছে। প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশের এত স্ফীত বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সৃষ্টির কারণ কি? এর প্রধান কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশ যেসব সূত্র থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে সেগুলোর উপর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও সেটা এখনো দৃশ্যমান হয় নি। আগামী ২/১ মাসের মধ্যেই বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহে নেতিবাচক প্রবণতা সৃষ্টি হতে পারে। গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ ইতিবাচক ধারায় প্রবাহমান ছিল। অর্থনীতিবিদগণের মতে, একটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ হচ্ছে মানব ধমনীতে রক্ত প্রবাহের মতো। কোনো কারণে ব্লাড প্রেসার অস্বাভাবিকভাবে কমে গেলে যেমন তা মানুষের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। এমনকি মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। আবার কোনো কারণে ব্লাড প্রেসার মাত্রাতিরিক্ত উচ্চ পর্যায়ে চলে গেলে তাও মানুষের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। যেমন বিনা কারণে একটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের পরিমাণ স্ফীত হয়ে উঠলে তা সব সময় মঙ্গলজনক নাও হতে পারে। কেনো কোনো সময় এটা অর্থনীতির এক ধরনের স্থবিরতা হিসেবেও গণ্য হতে পারে। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ কমে গেলে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ স্ফীত হবার সম্ভাবনা দেখা দেয়। অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ মনে করেন, উচ্চ মাত্রায় বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ বিনিয়োগ (প্রাইভেট সেক্টরে উৎপাদনশীল খাতে) হচ্ছে একটি দেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে কাঙ্খিত অবস্থা। কারণ প্রাইভেট সেক্টরে বর্ধিত পরিমাণ বিনিয়োগ হলে তা কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক হয়। এমন কি পর্যাপ্ত পরিমাণ বিনিয়োগ এবং তুলনামূলক স্বল্প রিজার্ভও একটি দেশের জন্য কাম্য হতে পারে। কিন্তু বিনিয়োগবিহীন স্ফীত রিজার্ভ কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বাংলাদেশে অনেক দিন ধরেই এমন একটি অবস্থা বিরাজ করছে, যেখানে ব্যক্তি খাতে কাঙ্খিত মাত্রায় বিনিয়োগ হচ্ছে না কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ক্রমশ স্ফীত হয়ে চলেছে। সরকারি খাতে যে বিনিয়োগ হয় তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দুর্নীতিকে উৎসাহিত করে। বালিশ কান্ড, মশারি কান্ড বা সিস্টেম লসের নামে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির শত শত টন কয়লা চুরি করা একমাত্র সরকারি খাতেই সম্ভব। গত কয়েক বছর ধরেই দেশে বিনিয়োগের বিনিয়োগের আনুপাতিক হার একই বৃত্তে আবর্তিত হচ্ছে। ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগের হার জিডিপি’র ২২/২৩ শতাংশে উপরে উঠানো সম্ভব হচ্ছে না। জিডিপি’র আকার প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই হিসেবে ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ছে। তবে সেই বৃদ্ধিটা জিডিপি’র আনুপাতিক হারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাকালে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপি’র ২৮ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হলেও তা অর্জিত হয় নি। প্রাইভেট সেক্টরে উৎপাদনশীল খাতে বর্ধিত হারে বিনিয়োগ না হবার কারণে দেশে প্রয়োজনীয় মাত্রায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে না। জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম এমন অনেকেই বেকার জীবন যাপন করছেন। চলতি অর্থ বছরের প্রথম থেকেই ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগে ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণ শুরু হবার পর থেকে তা আরো মন্থর হয়েছে। স্থানীয় বিনিয়োগকারিগণ নতুন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। শিল্পে ব্যবহার্য কাঁচামাল এবং ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানির পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। ফলে আহরিত বৈদেশিক মুদ্রার বেশির ভাগই ব্যয় করা সম্ভব হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ভোগ ব্যয় অনেকটাই কমে গেছে। মানুষ আর আগের স্বাভাবিক অবস্থার মতো পণ্য ও সেবা ক্রয় করতে পারছে না।
ফলে আমদানিকারকগণ পণ্য আমদানি অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছেন। এতে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা কমে গেছে। আগে বাজারে মার্কিন ডলারের সরবরাহ কমে গেলে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারে মার্কিন ডলার বিক্রি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতো। এখন সেটাই করাহচ্ছে না। আন্ডার ইনভয়েসিং এবং অভার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে যে বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসতো সেগুলোও কোনো না কোনো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে যুক্ত হচ্ছে। বর্তমানে উৎপাদন কার্যক্রমে যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে তার প্রভাব আমরা আরো কিছু দিন পর প্রত্যক্ষ করবো। পণ্য এবং জনশক্তি রপ্তানি খাতের মাধ্যমেই আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার বেশির ভাগ অর্জিত হয়। এ দু’টি খাত আগামীতে সাংঘাতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ কমে যাবে। এই অবস্থায় সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় নির্বাহের জন্য রিজার্ভের উপর হাত দিতে বাধ্য হবেন। এমন কি অভ্যন্তরীণ ব্যয় নির্বাহের জন্যও সরকারকে রিজার্ভের উপর নির্ভর করতে হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন সাবেক গভর্নর সম্প্রতি টেলিভিশন টক শো’তে আলোচনাকালে প্রসঙ্গত বলেছেন,সরকার তার ব্যয় নির্বাহের জন্য বাজারে বন্ড ছাড়তে পারেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, দেশের অর্থনীতির বিদ্যমান বাস্তবতায় বন্ড কিনতে কি কেউ আগ্রহী হবেন? সরকারের ব্যয় নির্বাহের জন্য সহজ একটি পন্থা হতে পারে বাজারে নতুন নোট ছাড়া। কিন্তু সেখানেও সমস্যা আছে। বাজারে নতুন নোট ছাড়া হলে তা মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দেবে। এ ছাড়া বাজারে নতুন নোট ছাড়লেই যে তা বাজারে সার্কুলেশনে থাকবে তা নাও হতে পারে। কারণ ইতোপূর্বে যে সংখ্যক নোট বাজারে ছাড়া হয়েছে তার মধ্যে একটি বিরাট অংশই ‘আউট অব সার্কুলেশন’ এ চলে গেছে।
সার্বিক বিচারে আগামীতে দেশের মুদ্রা বাজারে এক ধরনের অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কিভাবে পরিস্থতি সামাল দেয় সেটাই দেখার বিষয়। তবে অকারণে স্ফীত বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ সংরক্ষণ না করে রিজার্ভ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ বাজারে ছেড়ে দিয়ে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায় কিনা সেটা বিবেচনা করা যেতে পারে। প্রয়োজনে দেশের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদগণের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ