শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও স্থানীয় সরকার খাতে এডিপি বরাদ্দ বাড়ছে ৫০০ কোটি টাকা

মুহাম্মাদ আখতারুজ্জামান: স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে মাঠ পর্যায়ের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ বাড়ছে এ খাতে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও খাতটিতে প্রায় পাঁচশ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় নতুন এডিপির খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া আগামী অর্থবছরে কোন নতুন প্রকল্প অনুমোদন লাভ করলে কিংবা চলমান প্রকল্পের বিশেষ প্রয়োজনে থোক বরাদ্দও রাখা হচ্ছে।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান,পার্বত্য চট্টগ্রাম, বিশেষ এলাকার উন্নয়ন এবং বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৩ হাজার ৩৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগামী অর্থবছরের এডিপির খসড়ায় এসব খাতে রাখা হচ্ছে ৩ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। সম্প্রতি পরিকল্পনা কমিশনের বর্ধিত সভায় নতুন এডিপির খসড়া প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। আগামী ১৯ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় এটি অনুমোদনের জন্য উপস্থাপনের কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে এডিপি তৈরির দায়িত্বে নিয়োজিত পরিকল্পনা সচিব মো.নূরুল আমিন জানান, স্থানীয় সরকার খাতে প্রতিবছরই বরাদ্দ রাখা হয়। তবে আগামী অর্থবছরের জন্য বরাদ্দ কিছুটা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হচ্ছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন প্রকল্পের বিপরীতে এ অর্থ পেয়ে থাকে। এতে মাঠ পর্যায়ের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয়। এছাড়া আগামী অর্থবছরে কোন নতুন প্রকল্প অনুমোদন লাভ করলে কিংবা চলমান প্রকল্পের বিশেষ প্রয়োজনে থোক বরাদ্দও রাখা হচ্ছে।
তবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রস্তাবিত এই বরাদ্দ যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় সরকারকেই সবচেয়ে বেশি কাজে লাগানোর উচিত ছিল। কেননা তারা মানুষের দোরগোড়ায় থেকে কাজ করছে। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে পাশ কাটিয়ে সব কাজ করা হচ্ছে। শুধু করোনা নয় আগামীতে হয়তো এরকম বা এর চেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগও আসতে পারে। সেসব দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় সরকারের বিকল্প নেই। তাই এসব প্রাতষ্ঠানের অনুকূলে বরাদ্দ বাড়িয়ে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সেইসঙ্গে কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, আগামী অর্থবছরের এডিপিতে ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন সহায়তা রাখা হচ্ছে ২০ কোটি টাকা। এছাড়া উপজেলা উন্নয়ন সহায়তার জন্য ৬৫০ কোটি টাকা। জেলা পরিষদ উন্নয়ন সহায়তায় ৫০০ কোটি টাকা। পৌরসভা উন্নয়ন সহায়তায় ৪৫০ কোটি টাকা এবং সিটি করপোরেশন উন্নয়ন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ৪০০ কোটি টাকা। এই পাঁচটি উন্নয়ন সহায়তা খাতে মোট বরাদ্দ প্রস্তাব করা হচ্ছে ২ হাজার ২০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে রয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন সহায়তায় প্রস্তাব করা হচ্ছে ২৫৫ কোটি টাকা। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার উন্নয়ন সহায়তায় ৮৫ কোটি টাকা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের জন্য উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে ৯০ কোটি টাকা। আগামী এডিপিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয় মন্ত্রণালয়ের তিনটি উন্নয়ন সহায়তা খাতে মোট বরাদ্দ প্রস্তাব করা হচ্ছে ৪৩০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে রয়েছে ৪২১ কোটি টাকা।
পাবর্ত্য চট্টগ্রাম ছাড়া বিশেষ এলাকার উন্নয়ন সহায়তা বাবদ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হচ্ছে ৮০ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে রয়েছে ৫০ কোটি টাকা। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা (থোক) খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হবে ১ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি সংশোধিত এডিপিতে রয়েছে ৫৬২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ