শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
Online Edition

কালিহাতী-বড়চওনা সড়কে ৫টি বেইলি সেতুর ৩টিই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ

কালিহাতী (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা : উপজেলা সদরের অর্থনীতির প্রধান সঞ্চালন লাইন কালিহাতী-বড়চওনা সড়কের ৫টি বেইলি সেতুর ৩টি সেতুই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিদিনই ছোট-বড় মিলিয়ে তিন হাজার যানবাহন মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু ৩টি হলো উপজেলা সদরের দক্ষিণ বেতডোবায় ঝিনাই নদীর ওপর মেঘাখালি সেতু, একই নদীর উপর হরিপুর সেতু ও রাজাফৈর সেতু। ঝুঁকি নিয়ে সাবধানতার সাথে চলাচল করার সময় অধিকাংশ সময়ই সেতুগুলোর উভয় পাশে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়ে কর্মজীবী মানুষের কর্ম সময়ও নষ্ট হচ্ছে।
গত রোববার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায় ছোট-বড় যানবাহন মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী-মালামালসহ চলাচল করছে। কালিহাতী আর এস সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কালিহাতী শাজাহান সিরাজ কলেজ সহ আরও প্রায় ১২টি স্কুল-মাদরাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এসকল ব্রিজ দিয়ে চলাচল করছে। বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালামালও মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে। মেঘাখালি বেইলি সেতুতে ৩ টি পাটাতন মারাত্মকভাবে ভেঙ্গে গেছে, হরিপুর সেতুর মাঝখানে ঝাঁলাই খুলে সবগুলো পাটাতন প্রায় দেড় ফুট দেবে গেছে ও রাজাফৈর সেতুর অর্ধেক (পূর্ব পাশের) প্রায় সকল পাটাতনেরই ঝাঁলা খুলে গেছে যা সামান্য ভ্যান বা সিএনজি চলাচলের সময় উপরে উঠে যায়।
টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক মালিক সমিতির হামিদপুর-কালিহাতী শাখা, অটো রিক্সা, টেম্পু ও সিএনজি এবং ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের তথ্য মতে, কালিহাতী-বড়চওনা সড়কে প্রতিদিনই ছোট-বড় মিলিয়ে তিন হাজার যানবাহন চলাচল করে থাকে।
কালিহাতী আরএস সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র পাছ-জোয়াইর গ্রামের রেজওয়ান জানায়, প্রতিদিনই ভয়-ভয় মন নিয়ে চলাচল করতে হয়, মাঝে-মাঝে জ্যামে সময়ও নষ্ট হয়ে ক্লাশে দেরি হয়ে যায়।
ট্রাক চালক নজরুল বলেন, জীবন ও মালামালের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েই এসকল ব্রিজ দিয়ে চলাচল করতে হয়। আগে তো হরিপুর ব্রিজটাই খারাপ ছিলো, বেশ কিছু দিন যাবত মেঘাখালি ব্রিজের ৩টি পাটাতন ভেঙ্গে আরো খারাপ অবস্থা হয়েছে। দ্রুত মেরামত ও স্থায়ী পাকা (আরসিসি) ব্রিজ নির্মাণের দাবিও জানান এ চালক।
স্থানীয় রাইস মিল ব্যবসায়ী আব্দুল জুব্বার বলেন, ব্রিজগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মালামাল নিয়ে ট্রাক আসতে চায় না। এতে করে উৎপাদন ব্যাহত হয়ে ব্যবসার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ব্রিজগুলো যদি স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয় তাহলে ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ বিষয়ে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী জহির মেহেদী হাসান দৈনিক সংগ্রাম কে বলেন, তৎসময়ে বেইলি সেতু গুলো সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর নির্মাণ করেছিলো, বেইলি সেতুর কোন উপকরণ আমাদের কাছে না থাকায় মেরামতও করা সম্ভব হয়না। টাঙ্গাইল সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করে সেতু গুলো দ্রুত মেরামতের চেষ্টা করা হবে। ১০০ মিটারের নিচে বেইলি সেতুগুলো আর সি সি (স্থায়ী পাকা) সেতু নির্মাণের একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এতে, এ তিনটি সেতু ছাড়াও উপজেলার ১৯টি বেইলি সেতু আর সি সি (স্থায়ী পাকা) সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করা যাবে।
সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান সোহেল হাজারী দৈনিক সংগ্রামকে বলেন, কালিহাতী-বড়চওনা ও কালিহাতী-রতনগঞ্জ সড়কের ৫টি বেইলি সেতু ইতিমধ্যে ডিপিভুক্ত হয়েছে, অতিদ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে আরসিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ