মধু আহরণের মওসুমে নির্বিঘ্নে মধু আহরণ করতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা
খুলনা অফিস : সুন্দরবনের মধু আহরণের মওসুম ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। পয়লা এপ্রিল থেকে পারমিট নিয়ে মৌয়ালরা মধু সংগ্রহের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে বাওয়ালী। চলতি মওসুমে বাঘের আক্রমণের ঝুঁকির পাশাপাশি নানা সংশয় মাথায় নিয়ে তাদের বনে যেতে হচ্ছে। তবে মধু আহরণ মওসুমকে সামনে রেখে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা বলয়। বাওয়ালীরা বন দস্যুদের ভয় নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করলেও আইনশৃংখলা বাহিনী ও বন বিভাগের সাঁড়াশি অভিযাণে সুন্দরবন এখন বনদস্যু মুক্ত প্রায়। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সুন্দরবনের মধু সু-মিষ্টি, এ বনের মধু মহৌষধ ও প্রাকৃতিক সম্পদ। মধু দেশের চাহিদা মিটিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে গিয়ে বাঘ, সাপ, কুমিরের সাথে জীবন বাজি রেখে এবং ভয়ংকর বন দস্যুদের চাঁদা, মুক্তিপণ মাথায় নিয়ে সুন্দরবনে মধু আহরণ করতে হয়। চলতি বছর বন বিভাগের কোন হয়রানী ছাড়াই পাশ পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পেরে বেশ খুশি বাওয়ালীরা। খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. আবু সালেহ জানান, মৌয়ালরা কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হয় তার জন্য সকল স্টেশন ও টহল ফাঁড়ীর কর্মকর্তা কর্মচারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বন বিভাগের কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পয়লা এপ্রিল থেকে মধু আহোরণের মওসুম শুরু হয়েছে। ১৫ জুন পর্যন্ত মধু আহরণ চলবে। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্টেশন থেকে মৌয়ালরা পাশ পারমিট নিয়ে বনে যাচ্ছে। খুলনা রেঞ্জের রেঞ্জ সহযোগি শাহানশা নওশাদ বলেন, এ বছর বড় ধরনের কোন বিপর্যয় না হলে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি মধু আহরণের আশা করছে বন বিভাগ। কাশিয়াবাদ স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাহারাম বলেন, মধু আহরণ মওসুমে কোন বাওয়ালী কোন প্রকার হয়রানী না হয় তার জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। নির্বিঘ্নে মধু আহরণ করতে মৌয়ালদেরকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কয়রা উপজেলার ৫নং কয়রা গ্রামের মৌয়াল আছাদুল ইসলাম জানায়, তারা মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে বনে মধু আহরণের জন্য প্রবেশ করেছে। সরকারি কিংবা বে সরকারি কোন প্রতিষ্ঠান থেকে বিনা সুদে লোন দিলে তাদের পক্ষে ভাল হতো। একাধিক মধু আহরণকারী মৌয়ালদের দাবী মধু আহরণ মওসুমে স্বল্প সুদে তাদের লোন দিলে তারা মহাজনি প্রথা থেকে দূরে থাকতে পারতো। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের ডিএফও মো. বশিরুল-আল মামুন বলেন, পয়লা এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মধু আহরণ চলবে। মৌয়ালদের নিরাপত্তার জন্য বন বিভাগের টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। সুন্দরবনে বনজীবী মৌয়ালরা মধু আহরণে বনের ভিতর নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে তার জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।