রাজশাহীতে চাঁদাবাজির মামলায় দুই ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে
রাজশাহী অফিস : রাজশাহীতে কোচিং সেন্টারের পরিচালকের কাছ থেকে চাঁদা দাবি ও ভাঙচুর মামলায় রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান নাঈম ও সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আসাদকে গ্রেফতার করেছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। বুধবার পৃথক অভিযান চালিয়ে করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এদের মধ্যে নাইমুল হাসান নাঈমকে সিএন্ডবি মোড় এলাকা ও আসাদকে রাজশাহী সিটি কলেজ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে বলে বোয়ালিয়া থানার পুলিশ নিশ্চিত করে। পুলিশ জানায়, কোচিং পরিচালকের থেকে চাঁদা দাবি ও ভাংচুর ঘটনায় গত রোববার একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এর পরে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মামলা হয়। এই মামলায় রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান নাঈম, আসাদ ও মরুফ এই মামলার আসামী। এ ছাড়া অজ্ঞাত তিন আসামীও রয়েছে। এই মামলার বাদি সোনাদিঘীর মোড় এলাকার ইউনিকেয়ার কোচিংয়ের পরিচালক রায়হান হোসেন। মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামীরা কোচিং সেন্টারটির কাছ থেকে দীর্ঘদিন থেকে মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। এর আগেও তারা বিভিন্নভাবে এই কোচিংয়ের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেছেন। কিন্তু এবার চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় গত রোববার রাত ৮টায় নাইম ও তার অনুসারীরা কোচিং সেন্টারে ভাংচুর করেন। পুলিশ জানায়, কোচিং ভাংচুরের সময় তারা ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। এই ঘটনায় রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইমুল হাসান নাঈম ও ও সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আসাদকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
রাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির
অভিযোগ দায়ের
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আমিরুল মোমেনিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও মানসিকভাবে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন হয়রানি নিপীড়ন নিরোধ সেলে অনুষদের ভুক্তভোগী ছাত্রীরা এ অভিযোগ করেন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক অধ্যাপক মোমেনীন চৌধুরী বলছেন, ‘তিনি এ ধরণের অভিযোগের বিষয়ে কিছুই জানেন না।’ আর অভিযোগপত্র পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যৌন নিপীড়ন নিরোধসেলের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু। তিনি বলেন, ‘চারুকলা অনুষদের ছাত্রীদের কাছ থেকে একটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে।’ এদিকে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীরা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘আমরা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আমিরুল মোমেনীন চৌধুরী দ্বারা বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি ও মানসিকভাবে উত্ত্যক্তের শিকার হই। যার কারণে আমরা মানসিকভাবে অনেক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। পড়াশুনা এবং অন্য কোনো কাজেই মনোযোগ দিতে পারছি না।’ অভিযোগপত্রে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী ছাত্রীরা আরো উল্লেখ করেন, ‘কারণে অকারণে স্যার আমাদেরকে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ ভাষায় মন্তব্য করেন। অফিসে ডেকে বসিয়ে রাখেন। ফ্রি মাইন্ডের কথা বলে নানা রকম ইঙ্গিতপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলেন। অনেকসময় সবার সামনে গায়ে হাত দেন। অন্য নারী শিক্ষকদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন।’ এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষক অনুষদের একাধিক ছাত্রীর সামনে মেয়েদের শরীর সম্বন্ধীয় ব্যাপারে ইঙ্গিত করে নানা অশালীন কথাবার্তা বলা ও কোর্সের নম্বরের কথা বারবার উল্লেখ করে শিক্ষকের ক্ষমতা দেখাতেন বলে অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন অভিযোগকারী ছাত্রীরা। অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগী এক ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমি আর মানসিকভাবে সহ্য করতে না পেরে অভিযোগ করেছি। আমি চাই না ওই শিক্ষক আমাদের সাথে এমন আচরণ করুক। আমি নায্য বিচার চাই।’ এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শঙ্কর তালুকদার মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে বিষয়টি সম্পর্কে ডিটেইলস কিছু না জেনে কোন মন্তব্য করতে পারবো না।’