শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
Online Edition

গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই -সেলিম উদ্দিন

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর বাড্ডা পশ্চিম থানার উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর সেলিম উদ্দিন -সংগ্রাম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, ’৫২-র ভাষা আন্দোলন শুধু ভাষার জন্য ছিল না বরং এই আন্দোলন স্বাধিকার আন্দোলনের জোরালো ভিত্তি রচনা করেছিল।  সে পথ ধরেই আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলাম। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে, দীর্ঘকালের পরিক্রমায় আজও আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, বাক-স্বাধীনতার অধিকার ফিরে পাইনি। মহল বিশেষের অহমিকা ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক অপরাজনীতির কারণে ভাষা শহীদদের যথার্থভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। তিনি ভাষা আন্দোলনে শহীদদের পরম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং  তাদের পরিবারের সদস্যদের রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর বাড্ডা পশ্চিম থানা আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় ও প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। থানা আমীর আ স ফরহাদ হোসাইনের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি আ ন ম আতিকুর রহমান নুমানীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ থানা আমীর এডভোকেট ইসরাফিল ও জামায়াত নেতা লিয়াকত আলীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
 সেলিম উদ্দিন বলেন, ১৯৪৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ভাষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল। তমদ্দুন মজলিস এ আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। অধ্যাপক গোলাম আযম ছিলেন এ আন্দোলনের অগ্রসৈনিক। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কাছে মানপত্রও পাঠ করেছিলেন। অধ্যাপক গোলাম আযম ডাকসুর নির্বাচিত জিএস থাকলেও রাজনৈতিক সংকীর্ণতার কারণে ডাকসুর নামফলক থেকে তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে। সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারারুদ্ধ অবস্থায় এই কিংবদন্তী ভাষাসৈনিক মৃত্যুবরণ করেছেন। মহল বিশেষের হীন্যমনতার কারণেই ভাষা আন্দোলনের কৃতিত্ব থেকে অধ্যাপক গোলাম আযমকে বঞ্চিত করা করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু এতে তারা সফল হয়নি; হবেও না বরং ইতিহাসই প্রকৃত ভাষা সৈনিকদের মর্যাদা নিশ্চিত করবে।
তিনি বলেন, অন্যায়, অবিচার, অপরাজনীতি ও বৈষম্যের পরিবর্তে ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ছিল স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে মরণপণ মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করলেও প্রায় পাঁচ দশক পরেও স্বাধীনতার সুফলগুলো আজও আমাদের কাছে অধরায় রয়ে গেছে। গণতন্ত্র ও নির্বাচনের নামে দেশ ও জাতির সাথে চলছে নির্মম প্রহসন। নাগরিকদেরকে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই গণমানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। তিনি মহান একুশের চেতনায় শোষণ, বঞ্চনা ও দারিদ্রমুক্ত গণতান্ত্রিক সমাজ গঠনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
হাতিরঝিল থানা পশ্চিম ঃ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মুসা বলেছেন, মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম ছিলেন বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের কাছে স্মারকলিপিও পেশ করেছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিহিসার কারণে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে ভাষা সৈনিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে না। তিনি মরহুম অধ্যাপক গোলাম আযম সহ ভাষা আন্দোলনে শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের মাগফিরাত কামনায় মহান আল্লাহ তায়ালায়ার দরবারে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন।
রাজধানী একটি মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের হাতিরঝিল থানা পশ্চিম আয়োজিত ‘ভাষা আন্দোলনে অধ্যাপক গোলাম আযমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। থানা আমীর আতাউর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ইউসুফ আলী মোল্লার পরিচালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন থানা অফিস সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রনেতা রাজিফুল ইসলাম পাপ্পি ও জামায়াত নেতা ইদ্রিস আলী প্রমুখ।
আব্দুর রহমান মুসা বলেন, মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাংলার দামাল ছেলেরা বুকের তাজা রক্ষ ঢেলে দিলেও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে এখনও বাংলা ভাষার প্রচলন করা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার গ্রন্থগুলো এখনও বিদেশী ভাষায় রয়ে গেছে। দেশের উচ্চ আদালতেও বাংলা ভাষার প্রচলন করা সম্ভব হয়নি। যা ভাষা শহীদদের প্রতি সুস্পষ্ট অসম্মান। তাই বাংলা ভাষাকে সর্বজনীন করার জন্য রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রেই বাংলা ভাষার প্রচলন নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন আমাদের কাছে অধরাই থেকে যাবে। প্রেসবিজ্ঞপ্তি।

অনলাইন আপডেট

আর্কাইভ